ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

গাংনীতে গ্রাম-বাংলার হারিয়ে যেতে বসা ঐতিহাসিক ঝাপান খেলার আয়োজন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:৫৮:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ জুন ২০১৭
  • / ১৯৩০ বার পড়া হয়েছে

Meherpur pic

গাংনী অফিস: মেহেরপুরের গাংনীতে আয়োজন করা হয়েছে তিনদিন ব্যাপী গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঝাপান খেলা। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার চিতলা আ¤্রকাননে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসা ঐতিহ্যবাহী ঝাপান খেলার আয়োজন করে জেলা কৃষকলীগ। বিষধর সাপ নিয়ে খেলা দেখতে আ¤্রকাননে ভীড় করে হাজারো মানুষ। দর্শকদের হাততালি আর উল্লাসে  খেলা দেখাতে ব্যস্ত সাপুড়েরা। বাদ্যের তালে তালে ঝুড়ি থেকে বেরিয়ে আসে ভয়ংকর সব বিষধর সাপ। উপস্থিত হাজারো দর্শকের করতালি একটুও বিচলিত করতে পারে না ফণা তুলে এই নাচিয়েকে। মনিবের ইশারা ইঙ্গিত তাকে ঠিক বুঝিয়ে দিয়েছে, এটা শুধু মানুষকে আনন্দ দেওয়ার খেলা নয় বরং আজ মর্যাদার লড়াই। ঐতিহ্যবাহী এই সাপ খেলা দেখতে ভিড় করেন হাজারো দর্শক। বাদ পড়েনি নারী ও শিশুরাও। ঢাক-ঢোলের বাদন আর নাচ-গানে সাপুড়েরা দর্শকদের মন ভরিয়ে তোলেন। ৮টি সাপুড়ে দলের শতাধিক সাপের মধ্যে নিজেকে সেরা প্রমাণ করতে প্রতিটি সাপ প্রদর্শন করে নিজেদের আকর্ষণীয় করতে ব্যস্ত তারা। আর এই দুর্লভ দৃশ্য দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন দর্শনার্থীরা। কেউ জীবনে প্রথমবার আবার কেউ অনেকদিন পর দেখছেন এ খেলা। এই ‘ঝাপান খেলা’ দেখে খুবই আনন্দিত হন দর্শক।
গাংনীর চিৎলা আ¤্রকাননে সাপুড়ে লিটন বলেন, এটা আমাদের বাপ দাদার পৈত্রিক পেশা। আমরা সাপ খেলা দেখিয়ে জীবন ধারণ করি। এখন প্রতিদিনই আমি বিভিন্ন জায়গা থেকে ডাক পায়। বর্তমানে এ খেলা দেখিয়ে আমার উন্নতি হয়েছে। ফিরেছে পরিবারে সচ্ছলতা। তবে সরকারের পক্ষে থেকে আমাদের আরো সহযোগিতা করা হলে এ হারিয়ে যাওয়া খেলাটি গ্রাম-বাংলার মানুষের ধরে রাখা সম্ভব হতো।
মোজাম্মেল হক নামের এক দর্শক জানান, ১৫ বছর আগে এমন খেলা প্রায় দেখতাম।  অনেক দিন এধরনের খেলা আর দেখতে পায়নি। ঝাপান খেলার মাইকিং শুনে ছুটে এসেছি এক নজর দেখতে। আমার খুবই ভালো লাগছে। তবে এমন আয়োজন যদি মাঝে মাঝে হয় তবে ভালো হতো।
এ ব্যাপারে আয়োজক জেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম সাজ্জাদ লিখন বলেন, ‘গ্রাম বাংলার হারিয়ে যেতে বসা ঐতিহ্যকে বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এই খেলার আয়োজন। কালের বিবর্তনে গ্রাম-বাংলার হারিয়ে যেতে বসা এই ঐতিহ্যবাহী খেলাটি প্রতিবছরের এই সময় আয়োজন করা হবে। যাতে করে মানুষ তাদের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে না ভুলে যায়। মেহেরপুরসহ চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের ৮টি সাপুড়ে দল শতাধিক সাপ নিয়ে অংশ নেয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

গাংনীতে গ্রাম-বাংলার হারিয়ে যেতে বসা ঐতিহাসিক ঝাপান খেলার আয়োজন

আপলোড টাইম : ০৪:৫৮:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ জুন ২০১৭

Meherpur pic

গাংনী অফিস: মেহেরপুরের গাংনীতে আয়োজন করা হয়েছে তিনদিন ব্যাপী গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঝাপান খেলা। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার চিতলা আ¤্রকাননে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসা ঐতিহ্যবাহী ঝাপান খেলার আয়োজন করে জেলা কৃষকলীগ। বিষধর সাপ নিয়ে খেলা দেখতে আ¤্রকাননে ভীড় করে হাজারো মানুষ। দর্শকদের হাততালি আর উল্লাসে  খেলা দেখাতে ব্যস্ত সাপুড়েরা। বাদ্যের তালে তালে ঝুড়ি থেকে বেরিয়ে আসে ভয়ংকর সব বিষধর সাপ। উপস্থিত হাজারো দর্শকের করতালি একটুও বিচলিত করতে পারে না ফণা তুলে এই নাচিয়েকে। মনিবের ইশারা ইঙ্গিত তাকে ঠিক বুঝিয়ে দিয়েছে, এটা শুধু মানুষকে আনন্দ দেওয়ার খেলা নয় বরং আজ মর্যাদার লড়াই। ঐতিহ্যবাহী এই সাপ খেলা দেখতে ভিড় করেন হাজারো দর্শক। বাদ পড়েনি নারী ও শিশুরাও। ঢাক-ঢোলের বাদন আর নাচ-গানে সাপুড়েরা দর্শকদের মন ভরিয়ে তোলেন। ৮টি সাপুড়ে দলের শতাধিক সাপের মধ্যে নিজেকে সেরা প্রমাণ করতে প্রতিটি সাপ প্রদর্শন করে নিজেদের আকর্ষণীয় করতে ব্যস্ত তারা। আর এই দুর্লভ দৃশ্য দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন দর্শনার্থীরা। কেউ জীবনে প্রথমবার আবার কেউ অনেকদিন পর দেখছেন এ খেলা। এই ‘ঝাপান খেলা’ দেখে খুবই আনন্দিত হন দর্শক।
গাংনীর চিৎলা আ¤্রকাননে সাপুড়ে লিটন বলেন, এটা আমাদের বাপ দাদার পৈত্রিক পেশা। আমরা সাপ খেলা দেখিয়ে জীবন ধারণ করি। এখন প্রতিদিনই আমি বিভিন্ন জায়গা থেকে ডাক পায়। বর্তমানে এ খেলা দেখিয়ে আমার উন্নতি হয়েছে। ফিরেছে পরিবারে সচ্ছলতা। তবে সরকারের পক্ষে থেকে আমাদের আরো সহযোগিতা করা হলে এ হারিয়ে যাওয়া খেলাটি গ্রাম-বাংলার মানুষের ধরে রাখা সম্ভব হতো।
মোজাম্মেল হক নামের এক দর্শক জানান, ১৫ বছর আগে এমন খেলা প্রায় দেখতাম।  অনেক দিন এধরনের খেলা আর দেখতে পায়নি। ঝাপান খেলার মাইকিং শুনে ছুটে এসেছি এক নজর দেখতে। আমার খুবই ভালো লাগছে। তবে এমন আয়োজন যদি মাঝে মাঝে হয় তবে ভালো হতো।
এ ব্যাপারে আয়োজক জেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম সাজ্জাদ লিখন বলেন, ‘গ্রাম বাংলার হারিয়ে যেতে বসা ঐতিহ্যকে বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এই খেলার আয়োজন। কালের বিবর্তনে গ্রাম-বাংলার হারিয়ে যেতে বসা এই ঐতিহ্যবাহী খেলাটি প্রতিবছরের এই সময় আয়োজন করা হবে। যাতে করে মানুষ তাদের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে না ভুলে যায়। মেহেরপুরসহ চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের ৮টি সাপুড়ে দল শতাধিক সাপ নিয়ে অংশ নেয়।