ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৭৪ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৬ হাজার ৯৫৯

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৩৬:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অগাস্ট ২০২১
  • / ২৩ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরে করোনা ও উপসর্গে সাতজনের প্রাণহানি
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত আরও ১৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে মোট হয়েছে ২৪ হাজার ৩৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও ৬ হাজার ৯৫৯ জন। এদিকে, গতকাল সোমবার চুয়াডাঙ্গায় করোনা উপসর্গ নিয়ে এইচডিইউ ইউনিটে দুজন ও ইয়োলো জোনে একজনসহ মোট তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল চুয়াডাঙ্গায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও ১৯ জনের শরীরে। এদিকে, গতকাল মেহেরপুরে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছে আরও ৭ জন। করোনা আক্রান্ত ও উপসগে মৃত্যু হয়েছে চারজনের। ঝিনাইদহে আড়াই মাস পর করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। এদিন নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৪ জনের শরীরে।
চুয়াডাঙ্গা:
চুয়াডাঙ্গায় করোনা উপসর্গ নিয়ে নতুন করে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সদর হাসপাতালের এইচডিইউ ইউনিটে দুজন ও ইয়োলো জোনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজনসহ মোট তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল জেলায় নতুন করে ১৯ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫১৪ জনে।
জানা যায়, গতকাল জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ করোনা পরীক্ষার ১৬৪টি নমুনার ফলাফল প্রকাশ করে। এর মধ্যে ১৯টি নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। বাকী ১৪৫টি নমুনার ফলাফল নেগেটিভ আসে। নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় করোনা শনাক্তের হার ১১.৫৮ শতাংশ। গতকাল নতুন শনাক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সদর উপজেরার ৭জন, আলমডাঙ্গার ৪ জন, দামুড়হুদার ৬ জন ও জীবননগরের ২ জন রয়েছে। গতকাল জেলায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছে আরও ৫২ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট সুস্থ হয়েছে ৫ হাজার ২৫৪ জন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. এ এস এম ফাতেহ্ আকরাম জানান, গতকাল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ইয়োলো জোনে করোনা উপসর্গ নিয়ে একজন ও এইচডিইউ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় উপসর্গ নিয়ে দুজনের মৃত্য হয়। মৃত্যুর পর নিহতদের শরীরে থেকে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ শেষে করোনা প্রটোকলে লাশ পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে মৃত্যু হয়েছে মোট ১৮১ জনের ও জেলার বাইরে মৃত্যু হয়েছে আরও ২০ জনের। তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ৮৭ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৭১ জন সুস্থ হয়েছেন বাকী ১৬ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিসের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী জেলা থেকে এ পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ ২৫ হাজার ২০৩টি, প্রাপ্ত ফলাফল ২৫ হাজার ১০১টি, পজিটিভ ৬ হাজার ৫১৪ জন। জেলায় বর্তমানে ১ হাজার ৫৯ জন হোম আইসোলেশন ও হাসপাতাল আইসোলেশনে রয়েছে। এর মধ্যে হোম আইসোলেশনে আছে ১ হাজার ৩ জন ও হাসপাতাল আইসোলেশনে ৫৬ জন। জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ২০১ জনের। এর মধ্যে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে জেলার হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে মৃত্যু হয়েছে ১৮১ জনের। এছাড়া চুয়াডাঙ্গায় আক্রান্ত অন্য ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে জেলার বাইরে।
মেহেরপুর:
মেহেরপুরে নতুন করে আরও ৯ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে চারজনের। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত তিনজন ও উপসর্গ নিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে মৃত্যু হয়েছে একজনের। গতকাল জেলায় নতুন আক্রান্ত ৯ জনের মধ্যে সদর উপজেলার ২ জন ও গাংনীতে ৭ জন রয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। সূত্রে আরও জানা যায়, গতকাল মেহেরপুর স্বাস্থ্য বিভাগ ল্যাবে পরীক্ষিত আরও ১৪৩টি নমুনার ফলাফল প্রকাশ করে। এর মধ্যে ৭টি নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৬.২৯ শতাংশ। নতুন আাক্রান্ত ৭ জনসহ বর্তমানে মেহেরপুর জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৩৩১ জন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৬২ জন, গাংনী উপজেলায় ১৯৫ জন এবং মুজিবনগর উপজেলায় ৭৪ জন। এ পর্যন্ত মেহেরপুরে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৭৩ জনের। মৃতদের মধ্যে সদর উপজেলার ৮০ জন, গাংনী উপজেলার ৫৪ জন ও মুজিবনগর উপজেলার ৩৯ জন রয়েছে।
ঝিনাইদহ:
গত আড়াই মাসে প্রথম মৃত্যুহীন সময় পার করল ঝিনাইদহ জেলা। গত ৪৮ ঘণ্টায় ঝিনাইদহে করোনা আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যাননি। তবে আক্রান্ত হয়েছে ২৪ জন। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম গতকাল সোমবার বিকেলে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সবার প্রচেষ্টার কারণে হয়তো আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার কমতে শুরু করেছে। এটা তারই প্রমাণ। তিনি বলেন, দুই দিন ধরে ঝিনাইদহে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থাকলেও কোনো মৃত্যু নেই। এটা একটা ভালো লক্ষন বলে মনে হচ্ছে। তিনি বলেন, গণহারে টিকা প্রদান ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের তৎপরতার সুফল পেতে শুরু করেছে মানুষ।
সারাদেশ:
সারা দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন করে সংক্রমণ ধরা পড়েছে ৬ হাজার ৯৫৯ জনের দেহে। গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, দেশে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৪ লাখ ২৫ হাজার ৮৬১ জনের দেহে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৪ হাজার ৩৪৯ জনের। ২৪ ঘণ্টায় দেশের ৭১৭টি ল্যাবে করোনার ৩৩ হাজার ১৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ০৮ শতাংশ।
গত একদিনে করোনায় নিহতদের মধ্যে পুরুষ ৯০ জন, নারী ৮৪ জন। এর মধ্যে একজন শিশু রয়েছে। বাকিদের মধ্যে বিশোর্ধ্ব ৩, ত্রিশোর্ধ্ব ১২, চলি¬শোর্ধ্ব ২১, পঞ্চাশোর্ধ্ব ৪১ ও ষাটোর্ধ্ব ৫২, সত্তরোর্ধ্ব ৩৩, অশীতিপর ৭ ও নবতিপর ৪ জন। বিভাগ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এরপরই রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৭ জন। এ ছাড়া খুলনায় ১৯ জন, রাজশাহীতে ১৭, বরিশালে ৭, সিলেটে ৬, রংপুরে ৭ ও ময়মনসিংহে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশে করোনা প্রথম শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। উদ্বেগ থাকলেও প্রথম কয়েক মাসে ভাইরাসটি সেভাবে ছড়ায়নি। গত শীতে দ্বিতীয় ঢেউ আসার উদ্বেগ থাকলেও সংক্রমণ ও মৃত্যু-দুটোই কমে আসে। একপর্যায়ে পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৩ শতাংশের নিচে নেমে যায়, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিবেচনায় মহামারি নয়, নিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতি।
তবে গত মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে শনাক্তের হার আবার বাড়তে থাকে। দ্বিতীয় ঢেউ নিশ্চিত হওয়ার পর এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে ভারতে করোনার নতুন ধরনের কথা জানা যায়। সেই ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্তদের দ্রুত অসুস্থ করে দেয়, তাদের অক্সিজেন লাগে বেশি। ছড়ায়ও দ্রুত, তাই মৃত্যুর সংখ্যাও বেশি।
করোনার ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে দফায় দফায় কঠোর বিধিনিষেধ, লকডাউন বা শাটডাউন দেয় সরকার। চার মাসের বেশি সময়ের এই অচলাবস্থার শেষ হয় বুধবার। চালু হয়েছে বাসসহ গণপরিবহন, খুলেছে দোকানপাট। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে পর্যটনকেন্দ্রগুলোও খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৭৪ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৬ হাজার ৯৫৯

আপলোড টাইম : ০৮:৩৬:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অগাস্ট ২০২১

চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরে করোনা ও উপসর্গে সাতজনের প্রাণহানি
নিজস্ব প্রতিবেদক:
সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত আরও ১৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে মোট হয়েছে ২৪ হাজার ৩৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও ৬ হাজার ৯৫৯ জন। এদিকে, গতকাল সোমবার চুয়াডাঙ্গায় করোনা উপসর্গ নিয়ে এইচডিইউ ইউনিটে দুজন ও ইয়োলো জোনে একজনসহ মোট তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল চুয়াডাঙ্গায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও ১৯ জনের শরীরে। এদিকে, গতকাল মেহেরপুরে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছে আরও ৭ জন। করোনা আক্রান্ত ও উপসগে মৃত্যু হয়েছে চারজনের। ঝিনাইদহে আড়াই মাস পর করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। এদিন নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৪ জনের শরীরে।
চুয়াডাঙ্গা:
চুয়াডাঙ্গায় করোনা উপসর্গ নিয়ে নতুন করে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সদর হাসপাতালের এইচডিইউ ইউনিটে দুজন ও ইয়োলো জোনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজনসহ মোট তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল জেলায় নতুন করে ১৯ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫১৪ জনে।
জানা যায়, গতকাল জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ করোনা পরীক্ষার ১৬৪টি নমুনার ফলাফল প্রকাশ করে। এর মধ্যে ১৯টি নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। বাকী ১৪৫টি নমুনার ফলাফল নেগেটিভ আসে। নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় করোনা শনাক্তের হার ১১.৫৮ শতাংশ। গতকাল নতুন শনাক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সদর উপজেরার ৭জন, আলমডাঙ্গার ৪ জন, দামুড়হুদার ৬ জন ও জীবননগরের ২ জন রয়েছে। গতকাল জেলায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছে আরও ৫২ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট সুস্থ হয়েছে ৫ হাজার ২৫৪ জন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. এ এস এম ফাতেহ্ আকরাম জানান, গতকাল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ইয়োলো জোনে করোনা উপসর্গ নিয়ে একজন ও এইচডিইউ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় উপসর্গ নিয়ে দুজনের মৃত্য হয়। মৃত্যুর পর নিহতদের শরীরে থেকে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ শেষে করোনা প্রটোকলে লাশ পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে মৃত্যু হয়েছে মোট ১৮১ জনের ও জেলার বাইরে মৃত্যু হয়েছে আরও ২০ জনের। তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ৮৭ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৭১ জন সুস্থ হয়েছেন বাকী ১৬ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিসের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী জেলা থেকে এ পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ ২৫ হাজার ২০৩টি, প্রাপ্ত ফলাফল ২৫ হাজার ১০১টি, পজিটিভ ৬ হাজার ৫১৪ জন। জেলায় বর্তমানে ১ হাজার ৫৯ জন হোম আইসোলেশন ও হাসপাতাল আইসোলেশনে রয়েছে। এর মধ্যে হোম আইসোলেশনে আছে ১ হাজার ৩ জন ও হাসপাতাল আইসোলেশনে ৫৬ জন। জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ২০১ জনের। এর মধ্যে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে জেলার হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে মৃত্যু হয়েছে ১৮১ জনের। এছাড়া চুয়াডাঙ্গায় আক্রান্ত অন্য ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে জেলার বাইরে।
মেহেরপুর:
মেহেরপুরে নতুন করে আরও ৯ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে চারজনের। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত তিনজন ও উপসর্গ নিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে মৃত্যু হয়েছে একজনের। গতকাল জেলায় নতুন আক্রান্ত ৯ জনের মধ্যে সদর উপজেলার ২ জন ও গাংনীতে ৭ জন রয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। সূত্রে আরও জানা যায়, গতকাল মেহেরপুর স্বাস্থ্য বিভাগ ল্যাবে পরীক্ষিত আরও ১৪৩টি নমুনার ফলাফল প্রকাশ করে। এর মধ্যে ৭টি নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৬.২৯ শতাংশ। নতুন আাক্রান্ত ৭ জনসহ বর্তমানে মেহেরপুর জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৩৩১ জন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৬২ জন, গাংনী উপজেলায় ১৯৫ জন এবং মুজিবনগর উপজেলায় ৭৪ জন। এ পর্যন্ত মেহেরপুরে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৭৩ জনের। মৃতদের মধ্যে সদর উপজেলার ৮০ জন, গাংনী উপজেলার ৫৪ জন ও মুজিবনগর উপজেলার ৩৯ জন রয়েছে।
ঝিনাইদহ:
গত আড়াই মাসে প্রথম মৃত্যুহীন সময় পার করল ঝিনাইদহ জেলা। গত ৪৮ ঘণ্টায় ঝিনাইদহে করোনা আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যাননি। তবে আক্রান্ত হয়েছে ২৪ জন। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম গতকাল সোমবার বিকেলে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সবার প্রচেষ্টার কারণে হয়তো আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার কমতে শুরু করেছে। এটা তারই প্রমাণ। তিনি বলেন, দুই দিন ধরে ঝিনাইদহে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থাকলেও কোনো মৃত্যু নেই। এটা একটা ভালো লক্ষন বলে মনে হচ্ছে। তিনি বলেন, গণহারে টিকা প্রদান ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের তৎপরতার সুফল পেতে শুরু করেছে মানুষ।
সারাদেশ:
সারা দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন করে সংক্রমণ ধরা পড়েছে ৬ হাজার ৯৫৯ জনের দেহে। গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, দেশে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৪ লাখ ২৫ হাজার ৮৬১ জনের দেহে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৪ হাজার ৩৪৯ জনের। ২৪ ঘণ্টায় দেশের ৭১৭টি ল্যাবে করোনার ৩৩ হাজার ১৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ০৮ শতাংশ।
গত একদিনে করোনায় নিহতদের মধ্যে পুরুষ ৯০ জন, নারী ৮৪ জন। এর মধ্যে একজন শিশু রয়েছে। বাকিদের মধ্যে বিশোর্ধ্ব ৩, ত্রিশোর্ধ্ব ১২, চলি¬শোর্ধ্ব ২১, পঞ্চাশোর্ধ্ব ৪১ ও ষাটোর্ধ্ব ৫২, সত্তরোর্ধ্ব ৩৩, অশীতিপর ৭ ও নবতিপর ৪ জন। বিভাগ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এরপরই রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৭ জন। এ ছাড়া খুলনায় ১৯ জন, রাজশাহীতে ১৭, বরিশালে ৭, সিলেটে ৬, রংপুরে ৭ ও ময়মনসিংহে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশে করোনা প্রথম শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। উদ্বেগ থাকলেও প্রথম কয়েক মাসে ভাইরাসটি সেভাবে ছড়ায়নি। গত শীতে দ্বিতীয় ঢেউ আসার উদ্বেগ থাকলেও সংক্রমণ ও মৃত্যু-দুটোই কমে আসে। একপর্যায়ে পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৩ শতাংশের নিচে নেমে যায়, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিবেচনায় মহামারি নয়, নিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতি।
তবে গত মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে শনাক্তের হার আবার বাড়তে থাকে। দ্বিতীয় ঢেউ নিশ্চিত হওয়ার পর এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে ভারতে করোনার নতুন ধরনের কথা জানা যায়। সেই ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্তদের দ্রুত অসুস্থ করে দেয়, তাদের অক্সিজেন লাগে বেশি। ছড়ায়ও দ্রুত, তাই মৃত্যুর সংখ্যাও বেশি।
করোনার ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে দফায় দফায় কঠোর বিধিনিষেধ, লকডাউন বা শাটডাউন দেয় সরকার। চার মাসের বেশি সময়ের এই অচলাবস্থার শেষ হয় বুধবার। চালু হয়েছে বাসসহ গণপরিবহন, খুলেছে দোকানপাট। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে পর্যটনকেন্দ্রগুলোও খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।