ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

গত বছর মাসে ২০ শিশু হত্যা বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের প্রতিবেদন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৫৮:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ জানুয়ারী ২০১৭
  • / ৩১১ বার পড়া হয়েছে

vwBWc

সমীকরণ ডেস্ক: শিশু অধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম (বিএসএএফ)। সংগঠনটির এই প্রতিবেদনে বলা হয়- গত বছরে ৩৫৮৯টি শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। যাদের মধ্যে ১৪৪১ শিশু অপমৃত্যুর শিকার এবং ৬৮৬ শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার। তবে হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণসহ সামগ্রিকভাবে শিশু নির্যাতনের সংখ্যা ২০১৫ সালের তুলনায় কিছুটা কমলেও বিএসএএফ মনে করে গত বছর মাসে গড়ে ২০টির অধিক শিশু হত্যা এবং ৩০টিরও বেশি শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের ওপর ভিত্তি করেই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। মঙ্গলবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিএসএএফ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের পরিচালক আব্দুস শহিদ মাহমুদ, চেয়ারম্যান এমরানুল হক চৌধুরী, বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক এবং বিএসএএফ’র প্রকল্প পরিচালক এহসানুল হক। আব্দুস শহিদ মাহমুদ শিশু নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে বলেন, জাতীয় পর্যায়ে শিশুদের নিয়ে কাজ করে এমন ২৬৯টি এনজিওর একটি সমন্বিত ফোরাম হলো- বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম। ১৯৯৭ সাল থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত শিশু অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করে ‘স্টেট অফ চাইল্ড রাইটস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে। তিনি বলেন, ২০১৬ সালে জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সংবাদ পর্যালোচনা করে শিশু অধিকার পরিস্থিতি এমন যে, পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ৩৫৮৯টি শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। যাদের মধ্যে ১৪৪১ শিশু অপমৃত্যুর শিকার এবং ৬৮৬ শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার। গেল বছর ৬৪টি শিশু বাবা-মায়ের নির্যাতনে নিহত হয়। অর্থাৎ মাসে গড়ে ৫টি শিশু বাবা মায়ের নির্মম নির্যাতনে প্রাণ হারিয়েছে। সেইসঙ্গে স্কুলগামী কিশোরীদের প্রতি বখাটেদের অত্যাচার, মারধর বেড়েছে। অপমৃত্যু হয়েছে ২৬৫টি শিশুর। তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালে শিশু অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, ১৪৪১টি, অপঘাতের শিকার ২০৫টি, যৌন নির্যাতনের শিকার ৬৮৬টি, অপহরণ, নিখোঁজ ও উদ্ধার ৪৪৫টি শিশু, নির্যাতন সহিংসতার শিকার ৩৯৮টি এবং অন্যান্য ৪১৪টি। এ সময় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, শিশু নির্যাতন ও সহিংসতা বন্ধ এবং শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদেরকে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে আরও বেশি বেশি ভূমিকা পালন করতে হবে। যেমন নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ব্যাপারে মিডিয়ার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এরপর যে রায় হয়েছে তা আইনের শাসনের পথে একটি ভালো উদাহরণ। তিনি বলেন, দেশে ২০১৫ সালের তুলনায় গত বছর শিশু নির্যাতনের হার কমলেও বাবা মায়ের হাতে নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে। আমরা এগুলো খুব কঠোরভাবে মনিটরিং করছি। আসলে সামাজিক অস্থিরতা বেড়েছে। সন্দেহের বশীভূত হয়ে অনেক শিশুকে মেরে ফেলা হচ্ছে। নির্মম নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটছে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রকে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, আমাদেরকে শুধু বিচার চাইলেই হবে না বরং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে আমাদেরকে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

গত বছর মাসে ২০ শিশু হত্যা বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের প্রতিবেদন

আপলোড টাইম : ১০:৫৮:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ জানুয়ারী ২০১৭

vwBWc

সমীকরণ ডেস্ক: শিশু অধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম (বিএসএএফ)। সংগঠনটির এই প্রতিবেদনে বলা হয়- গত বছরে ৩৫৮৯টি শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। যাদের মধ্যে ১৪৪১ শিশু অপমৃত্যুর শিকার এবং ৬৮৬ শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার। তবে হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণসহ সামগ্রিকভাবে শিশু নির্যাতনের সংখ্যা ২০১৫ সালের তুলনায় কিছুটা কমলেও বিএসএএফ মনে করে গত বছর মাসে গড়ে ২০টির অধিক শিশু হত্যা এবং ৩০টিরও বেশি শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের ওপর ভিত্তি করেই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। মঙ্গলবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিএসএএফ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের পরিচালক আব্দুস শহিদ মাহমুদ, চেয়ারম্যান এমরানুল হক চৌধুরী, বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক এবং বিএসএএফ’র প্রকল্প পরিচালক এহসানুল হক। আব্দুস শহিদ মাহমুদ শিশু নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে বলেন, জাতীয় পর্যায়ে শিশুদের নিয়ে কাজ করে এমন ২৬৯টি এনজিওর একটি সমন্বিত ফোরাম হলো- বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম। ১৯৯৭ সাল থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত শিশু অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করে ‘স্টেট অফ চাইল্ড রাইটস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে। তিনি বলেন, ২০১৬ সালে জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সংবাদ পর্যালোচনা করে শিশু অধিকার পরিস্থিতি এমন যে, পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ৩৫৮৯টি শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। যাদের মধ্যে ১৪৪১ শিশু অপমৃত্যুর শিকার এবং ৬৮৬ শিশু যৌন নির্যাতনের শিকার। গেল বছর ৬৪টি শিশু বাবা-মায়ের নির্যাতনে নিহত হয়। অর্থাৎ মাসে গড়ে ৫টি শিশু বাবা মায়ের নির্মম নির্যাতনে প্রাণ হারিয়েছে। সেইসঙ্গে স্কুলগামী কিশোরীদের প্রতি বখাটেদের অত্যাচার, মারধর বেড়েছে। অপমৃত্যু হয়েছে ২৬৫টি শিশুর। তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালে শিশু অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, ১৪৪১টি, অপঘাতের শিকার ২০৫টি, যৌন নির্যাতনের শিকার ৬৮৬টি, অপহরণ, নিখোঁজ ও উদ্ধার ৪৪৫টি শিশু, নির্যাতন সহিংসতার শিকার ৩৯৮টি এবং অন্যান্য ৪১৪টি। এ সময় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, শিশু নির্যাতন ও সহিংসতা বন্ধ এবং শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদেরকে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে আরও বেশি বেশি ভূমিকা পালন করতে হবে। যেমন নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ব্যাপারে মিডিয়ার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এরপর যে রায় হয়েছে তা আইনের শাসনের পথে একটি ভালো উদাহরণ। তিনি বলেন, দেশে ২০১৫ সালের তুলনায় গত বছর শিশু নির্যাতনের হার কমলেও বাবা মায়ের হাতে নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে। আমরা এগুলো খুব কঠোরভাবে মনিটরিং করছি। আসলে সামাজিক অস্থিরতা বেড়েছে। সন্দেহের বশীভূত হয়ে অনেক শিশুকে মেরে ফেলা হচ্ছে। নির্মম নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটছে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রকে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, আমাদেরকে শুধু বিচার চাইলেই হবে না বরং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে আমাদেরকে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।