ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

গতি ফিরেছে কাজে, উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের পরিদর্শন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:০৯:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ অগাস্ট ২০২০
  • / ৪২৪ বার পড়া হয়েছে

বদলে যাচ্ছে দর্শনা-মুজিবনগর-মেহেরপুর অঞ্চলের রেলওয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা
নিজস্ব প্রতিবেদক:
অবশেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া কথায় বদলে যাচ্ছে দর্শনা-মুজিবনগর-মেহেরপুর অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা। দীর্ঘদিনের কাক্সিক্ষত রেললাইন স্থাপনের কাজে এসেছে গতি। গতকাল সোমবার দিনব্যাপী রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে এ প্রতিনিধি দল দর্শনা, দামুড়হুদা, কার্পাসডাঙ্গা ও মুজিবনগর এলাকা পরিদর্শন করেন। এ প্রতিনিধি দলে ছিলেন প্রকল্প পরিচালক আছাদুল হক, টিম লিডার কনসালট্যান্ট হাবিব আহম্মেদ প্রমুখ।
প্রকল্প পরিচালক আছাদুল হক জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রেললাইন স্থাপনের সম্ভ্যবতা যাচাই, ডিটেইল ড্রয়িং, ডিজাইন, প্রাক্ক্যলিত ব্যয়, টেন্ডার প্রভৃতি বিষয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করেন তাঁরা। এই প্রকল্পে ৫৩ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথটিতে মোট ৬টি রেলস্টেশন ও ৩টি ব্রিজ রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত স্টেশনগুলো হলো- দর্শনা বাইপাস, বাস্তুপুর, কার্পাসডাঙ্গা, আটকবর, মুজিবনগর, দাঁরিয়াপুর ও মেহেরপুর। তিনটি ব্রিজের মধ্যে চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর দামুড়হুদা উপজেলার চিৎলা পয়েন্টে একটি, একই উপজেলার ভৈরব নদের ওপর কানাইডাঙ্গা পয়েন্টে একটি ও ভৈরব নদের মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলার বল্লভপুর পয়েন্টে একটি ব্রিজ রাখা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা-দর্শনা রেলপথের মাঝখানে গাইদঘাট ও জয়রামপুর স্টেশন থেকে নতুন সৃষ্ট ভিন্ন দুটি নতুন লাইন মিলিত হবে দর্শনা বাইপাসে স্টেশনে। যেটি, মুজিবনগর স্টেশন হয়ে মেহেরপুরে পৌঁছাবে। সমীক্ষা রিপোর্টের ওই প্রস্তাবনায় ৬টি স্টেশনসহ ৫৩ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের জন্য চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা এবং মেহেরপুরের মুজিবনগর ও মেহেরপুর সদর উপজেলায় মোট ৫৪০ একর কৃষি জমি অধিগ্রহণ করা হবে।
এদিকে, কাজে গতি আসায় এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে ফিরেছে আনন্দের সমাহার। ১৯৭৪ সালে তৎকালীন মুজিব সরকার ঐতিহাসিক মুজিবনগরকে অর্থবহ করে তুলতে দর্শনা থেকে মুজিবনগর হয়ে মেহেরপুর পর্যন্ত রেলপথ স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। নানা কারণে এ কাজের অগ্রগতি হয়নি। ২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিবনগরে এসে ঐতিহাসিক মুজিবনগরকে আরও ঐতিহ্যবাহী করে তুলতে আবারও দর্শনা-মেহেরপুর ভায়া মুজিবনগর রেলপথ নির্মাণের ঘোষণা দেন এবং এ প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন। ফলে বাস্তবায়নের পথে আবারও উঁকি মারতে শুরু করে দর্শনা-মেহেরপুর ভায়া মুজিবনগর রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর দীর্ঘদিনেও প্রকল্পটির বাস্তবায়ন না হওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে এলাকার সর্বস্তরের মানুষ।
এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এক দিকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা, যশোর, নড়াইল, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি, ভোলা, বরগুনা, পিরোজপুর, পটুয়াখালীসহ ১৫-১৬টি জেলার মানুষ রেলপথে ঐতিহাসিক মুজিবনগর যাতায়াতের সুযোগ পাবে। অপর দিকে ,এ রেলপথেই মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহের মানুষ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মাজারে যাওয়ার সুযোগ পাবে। আর এ রেলপথের কারণেই প্রসার ঘটবে এ এলাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যের।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

গতি ফিরেছে কাজে, উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের পরিদর্শন

আপলোড টাইম : ১১:০৯:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ অগাস্ট ২০২০

বদলে যাচ্ছে দর্শনা-মুজিবনগর-মেহেরপুর অঞ্চলের রেলওয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা
নিজস্ব প্রতিবেদক:
অবশেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া কথায় বদলে যাচ্ছে দর্শনা-মুজিবনগর-মেহেরপুর অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা। দীর্ঘদিনের কাক্সিক্ষত রেললাইন স্থাপনের কাজে এসেছে গতি। গতকাল সোমবার দিনব্যাপী রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে এ প্রতিনিধি দল দর্শনা, দামুড়হুদা, কার্পাসডাঙ্গা ও মুজিবনগর এলাকা পরিদর্শন করেন। এ প্রতিনিধি দলে ছিলেন প্রকল্প পরিচালক আছাদুল হক, টিম লিডার কনসালট্যান্ট হাবিব আহম্মেদ প্রমুখ।
প্রকল্প পরিচালক আছাদুল হক জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রেললাইন স্থাপনের সম্ভ্যবতা যাচাই, ডিটেইল ড্রয়িং, ডিজাইন, প্রাক্ক্যলিত ব্যয়, টেন্ডার প্রভৃতি বিষয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করেন তাঁরা। এই প্রকল্পে ৫৩ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথটিতে মোট ৬টি রেলস্টেশন ও ৩টি ব্রিজ রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত স্টেশনগুলো হলো- দর্শনা বাইপাস, বাস্তুপুর, কার্পাসডাঙ্গা, আটকবর, মুজিবনগর, দাঁরিয়াপুর ও মেহেরপুর। তিনটি ব্রিজের মধ্যে চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা নদীর ওপর দামুড়হুদা উপজেলার চিৎলা পয়েন্টে একটি, একই উপজেলার ভৈরব নদের ওপর কানাইডাঙ্গা পয়েন্টে একটি ও ভৈরব নদের মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলার বল্লভপুর পয়েন্টে একটি ব্রিজ রাখা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা-দর্শনা রেলপথের মাঝখানে গাইদঘাট ও জয়রামপুর স্টেশন থেকে নতুন সৃষ্ট ভিন্ন দুটি নতুন লাইন মিলিত হবে দর্শনা বাইপাসে স্টেশনে। যেটি, মুজিবনগর স্টেশন হয়ে মেহেরপুরে পৌঁছাবে। সমীক্ষা রিপোর্টের ওই প্রস্তাবনায় ৬টি স্টেশনসহ ৫৩ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের জন্য চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা এবং মেহেরপুরের মুজিবনগর ও মেহেরপুর সদর উপজেলায় মোট ৫৪০ একর কৃষি জমি অধিগ্রহণ করা হবে।
এদিকে, কাজে গতি আসায় এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে ফিরেছে আনন্দের সমাহার। ১৯৭৪ সালে তৎকালীন মুজিব সরকার ঐতিহাসিক মুজিবনগরকে অর্থবহ করে তুলতে দর্শনা থেকে মুজিবনগর হয়ে মেহেরপুর পর্যন্ত রেলপথ স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। নানা কারণে এ কাজের অগ্রগতি হয়নি। ২০১১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর দিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিবনগরে এসে ঐতিহাসিক মুজিবনগরকে আরও ঐতিহ্যবাহী করে তুলতে আবারও দর্শনা-মেহেরপুর ভায়া মুজিবনগর রেলপথ নির্মাণের ঘোষণা দেন এবং এ প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন। ফলে বাস্তবায়নের পথে আবারও উঁকি মারতে শুরু করে দর্শনা-মেহেরপুর ভায়া মুজিবনগর রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর দীর্ঘদিনেও প্রকল্পটির বাস্তবায়ন না হওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে এলাকার সর্বস্তরের মানুষ।
এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এক দিকে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা, যশোর, নড়াইল, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি, ভোলা, বরগুনা, পিরোজপুর, পটুয়াখালীসহ ১৫-১৬টি জেলার মানুষ রেলপথে ঐতিহাসিক মুজিবনগর যাতায়াতের সুযোগ পাবে। অপর দিকে ,এ রেলপথেই মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহের মানুষ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মাজারে যাওয়ার সুযোগ পাবে। আর এ রেলপথের কারণেই প্রসার ঘটবে এ এলাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যের।