ইপেপার । আজমঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

খাসোগি ‘হত্যা’য় প্রচ- ধাক্কা লাগছে সৌদি আরবে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৩৮:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ অক্টোবর ২০১৮
  • / ৩৮২ বার পড়া হয়েছে

বিশ্ব ডেস্ক: সৌদি আরবে অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক ব্যবসায় সংক্রান্ত ‘ফিউচার ইনভেস্টমেন্ট ইনিশিয়েটিভ’ শীর্ষ সম্মেলন বর্জন করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। তুরস্কে সৌদি আরবের কনসুলেটে সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে ‘হত্যার’ ঘটনায় এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বিশ্বের এই দুটি বৃহৎ শক্তি। এ ছাড়া ওই সম্মেলন থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিচ্ছে বিশ্বের বড় বড় মিডিয়া আউটলেট। এর মধ্যে রয়েছে নিক্কি, সিএনবিসি, সিএনএন, নিউ ইয়র্ক টাইমস, ফিন্যান্সিয়াল টাইমস, ব্লুমবার্গ প্রভৃতি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি ও সিএনএন। জামাল খাসোগি সৌদি আরবের বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর তীব্র সমালোচক। গত বছর সৌদি আরবে ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন শুরু হলে তিনি স্বেচ্ছায় চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। এরপর তুরস্কের এক যুবতীর সঙ্গে তার প্রেম গড়ে ওঠে। তাকে বিয়ে করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে তিনি ২রা অক্টোবর প্রবেশ করেন তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি আরবের কনসুলেটে। সেখান থেকে তিনি আর বেরিয়ে আসেন নি। তুরস্ক কর্তৃপক্ষ মনে করছে, ওই কনসুলেটের ভেতরে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তারপর মৃতদেহ টুকরো টুকরো করে সেখান থেকে বাইরে নেয়া হয়েছে। এ কাজে সৌদি আরবের বিশেষ একটি এজেন্ট টিমকে নেয়া হয় ইস্তাম্বুলে। তবে সৌদি আরব এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কিন্তু জামাল খাসোগিকে হত্যার পক্ষে প্রমাণ রয়েছে বলে তুরস্ক জানিয়েছে। এমন কি মৃত্যুর আগে যেসব ঘটনা ঘটেছিল তা জামাল খাসোগি নিজেই রেকর্ড করে গেছেন। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে তোলপাড় হচ্ছে। তাতে জামাল খাসোগি হত্যায় সৌদি আরব সরাসরি যুক্ত বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। বিশেষ করে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের দিকে আঙুল তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে, তিনি এতে জড়িত। যদি তা-ই হয় তাহলে এতে সৌদি আরবের রাজপরিবারের ওপর বড় রকমের প্রভাব পড়বে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে বেশ কিছু স্পন্সর ও মিডিয়া গ্রুপ এ মাসে অনুষ্ঠেয় ‘ফিউচার ইনভেস্টমেন্ট ইনিশিয়েটিভ’ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বিবিসিকে বলেছেন, ওই সম্মেলনে যোগ নাও দিতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্টিভ মনুচিন ও বৃটেনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রী লিয়াম ফক্স। উল্লেখ্য, সৌদি আরবে ওই সম্মেলনটির আয়োজক ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। এতে তিনি তার গৃহীত সংস্কারমূলক এজেন্ডাকে সবার সামনে তুলে ধরে তা অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। বৃটেনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, সৌদি আরবে অনুষ্ঠেয় ওই সম্মেলনের বিষয়ে লিয়াম ফক্সের ডায়েরিতে কিছু নেই। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয় নি। ওদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকরা জামাল খাসোগিকে হত্যার নিন্দা জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। তবে যদি খাসোগিকে হত্যা করা হয়ে থাকেই তাহলে এভাবে শুধু কথা বা বক্তব্যই যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন জামাল খাসোগির প্রেমিকা হাতিস চেঙ্গিস। তিনি নিউ ইয়র্ক টাইমসে লিখেছেন, তাকে যদি আমরা এরই মধ্যে হারিয়েই থাকি তাহলে শুধু নিন্দাই যথেষ্ট নয়। যারা তাকে আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে তাদেরকে অবশ্যই জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে এবং পূর্ণাঙ্গ আইনের অধীনে তাদেরকে শাস্তি দিতে হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

খাসোগি ‘হত্যা’য় প্রচ- ধাক্কা লাগছে সৌদি আরবে

আপলোড টাইম : ০৯:৩৮:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ অক্টোবর ২০১৮

বিশ্ব ডেস্ক: সৌদি আরবে অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক ব্যবসায় সংক্রান্ত ‘ফিউচার ইনভেস্টমেন্ট ইনিশিয়েটিভ’ শীর্ষ সম্মেলন বর্জন করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। তুরস্কে সৌদি আরবের কনসুলেটে সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে ‘হত্যার’ ঘটনায় এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বিশ্বের এই দুটি বৃহৎ শক্তি। এ ছাড়া ওই সম্মেলন থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিচ্ছে বিশ্বের বড় বড় মিডিয়া আউটলেট। এর মধ্যে রয়েছে নিক্কি, সিএনবিসি, সিএনএন, নিউ ইয়র্ক টাইমস, ফিন্যান্সিয়াল টাইমস, ব্লুমবার্গ প্রভৃতি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি ও সিএনএন। জামাল খাসোগি সৌদি আরবের বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর তীব্র সমালোচক। গত বছর সৌদি আরবে ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন শুরু হলে তিনি স্বেচ্ছায় চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। এরপর তুরস্কের এক যুবতীর সঙ্গে তার প্রেম গড়ে ওঠে। তাকে বিয়ে করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে তিনি ২রা অক্টোবর প্রবেশ করেন তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি আরবের কনসুলেটে। সেখান থেকে তিনি আর বেরিয়ে আসেন নি। তুরস্ক কর্তৃপক্ষ মনে করছে, ওই কনসুলেটের ভেতরে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তারপর মৃতদেহ টুকরো টুকরো করে সেখান থেকে বাইরে নেয়া হয়েছে। এ কাজে সৌদি আরবের বিশেষ একটি এজেন্ট টিমকে নেয়া হয় ইস্তাম্বুলে। তবে সৌদি আরব এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কিন্তু জামাল খাসোগিকে হত্যার পক্ষে প্রমাণ রয়েছে বলে তুরস্ক জানিয়েছে। এমন কি মৃত্যুর আগে যেসব ঘটনা ঘটেছিল তা জামাল খাসোগি নিজেই রেকর্ড করে গেছেন। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে তোলপাড় হচ্ছে। তাতে জামাল খাসোগি হত্যায় সৌদি আরব সরাসরি যুক্ত বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। বিশেষ করে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের দিকে আঙুল তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে, তিনি এতে জড়িত। যদি তা-ই হয় তাহলে এতে সৌদি আরবের রাজপরিবারের ওপর বড় রকমের প্রভাব পড়বে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে বেশ কিছু স্পন্সর ও মিডিয়া গ্রুপ এ মাসে অনুষ্ঠেয় ‘ফিউচার ইনভেস্টমেন্ট ইনিশিয়েটিভ’ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বিবিসিকে বলেছেন, ওই সম্মেলনে যোগ নাও দিতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্টিভ মনুচিন ও বৃটেনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রী লিয়াম ফক্স। উল্লেখ্য, সৌদি আরবে ওই সম্মেলনটির আয়োজক ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। এতে তিনি তার গৃহীত সংস্কারমূলক এজেন্ডাকে সবার সামনে তুলে ধরে তা অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। বৃটেনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, সৌদি আরবে অনুষ্ঠেয় ওই সম্মেলনের বিষয়ে লিয়াম ফক্সের ডায়েরিতে কিছু নেই। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয় নি। ওদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকরা জামাল খাসোগিকে হত্যার নিন্দা জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। তবে যদি খাসোগিকে হত্যা করা হয়ে থাকেই তাহলে এভাবে শুধু কথা বা বক্তব্যই যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন জামাল খাসোগির প্রেমিকা হাতিস চেঙ্গিস। তিনি নিউ ইয়র্ক টাইমসে লিখেছেন, তাকে যদি আমরা এরই মধ্যে হারিয়েই থাকি তাহলে শুধু নিন্দাই যথেষ্ট নয়। যারা তাকে আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে তাদেরকে অবশ্যই জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে এবং পূর্ণাঙ্গ আইনের অধীনে তাদেরকে শাস্তি দিতে হবে।