ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ক্ষমা পেলেন আ.লীগের বিদ্রোহীরা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১৯:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০১৯
  • / ২১০ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:
অবশেষে ক্ষমা পেলেন পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। এর আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিদ্রোহী হওয়ায় দলীয় আনুগত্য ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে স্থানীয়ভাবে বহিষ্কার হন তারা। অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে নৌকার বিদ্রোহী হওয়ায় দলীয় শোকজ নোটিসের জবাবের পর অবশেষে ক্ষমা পেয়েছেন। ক্ষমা পেয়েই বিদ্রোহীরা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছেন।
আ.লীগ সূত্রে জানা যায়, গত পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রায় দুইশ নেতা নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করেন। তাদের মদদদাতা হিসেবে প্রায় অর্ধশত সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। এমন অবস্থায় গত ১২ জুলাই আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে ‘বিদ্রোহী’ ও তাদের মদদদাতাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় আ.লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার জন্য গত ৮ সেপ্টেম্বর বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের মদদদাতা ১৭৭ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। একইসঙ্গে ২১ কার্যদিবসের মধ্যে চিঠির জবাব দিতে দলের কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে নির্দেশনাও দেয়া হয়। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নৌকাবিরোধী কর্মকা-ের সাথে যুক্ত থাকা ওই নেতারা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যই শোকজের জবাব দেন। একই সাথে ভোটের মাঠে নৌকাবিরোধী কর্মকা-ে অংশগ্রহণ করার কারণ হিসেবে স্থানীয় মন্ত্রী, এমপি ও প্রভাবশালী নেতাদের বক্তব্য ও উৎসাহকে দায়ী করেছেন তারা।
এদিকে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকাবিরোধী নেতাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন আ.লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলটির সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষরিত এই চিঠিতে বিদ্রোহীদের ক্ষমা নিশ্চিত করা হয়। ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। যা সংগঠের গঠনতন্ত্রের ৮৭ (ক) অনুযায়ী আপনাকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু আপনি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন এবং ভবিষ্যতে সংগঠনের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কার্যকলাপে সংযুক্ত হবেন না। এই মর্মে লিখিত অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। তাই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নিকট আপনার প্রেরিত লিখিত জবাবের পর্যালোচনা করে এবং অভিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থি কার্যক্রম ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে আপনার প্রতি ক্ষমা প্রর্দশন করা হলো।
তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি বলেন, পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনে আমি বিদ্রোহী ছিলাম। সেজন্য দল আমাকে শোকজ নোটিস দিয়েছিল। আমি সেই চিঠির জবাব দিয়েছি এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ক্ষমা করেছেন। আগামী ২০-২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন। অনুষ্ঠেয় ওই সম্মেলনের আগেই তৃণমূলে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি সম্মেলন করতে চান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন তিনি। নেত্রীর এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে ইতোমধ্যে তৃণমূলের বিভিন্ন জেলায় সাংগঠনিক সফর শুরু করেছেন ক্ষমতাসীন দলটির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতারা।
এদিকে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীকের বিদ্রোহীরা ক্ষমা পেলেও আগামী সম্মেলনে দলে স্থান হবে কী না তাও জানা নেই তাদের। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে আছেন তারা। যদিও দলের সাধারণ ক্ষমা পেয়ে দীর্ঘদিন পর দলীয় কার্যক্রমে ফিরছেন অভিযুক্ত নেতারা। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনে নৌকার বিরোধিতা করার জন্য বিদ্রোহীদের শোকজ নোটিস দেয়া হয়েছিল। সেই চিঠির জবাবে যারা সন্তোষজনক জবাব দিয়েছেন তাদের ক্ষমা করা হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ক্ষমা পেলেন আ.লীগের বিদ্রোহীরা

আপলোড টাইম : ১০:১৯:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০১৯

সমীকরণ প্রতিবেদন:
অবশেষে ক্ষমা পেলেন পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। এর আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিদ্রোহী হওয়ায় দলীয় আনুগত্য ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে স্থানীয়ভাবে বহিষ্কার হন তারা। অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে নৌকার বিদ্রোহী হওয়ায় দলীয় শোকজ নোটিসের জবাবের পর অবশেষে ক্ষমা পেয়েছেন। ক্ষমা পেয়েই বিদ্রোহীরা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছেন।
আ.লীগ সূত্রে জানা যায়, গত পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রায় দুইশ নেতা নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করেন। তাদের মদদদাতা হিসেবে প্রায় অর্ধশত সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। এমন অবস্থায় গত ১২ জুলাই আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে ‘বিদ্রোহী’ ও তাদের মদদদাতাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় আ.লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার জন্য গত ৮ সেপ্টেম্বর বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের মদদদাতা ১৭৭ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। একইসঙ্গে ২১ কার্যদিবসের মধ্যে চিঠির জবাব দিতে দলের কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে নির্দেশনাও দেয়া হয়। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নৌকাবিরোধী কর্মকা-ের সাথে যুক্ত থাকা ওই নেতারা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যই শোকজের জবাব দেন। একই সাথে ভোটের মাঠে নৌকাবিরোধী কর্মকা-ে অংশগ্রহণ করার কারণ হিসেবে স্থানীয় মন্ত্রী, এমপি ও প্রভাবশালী নেতাদের বক্তব্য ও উৎসাহকে দায়ী করেছেন তারা।
এদিকে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকাবিরোধী নেতাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন আ.লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলটির সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষরিত এই চিঠিতে বিদ্রোহীদের ক্ষমা নিশ্চিত করা হয়। ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। যা সংগঠের গঠনতন্ত্রের ৮৭ (ক) অনুযায়ী আপনাকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু আপনি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন এবং ভবিষ্যতে সংগঠনের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কার্যকলাপে সংযুক্ত হবেন না। এই মর্মে লিখিত অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। তাই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নিকট আপনার প্রেরিত লিখিত জবাবের পর্যালোচনা করে এবং অভিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থি কার্যক্রম ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে আপনার প্রতি ক্ষমা প্রর্দশন করা হলো।
তাড়াশ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি বলেন, পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনে আমি বিদ্রোহী ছিলাম। সেজন্য দল আমাকে শোকজ নোটিস দিয়েছিল। আমি সেই চিঠির জবাব দিয়েছি এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ক্ষমা করেছেন। আগামী ২০-২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন। অনুষ্ঠেয় ওই সম্মেলনের আগেই তৃণমূলে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি সম্মেলন করতে চান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন তিনি। নেত্রীর এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে ইতোমধ্যে তৃণমূলের বিভিন্ন জেলায় সাংগঠনিক সফর শুরু করেছেন ক্ষমতাসীন দলটির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতারা।
এদিকে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীকের বিদ্রোহীরা ক্ষমা পেলেও আগামী সম্মেলনে দলে স্থান হবে কী না তাও জানা নেই তাদের। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে আছেন তারা। যদিও দলের সাধারণ ক্ষমা পেয়ে দীর্ঘদিন পর দলীয় কার্যক্রমে ফিরছেন অভিযুক্ত নেতারা। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনে নৌকার বিরোধিতা করার জন্য বিদ্রোহীদের শোকজ নোটিস দেয়া হয়েছিল। সেই চিঠির জবাবে যারা সন্তোষজনক জবাব দিয়েছেন তাদের ক্ষমা করা হয়েছে।