কোরবানির পশুর চামড়া
- আপলোড টাইম : ০৮:৫৯:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জুলাই ২০২০
- / ২০৭ বার পড়া হয়েছে
বরাবরের মতো পবিত্র ঈদ-উল-আজহা সামনে রেখে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহের জন্য দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। তবে পশু ও আকারভেদে এবার চামড়ার দাম গতবারের চেয়ে কম। রোববার কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ বিষয়ে এক ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত জানান বাণিজ্যমন্ত্রী। প্রয়োজনে এবার কাঁচা চামড়া রফতানির সুযোগও রাখা হচ্ছে। কোরবানি ঈদের আগে এবং পরে পশুর চামড়া নিয়ে সংশ্লিষ্টজনদের ভেতর শঙ্কা ও উৎকণ্ঠা কাজ করে। বিশেষ করে এতিমখানার কর্তৃপক্ষ, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা থাকেন দুশ্চিন্তায়। তারা সংগৃহীত বা প্রাপ্য চামড়ার ন্যায্যমূল্য পাবেন তো? অন্যদিকে আড়তদার ও ট্যানারি মালিক এবং চামড়া রফতানিকারকরা থাকেন সুযোগের অপেক্ষায়। জাত ব্যবসায়ীদের দৃষ্টিভঙ্গিই অবশ্য এমন যে, সর্বনিম্ন বিনিয়োগের মাধ্যমে সর্বোচ্চ মুনাফা লাভে সচেষ্ট থাকা। তবে তা নিশ্চয়ই এমন পর্যায়ে যাওয়া সমীচীন নয় যে চামড়ার দাম এমনই নেমে যাবে আর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ক্ষোভে-দুঃখে চামড়া রাস্তায় ফেলে দেবেন। চামড়াশিল্পের বাজার গতিশীল রাখতে সরকার সচেতন এবং নানা ইতিবাচক পদক্ষেপ নেয়। কিন্তু দুঃখজনক হলো, অনেক সময় অসাধু সিন্ডিকেট গড়ে ওঠার কারণে সদিচ্ছা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। লবণ ব্যবসায়ীরা কখনও কখনও অসাধু সিন্ডিকেটের অংশ হয়ে ওঠে। লবণের দাম এক লাফে বাড়িয়ে দেয়া হয়। এসবের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে গরিব ও স্বল্প আয়ের মানুষের ওপরই।
এ বছরের হিসাব একটু অন্যরকম। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে অর্থনীতির বিপর্যস্ত দশা। তাই এবার কোরবানির চামড়া কিনতে বিশেষ সুবিধাই দেয়া হয়েছে ব্যবসায়ীদের। কোরবানির পশুর চামড়া ক্রয়-বিক্রয় ও সংরক্ষণ কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে প্রকৃত চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছে অর্থপ্রবাহ সচল রাখার উদ্দেশ্যে এ খাতে খেলাপী ঋণ পুনঃতফসিলের বিশেষ সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া কাঁচা চামড়া ক্রয়ে নতুন ঋণের আবেদনও করতে পারবেন সুবিধাভোগীরা। সরকারের এই উদ্যোগ চামড়া শিল্পের স্বার্থেই। এখন সুবিধা নিয়ে ব্যবসায়ীরা যথাযথ ভূমিকা রাখবেন, সেটিই প্রত্যাশিত। প্রসঙ্গত চামড়াশিল্প দেশীয় কাঁচামালভিত্তিক রফতানিমুখী শিল্প। জাতীয় প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান, বৈদেশিক মুদ্রা আয় এবং মূল্য সংযোজনের নিরিখে এটি একটি সম্ভাবনাময় খাত। চামড়াশিল্পে সারা বছর ধরে ব্যবহৃত কাঁচামালের প্রায় অর্ধেক জোগান আসে প্রতিবছর ঈদ-উল-আজহা উৎসবে কোরবানির পশুর চামড়া থেকে। এ সময় কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছে প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান নিশ্চিত করা সম্ভব হলে একদিকে মূল্যবান কাঁচামাল সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে এবং কোরবানিকৃত পশুর চামড়া বিক্রির মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী আর্থিকভাবে উপকৃত হবে।