ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

কে পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন?

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৪২:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী ২০২১
  • / ২৯৮ বার পড়া হয়েছে

জীবননগর পৌর নির্বাচন : কেন্দ্রে লবিংয়ে প্রার্থীরা
এ আর ডাবলু:
আসন্ন জীবননগর পৌর নির্বাচনের দিন যতোই ঘনিয়ে আসছে, নির্বাচনের আমেজ ততোই বাড়ছে। পাড়া-মহল্লা, হাট-বাজার থেকে শুরু করে সর্বত্র চলছে নির্বাচনী আলোচনা। কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপির দলীয় প্রার্থী, কে হচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। আর কে হাসবেন শেষ হাসি, কে করবেন জয়লাভ। কোন প্রার্থী কতটুকু যোগ্য, তার চুলচেরা বিশ্লেষণ ও সমালোচনাও চলছে চায়ের দোকানের টকশোতে। কে কোন প্রার্থীর পক্ষ নিবেন? পুরোনো প্রার্থীর, নাকি নতুন মুখের, নাকি স্বতন্ত্র প্রার্থীর। এমন প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে ভোটারদের মনে। তবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার আগে প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণা চালালেও এখন সবাই ঘরমুখী হয়ে পড়েছেন। মাঠের প্রচারণায় তাঁদের খুব একটা দেখা না গেলেও অপেক্ষায় দিন-রাত কাটছে তাঁদের। রাতদিন নাওয়া-খাওয়া বাদ দিয়ে নীরবে-নিভৃতে চলছে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে দৌঁড়ঝাপ আর লিংক-লবিং।
জানা গেছে, জীবননগর পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে ৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ৪ জন, বিএনপির ২ জন ও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ১ জন। সীমান্তবর্তী এ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ২০ হাজার ৮২৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ১৩৩ জন এবং মহিলা ভোটার ১০ হাজার ৬৯৪ জন।
ভোটের রাজনীতিতে এখানেও বরাবরই বিএনপি জোটের আধিপত্য। তবে হাজি আলী আজগর টগর তিন-তিনবার এমপি নির্বাচিত হওয়ার পরেই প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়েছে এমনটিই প্রত্যাশা এলাবাসীর। তবে আসন্ন পৌর নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের হাফ ডজন প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন চান বলে জানা গেছে। অন্যদিকে বিএনপির দুইবারের নির্বাচিত পৌর মেয়র নোয়াব আলী এবার প্রার্থী না হওয়ায় দলটিকে নতুনদের ওপরই ভরসা রাখতে হবে।
জানা গেছে, পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুল, জীবননগর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম মিণ্টু, জীবননগর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুন্সি নাসির উদ্দীন, তিন-তিনবার নির্বাচিত কাউন্সিলর ও জীবননগর পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম এবং পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।
পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছি, ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি, মনের জোর বেড়ে গেছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দলীয় মনোনয়ন নৌকা পাওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। এছাড়াও তিনি বরাবরই সেবামূলক ও উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। তাঁর এসব ভালো পদক্ষেপ বিফলে যাবে না বলেও মনে করেন তাঁর অনুসারীরা। অন্যদিকে, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন সমর্থকরা।
অন্যদিকে, জীবননগর পৌর নির্বাচন এলাকায় শক্ত হাতে দলের হাল ধরে রেখেছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি পৌর মেয়র নোয়াব আলী। দুইবারের পৌর মেয়র নোয়াব আলী নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ায় দলটিকে নতুনদের ওপরই ভরসা রাখতে হচ্ছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল জীবননগর উপজেলার প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ও সাবেক পৌর বিএনপির সভাপতি শাহাজান কবির এবং উপজেলা জাতীয়তাবাদী পৌর যুবদলের আহ্বায়ক ও দুইবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর হযরত আলী।
শাহজান কবিরের অনুসারীরা মনে করেন, দলের দুর্দিনে যারা রাজপথে থেকেছেন এবং জনগণের পাশে আছেন ও জনসমর্থন আছে, তাঁকেই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হোক। তবে সেক্ষেত্রে সমর্থকরা দলীয় প্রতীক ধানের শীষ শাহাজান কবির পাচ্ছেন বলে এমনটিই মনে করেন অনুসারীরা। অন্যদিকে, হজরত আলীর সমর্থকরাও শতভাগ আশাবাদী দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে।
সবমিলিয়ে আসন্ন ৪র্থ ধাপের পৌর নির্বাচনে আশা-নিরাশার দোলচালে ঝুলছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ভাগ্য। কে হাসবেন শেষ হাসি, শেষ পর্যন্ত কে পাবেন দলীয় মনোয়ন, কে হবেন পৌর পিতা। তা নিয়ে উভয় দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা রয়েছেন সংশয়ে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

কে পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন?

আপলোড টাইম : ১০:৪২:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী ২০২১

জীবননগর পৌর নির্বাচন : কেন্দ্রে লবিংয়ে প্রার্থীরা
এ আর ডাবলু:
আসন্ন জীবননগর পৌর নির্বাচনের দিন যতোই ঘনিয়ে আসছে, নির্বাচনের আমেজ ততোই বাড়ছে। পাড়া-মহল্লা, হাট-বাজার থেকে শুরু করে সর্বত্র চলছে নির্বাচনী আলোচনা। কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপির দলীয় প্রার্থী, কে হচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। আর কে হাসবেন শেষ হাসি, কে করবেন জয়লাভ। কোন প্রার্থী কতটুকু যোগ্য, তার চুলচেরা বিশ্লেষণ ও সমালোচনাও চলছে চায়ের দোকানের টকশোতে। কে কোন প্রার্থীর পক্ষ নিবেন? পুরোনো প্রার্থীর, নাকি নতুন মুখের, নাকি স্বতন্ত্র প্রার্থীর। এমন প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে ভোটারদের মনে। তবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার আগে প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণা চালালেও এখন সবাই ঘরমুখী হয়ে পড়েছেন। মাঠের প্রচারণায় তাঁদের খুব একটা দেখা না গেলেও অপেক্ষায় দিন-রাত কাটছে তাঁদের। রাতদিন নাওয়া-খাওয়া বাদ দিয়ে নীরবে-নিভৃতে চলছে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে দৌঁড়ঝাপ আর লিংক-লবিং।
জানা গেছে, জীবননগর পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে ৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ৪ জন, বিএনপির ২ জন ও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ১ জন। সীমান্তবর্তী এ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ২০ হাজার ৮২৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ১৩৩ জন এবং মহিলা ভোটার ১০ হাজার ৬৯৪ জন।
ভোটের রাজনীতিতে এখানেও বরাবরই বিএনপি জোটের আধিপত্য। তবে হাজি আলী আজগর টগর তিন-তিনবার এমপি নির্বাচিত হওয়ার পরেই প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়েছে এমনটিই প্রত্যাশা এলাবাসীর। তবে আসন্ন পৌর নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের হাফ ডজন প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন চান বলে জানা গেছে। অন্যদিকে বিএনপির দুইবারের নির্বাচিত পৌর মেয়র নোয়াব আলী এবার প্রার্থী না হওয়ায় দলটিকে নতুনদের ওপরই ভরসা রাখতে হবে।
জানা গেছে, পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুল, জীবননগর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম মিণ্টু, জীবননগর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুন্সি নাসির উদ্দীন, তিন-তিনবার নির্বাচিত কাউন্সিলর ও জীবননগর পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম এবং পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।
পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছি, ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি, মনের জোর বেড়ে গেছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দলীয় মনোনয়ন নৌকা পাওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। এছাড়াও তিনি বরাবরই সেবামূলক ও উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। তাঁর এসব ভালো পদক্ষেপ বিফলে যাবে না বলেও মনে করেন তাঁর অনুসারীরা। অন্যদিকে, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন সমর্থকরা।
অন্যদিকে, জীবননগর পৌর নির্বাচন এলাকায় শক্ত হাতে দলের হাল ধরে রেখেছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি পৌর মেয়র নোয়াব আলী। দুইবারের পৌর মেয়র নোয়াব আলী নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ায় দলটিকে নতুনদের ওপরই ভরসা রাখতে হচ্ছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল জীবননগর উপজেলার প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ও সাবেক পৌর বিএনপির সভাপতি শাহাজান কবির এবং উপজেলা জাতীয়তাবাদী পৌর যুবদলের আহ্বায়ক ও দুইবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর হযরত আলী।
শাহজান কবিরের অনুসারীরা মনে করেন, দলের দুর্দিনে যারা রাজপথে থেকেছেন এবং জনগণের পাশে আছেন ও জনসমর্থন আছে, তাঁকেই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হোক। তবে সেক্ষেত্রে সমর্থকরা দলীয় প্রতীক ধানের শীষ শাহাজান কবির পাচ্ছেন বলে এমনটিই মনে করেন অনুসারীরা। অন্যদিকে, হজরত আলীর সমর্থকরাও শতভাগ আশাবাদী দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে।
সবমিলিয়ে আসন্ন ৪র্থ ধাপের পৌর নির্বাচনে আশা-নিরাশার দোলচালে ঝুলছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ভাগ্য। কে হাসবেন শেষ হাসি, শেষ পর্যন্ত কে পাবেন দলীয় মনোয়ন, কে হবেন পৌর পিতা। তা নিয়ে উভয় দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা রয়েছেন সংশয়ে।