ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

কর্মে নেই আয়া বেতন তোলেন দিব্যি : প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত যাত্রীরা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫৫:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ মার্চ ২০১৮
  • / ৮০৭ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনের কর্মচারিদের কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগ : নিরবে চলছে টিকেট কালোবাজারি
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক: জনবল সঙ্কট ও অব্যবস্থাপনার কারণে চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের কার্যক্রম চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। অফিস-অবকাঠামো থাকলেও প্রায় প্রতিটি সেক্টরেই রয়েছে জনবল ঘাটতি। পাশাপাশি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অযতœ-অবহেলা-অব্যবস্থাপনায় দিন দিন কমে আসছে যাত্রীসেবার মান। অনিরাপদ সড়কপথের বেহাল দশার কারণে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর অঞ্চলের মানুষ আবারও রেলমুখী হয়ে উঠেছে। কিন্তু রেলপথে অন্তহীন সমস্যায় তাদের পোহাতে হচ্ছে নিত্য দুর্ভোগ। দেশের প্রথম এ রেলপথ দিয়ে এক সময় ব্রিটিশরা পণ্য পরিবহন করতো। বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী এই রেলস্টেশনটি চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে।
চুয়াডাঙ্গার রেলষ্টেশনের প্রথম শ্রেণীর বিশ্রামাগারের আয়া’র বিরুদ্ধে কর্তব্য অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে দায়িত্বে অবহেলা করলেও কার্যরত ষ্টেশন মাষ্টার রহস্যজনক কারণে নিরব রয়েছেন। এতে প্রথম শ্রেণীতে ভ্রমণ করা যাত্রীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। এছাড়াও স্টেশনের বাতিঘরে ঘর সংসার গড়ে তুলেছেন রেলষ্টেশনের কর্মচারীরা। নিরব কালোবাজারির অভিযোগ রয়েছে টিকিট বিক্রিতেও। রেল কর্মচারি না হয়েও ট্রেনের টিকিট বিক্রি করছেন রেলওয়ের সাথে চুক্তিবদ্ধ কোম্পানি সিএনএস’র প্রতিনিধি। তবে রেল কর্তৃপক্ষ বলেছে, দায়িত্ব পালনে কোন কর্মকর্তা-কর্মচারির অবহেলা নেই। যতটুকু সমস্যা দেখা দিয়েছে তা জনবল সঙ্কটের কারণে। পর্যাপ্ত জনবল পাওয়া গেলে সকল সমস্যা নিরসন সম্ভব হবে।
সূত্রে জানা গেছে, দেশের প্রথম রেলপথ চালু হয় চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে কুষ্টিয়ার জগতি পর্যন্ত। ব্রিটিশরা পণ্য পরিবহনের সুবিধার্থে ১৮৬২ সালের ১৬ নভেম্বর এই রেলপথ চালু করে। সেই কারণেই চুয়াডাঙ্গাতেও রেলষ্টেশন চালু হয়। চুয়াডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী রেলষ্টেশনে অনিয়মই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। আর এর জন্য দায়ী মূলত রেলষ্টেশনের কর্মকর্তারা। কারণ তাদের দায়সারা গোছের কারণেই দায়িত্বে অধিনস্থ কর্মচারীরা ইচ্ছামত দায়িত্ব পালন করে।
অভিযোগ রয়েছে, ট্রেনের টিকিট বিক্রিতে কালোবাজারি হচ্ছে। অনেকেই আগে থেকে টিকেট ক্রয় করে পরে চড়া দামে বিক্রি করে। অনেকটা নিরবেই চলে এই কালোবাজারি। এছাড়া, টিকিট কাউন্টারে বেশিরভাগ সময়ই টিকিট বিক্রি করতে দেখা যায় বেসরকারি কোম্পানি সিএনএস’র প্রতিনিধি তোরাপ হোসেনকে। বাংলাদেশ রেলওয়ের সাথে চুক্তিবদ্ধ কোম্পানি সিএনএস’র প্রতিনিধি হয়েও তিনি বনে গেছেন কাউন্টার মাস্টার। মূলত তোরাপ হোসেনের কারণেই কালোবাজারি বেড়েছে এবং চলছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
সূত্র জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকাগামী চিত্রা এক্সপ্রেসে এসি (সিট) ৫টি, এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) ৫টি, শোভন চেয়াররে ৩৫টি আসন বরাদ্দ রয়েছে। ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেসে এসি চেয়ার ৫টি ও শোভন চেয়ারে ৩৫ টি আসন বরাদ্দ রয়েছে। এছাড়া, রাজশাহীগামী কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস এবং খুলনাগামী সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেসে এসি চেয়ার ৬টি ও শোভন চেয়ারে ৯৫টি আসন বরাদ্দ রয়েছে। তবে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরে বরাদ্দকৃত আসনের চেয়ে যাত্রী সংখ্যা অনেক বেশি। ফলে ট্রেনের আসন পাওয়া অনেকটা সোনার হরিণের মত। তাছাড়া যাত্রার ১০দিন আগে থেকে অগ্রিম টিকেট বিক্রি হওয়ার কারণে অনেকেই যাত্রার দু’একদিন আগে এসেও আসন পায়না। ওই সুযোগে কেউ কেউ কালোবাজারি করে থাকে।
টিকেট কালোবাজারির বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আনোয়ার সাদাত বলেন, চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে টিকেট কালোবাজারি হয়না। এ ধরণের কোন অভিযোগ আমি এখনও পর্যন্ত পাইনি। তিনি আরও বলেন, ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হয় ১০দিন আগে থেকে। অনেকেই ১০ দিন আগেই টিকেট কিনে রেখে দেয়। পরে যাত্রার সময় পরিবর্তন হলে আবার ওই টিকেট বিক্রি করে দেয়। এদিকে, ট্রেনের আসনের ব্যাপক চাহিদা থাকায় পরে বাড়তি দাম দিয়েও অনেকে ওই টিকেট ক্রয় করেন।
তোরাপ হোসেনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং সিস্টেমের (সিএনএস) প্রতিনিধি হিসেবে চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনে কর্মরত। শুধুমাত্র কম্পিউটার সিস্টেমের কাজ করবেন। তোরাপ হোসেন কোন প্রকার টিকেট বিক্রি করতে পারবেন না। টিকেট বিক্রির জন্য একজন প্রধান বুকিং এবং চারজন সহকারি বুকিং রয়েছে। তোরাপ হোসেন যদি টিকেট বিক্রি করে থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান স্টেশন মাস্টার।
অপরদিকে, ষ্টেশনের এলকার দোকানী ও নিয়মিত যাত্রীরা জানিয়েছে, প্রথম শ্রেণীর বিশ্রামাগারে কর্মরত আয়া হালিমাকে কখনই তার দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় না। হালিমার কর্তব্যে অবহেলার কারণে প্রথম শ্রেণীর বিশ্রামাগারের আসবাবপত্রসহ ও বিশ্রামাগারটি অপরিষ্কার থাকে। এতে যাত্রীরা যেমন তাদের প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তেমনই বাংলাদেশ রেলওয়েরও হচ্ছে দূর্নাম। এদিকে রেলষ্টেশনরে বাতিঘরটিতে কিছু কর্মচারী থাকা খাওয়া ও রান্নাসহ বিভন্ন কার্যক্রম করে থাকে। এককথায় তারা ঘর সংসরা পেতেছে।
স্টেশন কর্তৃপক্ষ জানায়, চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনে কর্মকর্তা-কর্মচারির মোট ২৩টি পদ রয়েছে। তার মধ্যে ৮টি পদই শুন্য। স্টেশন মাস্টার ১টি, সহকারি স্টেশন মাস্টার ২টি, প্রধান বুকিং ১টি, সহকারি বুকিং ৪টি পদের সকলেই রয়েছেন। তবে পয়েন্টস ম্যান (পিম্যান) ৬টির মধ্যে ২টি, আয়া ৩টির মধ্যে ২টি, সুইপার ৩টির মধ্যে ২টি এবং পোর্টার ৩টির মধ্যে ২টি পদই শুন্য। কর্মচারিদের পদ শুন্য থাকায় বেশিই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে কর্মকর্তাদের।
প্রথম শ্রেণীর বিশ্রামাগারে কর্মরত আয়ার কর্তব্যে অবহেলার বিষয়ে স্টেশন মাস্টার আনোয়ার সাদাত বলেন, হালিমা খাতুন শারীরিকভাবে অসুস্থ। তার এক ছেলেও মানসিক প্রতিবন্ধী। তাকে প্রায়ই চিকিৎসার জন্য পাবনা মানসিক হাসপাতালে নিতে হয়। ফলে হালিমা খাতুন দায়িত্ব ঠিকমত পালন করতে পারেন না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। হালিমা খাতুনের বাড়ি রাজবাড়ী জেলায় হওয়ায় তিনি নিকটস্থ এলাকায় বদলি হওয়ার চেষ্টা করছেন। তা নাহলে খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান স্টেশন মাস্টার আনোয়ার সাদাত। বাতিঘরের বিষয়ে তিনি বলেন, এখন বাতিঘরের প্রয়োজন হয় না। ফলে মানবিক দিক থেকে তাদের থাকতে দেওয়া হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

কর্মে নেই আয়া বেতন তোলেন দিব্যি : প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত যাত্রীরা

আপলোড টাইম : ০৯:৫৫:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ মার্চ ২০১৮

চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনের কর্মচারিদের কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগ : নিরবে চলছে টিকেট কালোবাজারি
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক: জনবল সঙ্কট ও অব্যবস্থাপনার কারণে চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের কার্যক্রম চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। অফিস-অবকাঠামো থাকলেও প্রায় প্রতিটি সেক্টরেই রয়েছে জনবল ঘাটতি। পাশাপাশি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অযতœ-অবহেলা-অব্যবস্থাপনায় দিন দিন কমে আসছে যাত্রীসেবার মান। অনিরাপদ সড়কপথের বেহাল দশার কারণে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর অঞ্চলের মানুষ আবারও রেলমুখী হয়ে উঠেছে। কিন্তু রেলপথে অন্তহীন সমস্যায় তাদের পোহাতে হচ্ছে নিত্য দুর্ভোগ। দেশের প্রথম এ রেলপথ দিয়ে এক সময় ব্রিটিশরা পণ্য পরিবহন করতো। বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী এই রেলস্টেশনটি চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে।
চুয়াডাঙ্গার রেলষ্টেশনের প্রথম শ্রেণীর বিশ্রামাগারের আয়া’র বিরুদ্ধে কর্তব্য অবহেলার অভিযোগ উঠেছে। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে দায়িত্বে অবহেলা করলেও কার্যরত ষ্টেশন মাষ্টার রহস্যজনক কারণে নিরব রয়েছেন। এতে প্রথম শ্রেণীতে ভ্রমণ করা যাত্রীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। এছাড়াও স্টেশনের বাতিঘরে ঘর সংসার গড়ে তুলেছেন রেলষ্টেশনের কর্মচারীরা। নিরব কালোবাজারির অভিযোগ রয়েছে টিকিট বিক্রিতেও। রেল কর্মচারি না হয়েও ট্রেনের টিকিট বিক্রি করছেন রেলওয়ের সাথে চুক্তিবদ্ধ কোম্পানি সিএনএস’র প্রতিনিধি। তবে রেল কর্তৃপক্ষ বলেছে, দায়িত্ব পালনে কোন কর্মকর্তা-কর্মচারির অবহেলা নেই। যতটুকু সমস্যা দেখা দিয়েছে তা জনবল সঙ্কটের কারণে। পর্যাপ্ত জনবল পাওয়া গেলে সকল সমস্যা নিরসন সম্ভব হবে।
সূত্রে জানা গেছে, দেশের প্রথম রেলপথ চালু হয় চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে কুষ্টিয়ার জগতি পর্যন্ত। ব্রিটিশরা পণ্য পরিবহনের সুবিধার্থে ১৮৬২ সালের ১৬ নভেম্বর এই রেলপথ চালু করে। সেই কারণেই চুয়াডাঙ্গাতেও রেলষ্টেশন চালু হয়। চুয়াডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী রেলষ্টেশনে অনিয়মই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। আর এর জন্য দায়ী মূলত রেলষ্টেশনের কর্মকর্তারা। কারণ তাদের দায়সারা গোছের কারণেই দায়িত্বে অধিনস্থ কর্মচারীরা ইচ্ছামত দায়িত্ব পালন করে।
অভিযোগ রয়েছে, ট্রেনের টিকিট বিক্রিতে কালোবাজারি হচ্ছে। অনেকেই আগে থেকে টিকেট ক্রয় করে পরে চড়া দামে বিক্রি করে। অনেকটা নিরবেই চলে এই কালোবাজারি। এছাড়া, টিকিট কাউন্টারে বেশিরভাগ সময়ই টিকিট বিক্রি করতে দেখা যায় বেসরকারি কোম্পানি সিএনএস’র প্রতিনিধি তোরাপ হোসেনকে। বাংলাদেশ রেলওয়ের সাথে চুক্তিবদ্ধ কোম্পানি সিএনএস’র প্রতিনিধি হয়েও তিনি বনে গেছেন কাউন্টার মাস্টার। মূলত তোরাপ হোসেনের কারণেই কালোবাজারি বেড়েছে এবং চলছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
সূত্র জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকাগামী চিত্রা এক্সপ্রেসে এসি (সিট) ৫টি, এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) ৫টি, শোভন চেয়াররে ৩৫টি আসন বরাদ্দ রয়েছে। ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেসে এসি চেয়ার ৫টি ও শোভন চেয়ারে ৩৫ টি আসন বরাদ্দ রয়েছে। এছাড়া, রাজশাহীগামী কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস এবং খুলনাগামী সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেসে এসি চেয়ার ৬টি ও শোভন চেয়ারে ৯৫টি আসন বরাদ্দ রয়েছে। তবে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরে বরাদ্দকৃত আসনের চেয়ে যাত্রী সংখ্যা অনেক বেশি। ফলে ট্রেনের আসন পাওয়া অনেকটা সোনার হরিণের মত। তাছাড়া যাত্রার ১০দিন আগে থেকে অগ্রিম টিকেট বিক্রি হওয়ার কারণে অনেকেই যাত্রার দু’একদিন আগে এসেও আসন পায়না। ওই সুযোগে কেউ কেউ কালোবাজারি করে থাকে।
টিকেট কালোবাজারির বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আনোয়ার সাদাত বলেন, চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে টিকেট কালোবাজারি হয়না। এ ধরণের কোন অভিযোগ আমি এখনও পর্যন্ত পাইনি। তিনি আরও বলেন, ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হয় ১০দিন আগে থেকে। অনেকেই ১০ দিন আগেই টিকেট কিনে রেখে দেয়। পরে যাত্রার সময় পরিবর্তন হলে আবার ওই টিকেট বিক্রি করে দেয়। এদিকে, ট্রেনের আসনের ব্যাপক চাহিদা থাকায় পরে বাড়তি দাম দিয়েও অনেকে ওই টিকেট ক্রয় করেন।
তোরাপ হোসেনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং সিস্টেমের (সিএনএস) প্রতিনিধি হিসেবে চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনে কর্মরত। শুধুমাত্র কম্পিউটার সিস্টেমের কাজ করবেন। তোরাপ হোসেন কোন প্রকার টিকেট বিক্রি করতে পারবেন না। টিকেট বিক্রির জন্য একজন প্রধান বুকিং এবং চারজন সহকারি বুকিং রয়েছে। তোরাপ হোসেন যদি টিকেট বিক্রি করে থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান স্টেশন মাস্টার।
অপরদিকে, ষ্টেশনের এলকার দোকানী ও নিয়মিত যাত্রীরা জানিয়েছে, প্রথম শ্রেণীর বিশ্রামাগারে কর্মরত আয়া হালিমাকে কখনই তার দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় না। হালিমার কর্তব্যে অবহেলার কারণে প্রথম শ্রেণীর বিশ্রামাগারের আসবাবপত্রসহ ও বিশ্রামাগারটি অপরিষ্কার থাকে। এতে যাত্রীরা যেমন তাদের প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তেমনই বাংলাদেশ রেলওয়েরও হচ্ছে দূর্নাম। এদিকে রেলষ্টেশনরে বাতিঘরটিতে কিছু কর্মচারী থাকা খাওয়া ও রান্নাসহ বিভন্ন কার্যক্রম করে থাকে। এককথায় তারা ঘর সংসরা পেতেছে।
স্টেশন কর্তৃপক্ষ জানায়, চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনে কর্মকর্তা-কর্মচারির মোট ২৩টি পদ রয়েছে। তার মধ্যে ৮টি পদই শুন্য। স্টেশন মাস্টার ১টি, সহকারি স্টেশন মাস্টার ২টি, প্রধান বুকিং ১টি, সহকারি বুকিং ৪টি পদের সকলেই রয়েছেন। তবে পয়েন্টস ম্যান (পিম্যান) ৬টির মধ্যে ২টি, আয়া ৩টির মধ্যে ২টি, সুইপার ৩টির মধ্যে ২টি এবং পোর্টার ৩টির মধ্যে ২টি পদই শুন্য। কর্মচারিদের পদ শুন্য থাকায় বেশিই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে কর্মকর্তাদের।
প্রথম শ্রেণীর বিশ্রামাগারে কর্মরত আয়ার কর্তব্যে অবহেলার বিষয়ে স্টেশন মাস্টার আনোয়ার সাদাত বলেন, হালিমা খাতুন শারীরিকভাবে অসুস্থ। তার এক ছেলেও মানসিক প্রতিবন্ধী। তাকে প্রায়ই চিকিৎসার জন্য পাবনা মানসিক হাসপাতালে নিতে হয়। ফলে হালিমা খাতুন দায়িত্ব ঠিকমত পালন করতে পারেন না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। হালিমা খাতুনের বাড়ি রাজবাড়ী জেলায় হওয়ায় তিনি নিকটস্থ এলাকায় বদলি হওয়ার চেষ্টা করছেন। তা নাহলে খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান স্টেশন মাস্টার আনোয়ার সাদাত। বাতিঘরের বিষয়ে তিনি বলেন, এখন বাতিঘরের প্রয়োজন হয় না। ফলে মানবিক দিক থেকে তাদের থাকতে দেওয়া হয়েছে।