ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

করোনায় বন্ধ ১৬ হাজার কারখানা, সাড়ে ১০ লাখ শ্রমিক বেকার

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুলাই ২০২০
  • / ২০১ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:
করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারি এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে বন্ধ রাখা কারখানাগুলোর বেশিরভাগই খুলেনি। বেকারত্ব নেমে এসেছে কয়েক লাখ শ্রমিকের ভাগ্যে। সরকারের শ্রম মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের (ডিআইএফই) হিসাব অনুযায়ী, করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর ১৫ হাজার ৯৬৫টি কারখানা বন্ধ হয়েছে। এর মধ্যে গার্মেন্টস কারখানা ১ হাজার ৯১৫টি এবং গার্মেন্টসের বাইরে অন্যান্য খাতের কারখানা ১৪ হাজার ৫০টি। প্রায় ১০ লাখ ৫১ হাজার শ্রমিক এসব কারখানায় কাজ করতেন। এসব শ্রমিকের বেশির ভাগই বর্তমানে বেকার।
শ্রম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি মাঠ পর্যায় থেকে নেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে। সরকারি এ হিসেবের বাইরেও গত কয়েক মাসে ৮৭টি কারখানা থেকে প্রায় সাড়ে ২৬ হাজার শ্রমিক ছাঁটাইয়ের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে গার্মেন্টস কারখানার সংখ্যা ৭৫টি। অন্যদিকে বন্ধ হওয়া কারখানার তালিকায়লে অফ (সাময়িক বন্ধ ঘোষণা) হওয়া কারখানা রয়েছে ৩৭টি। এসব কারণে শ্রম অসন্তোষও চলছে দেশের বিভিন্ন কারখানায়। ডিআইএফই জানায়, বর্তমানে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের ৬৫টি কারখানায় শ্রম অসন্তোষ চলছে।এর মধ্যে ৫৫টিই গার্মেন্টস কারখানা। বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রায় ২ হাজার গার্মেন্টস কারখানার মধ্যে বেশির ভাগই রপ্তানিমুখী। তবে এ তালিকায় তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর সদস্যভুক্ত পোশাক মালিকের বাইরেও বিপুলসংখ্যক কারখানা রয়েছে। বন্ধ হওয়া এসব কারখানা মূলত স্বল্প পুঁজির এবং অপেক্ষাকৃত ছোট আকৃতির। রপ্তানি আদেশ বাতিল কিংবা স্থগিত হওয়ায় এবং সময়মতো তৈরি পণ্যের অর্থ না পাওয়ায় অনেক কারখানা বন্ধ হয়েছে। কারখানা বন্ধ হওয়া সংক্রান্ত এ তথ্য ও পরিস্থিতি শ্রম মন্ত্রণালয় ছাড়াও সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও মন্ত্রণালয়েও জানানো হয়েছে।
ডিআইএফইর যুগ্ম মহাপরিদর্শক শামসুল আলম খান বলেন, দেশব্যাপী মাঠ পর্যায় থেকে সংগ্রহ করা তথ্যের ভিত্তিতে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর কারখানা বন্ধ হওয়ার আলোচ্য চিত্র তারা পেয়েছেন বলে জানান তিনি। দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে সরকার মার্চের শেষের দিকে এসে লকডাউনের আদলে দেশব্যাপী ছুটি ঘোষণা করে। দুই থেকে আড়াই মাস শেষে অর্থনীতি ধীরে ধীরে চালু করা হলেও গতি আসেনি। বিশ্ববাজারে চাহিদা কমে যাওয়ায় রপ্তানিও কমে গেছে ব্যাপক হারে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাব অনুযায়ী, সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে রপ্তানি কমেছে প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকার। এর প্রভাবে ব্যাপক হারে কর্মহীন হচ্ছেন কর্মী। প্রাতিষ্ঠানিক খাতের বাইরেও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে বিপুলসংখ্যক মানুষ কর্মহীন হচ্ছেন। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা পরিষদের (বিআইডিএস) হিসাবে করোনা পরিস্থিতির প্রভাবে দেশে কর্মহীন হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

করোনায় বন্ধ ১৬ হাজার কারখানা, সাড়ে ১০ লাখ শ্রমিক বেকার

আপলোড টাইম : ০৯:১৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ জুলাই ২০২০

সমীকরণ প্রতিবেদন:
করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারি এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে বন্ধ রাখা কারখানাগুলোর বেশিরভাগই খুলেনি। বেকারত্ব নেমে এসেছে কয়েক লাখ শ্রমিকের ভাগ্যে। সরকারের শ্রম মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের (ডিআইএফই) হিসাব অনুযায়ী, করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর ১৫ হাজার ৯৬৫টি কারখানা বন্ধ হয়েছে। এর মধ্যে গার্মেন্টস কারখানা ১ হাজার ৯১৫টি এবং গার্মেন্টসের বাইরে অন্যান্য খাতের কারখানা ১৪ হাজার ৫০টি। প্রায় ১০ লাখ ৫১ হাজার শ্রমিক এসব কারখানায় কাজ করতেন। এসব শ্রমিকের বেশির ভাগই বর্তমানে বেকার।
শ্রম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি মাঠ পর্যায় থেকে নেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে। সরকারি এ হিসেবের বাইরেও গত কয়েক মাসে ৮৭টি কারখানা থেকে প্রায় সাড়ে ২৬ হাজার শ্রমিক ছাঁটাইয়ের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে গার্মেন্টস কারখানার সংখ্যা ৭৫টি। অন্যদিকে বন্ধ হওয়া কারখানার তালিকায়লে অফ (সাময়িক বন্ধ ঘোষণা) হওয়া কারখানা রয়েছে ৩৭টি। এসব কারণে শ্রম অসন্তোষও চলছে দেশের বিভিন্ন কারখানায়। ডিআইএফই জানায়, বর্তমানে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের ৬৫টি কারখানায় শ্রম অসন্তোষ চলছে।এর মধ্যে ৫৫টিই গার্মেন্টস কারখানা। বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রায় ২ হাজার গার্মেন্টস কারখানার মধ্যে বেশির ভাগই রপ্তানিমুখী। তবে এ তালিকায় তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর সদস্যভুক্ত পোশাক মালিকের বাইরেও বিপুলসংখ্যক কারখানা রয়েছে। বন্ধ হওয়া এসব কারখানা মূলত স্বল্প পুঁজির এবং অপেক্ষাকৃত ছোট আকৃতির। রপ্তানি আদেশ বাতিল কিংবা স্থগিত হওয়ায় এবং সময়মতো তৈরি পণ্যের অর্থ না পাওয়ায় অনেক কারখানা বন্ধ হয়েছে। কারখানা বন্ধ হওয়া সংক্রান্ত এ তথ্য ও পরিস্থিতি শ্রম মন্ত্রণালয় ছাড়াও সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও মন্ত্রণালয়েও জানানো হয়েছে।
ডিআইএফইর যুগ্ম মহাপরিদর্শক শামসুল আলম খান বলেন, দেশব্যাপী মাঠ পর্যায় থেকে সংগ্রহ করা তথ্যের ভিত্তিতে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর কারখানা বন্ধ হওয়ার আলোচ্য চিত্র তারা পেয়েছেন বলে জানান তিনি। দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে সরকার মার্চের শেষের দিকে এসে লকডাউনের আদলে দেশব্যাপী ছুটি ঘোষণা করে। দুই থেকে আড়াই মাস শেষে অর্থনীতি ধীরে ধীরে চালু করা হলেও গতি আসেনি। বিশ্ববাজারে চাহিদা কমে যাওয়ায় রপ্তানিও কমে গেছে ব্যাপক হারে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাব অনুযায়ী, সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে রপ্তানি কমেছে প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকার। এর প্রভাবে ব্যাপক হারে কর্মহীন হচ্ছেন কর্মী। প্রাতিষ্ঠানিক খাতের বাইরেও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে বিপুলসংখ্যক মানুষ কর্মহীন হচ্ছেন। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা পরিষদের (বিআইডিএস) হিসাবে করোনা পরিস্থিতির প্রভাবে দেশে কর্মহীন হওয়ার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ।