ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

করোনায় প্রতিদিনই কেড়ে নিচ্ছে নতুন প্রাণ!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:০৬:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই ২০২১
  • / ৩২ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরে করোনা ও উপসর্গে আরও ১৩ জনের প্রাণহানি
পূর্বের সবকিছু ছাপিয়ে সারা দেশে শনাক্তের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি : আরও ২২০ জনের মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক:
গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে আবারও করোনা আক্রান্তের রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন শনাক্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ৭৬৮ জনের শরীরে। একই সময়ে মৃত্যু হয়েছে আরও ২২০ জনের শরীরে। এটাই দেশের ইতিহাসে করোনা ভাইরাসে দ্বিতীয সর্বোচ্চ মৃত্যু। এদিকে, গতকাল চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৩৬ জনের শরীরে। গতকাল মেহেরপুরে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে আরও আটজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৩ জন।
চুয়াডাঙ্গা:
বৈশিক মহামারি করোনাভাইরাস প্রতিদিন কেড়ে নিচ্ছে নতুন নতুন প্রাণ। গতকাল চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত হয়ে তিনজন ও উপসর্গ নিয়ে আরও দুজনসহ মোট পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও ১৩৬ জনের শরীরে। গতকাল জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ চুয়াডাঙ্গার ৫২৫টি নমুনার ফলাফল প্রকাশ করে। এর মধ্যে ১৩৬টি নমুনার ফলাফল পজিটিভ ও ৩৮৯টি নমুনার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। জেলায় নতুন আক্রান্ত ১৩৬ জনের মধ্যে সদর উপজেলার ৫০ জন, আলমডাঙ্গা ইপজেলার ৩৩জন, দামুড়হুদা উপজেলার ২৪জন ও জীবননগরের ২৯ জন রয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৫.৯০ শতাংশ। এনিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছে ৪ হাজার ৮১৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে সদর উপজেলার ২ হাজার ৩০ জন, আলমডাঙ্গার ৮১৬ জন, দামুড়হুদায় ১ হাজার ২৫ জন ও জীবননগরে ৯৩৫ জন। গতকাল জেলায় নতুন ১২৭ জন সুস্থ হয়েছে। এনিয়ে জেলায় মাট সুস্থ হয়েছে ২ হাজার ৭৩৭ জন।
গতকাল জেলায় করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৪৩ জনের। এর মধ্যে ১২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে জেলায় ও করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে জেলার বাইরে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. এ এস এম ফাতেহ্ আকরাম জানান, গতকাল জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতাল আইসোলেশনে দুজন ও আলমডাঙ্গায় একজনসহ তিনজন ও সদর হাসপাতালের ইয়োলো জোনে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর পর করোনা প্রটোকলে নিহতের লাশ পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। করোনায় মৃত্যু হওয়া নতুন তিনজনসহ জেলায় আক্রান্ত হয়ে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে মৃত্যু হয়েছে মোট ১২৭ জনের ও জেলার বাইরে মৃত্যু হয়েছে আরও ১৬ জনের।
জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ করোনা পরীক্ষার জন্য গত বৃহস্পতিবার গত শুক্রবার ২৯টি, শনিবার ৪২৩টি ও রোববার ৪৪৭টি নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবে প্রেরণ করে। গতকাল উক্ত নমুনা ও পূর্বের পেন্ডিং নমুনার মধ্যে ৫২৫টি নমুনার ফলাফল প্রকাশ করে জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ। গতকাল জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ আরও ৪৮৭টি নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করেছে।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিসের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী জেলা থেকে এ পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ ১৭ হাজার ৬৯২টি, প্রাপ্ত ফলাফল ১৭ হাজার ৩০০টি, পজিটিভ ৪ হাজার ৮১৩ জন। জেলায় বর্তমানে ১ হাজার ৯৪৩ জন হোম আইসোলেশন ও হাসপাতাল আইসোলেশনে রয়েছে। এর মধ্যে হোম আইসোলেশনে আছে ১ হাজার ৮১৬ জন ও হাসপাতাল আইসোলেশনে ১২৭ জন। জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৪৩ জনের। এর মধ্যে জেলায় আক্রান্ত হয়ে জেলার হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে মৃত্যু হয়েছে ১২৭ জনের। এছাড়া চুয়াডাঙ্গায় আক্রান্ত অন্য ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে জেলার বাইরে।
মেহেরপুর:
মেহেরপুরে প্রতিদিনই করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল সোমবার মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চার জন এবং জেলার বিভিন্ন স্থানে করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রাত নয়টায় মেহেরপুর সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ পরীক্ষিত ২২৭টি নমুনার ফলাফল প্রকাশ করে এর মধ্যে ৭৩টি নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। নতুন আক্রান্ত ৭৩ জনের মধ্যে সদর উপজেলার ৪১ জন, গাংনী উপজেলার ২৩ জন ও মুজিবনগর উপজেলার ৯ জন রয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩২.১৫ ভাগ।
মেহেরপুর সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে মেহেরপুর জেলায় মোট পজিটিভ রোগীর সংখ্যা ৭৮৫ জন। এর মধ্যে সদরে ২৫২ জন, গাংনীতে ৪৩৫ ও মুজিবনগরে ৯৮ জন।
সারা দেশ:
সারা দেশে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে আরও ২২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু। এনিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৬ হাজার ৬৩৯ জনে। এর আগে, গতকাল ১১ জুলাই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৩০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছে ১৩ হাজার ৭৬৮ জন। এ নিয়ে দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০ লাখ ৩৪ হাজার ৯৫৭ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৬ হাজার ৪৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হলেও পরীক্ষা করা হয় ৪৪ হাজার ৬৭ জন। যেখানে শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ২৪ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের মোট হার ১৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, একদিনে নতুন করে সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ২০ জন। এ নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা ৮ লাখ ৮১ হাজার ৫২১ জন। বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, মারা যাওয়া ২২০ জনের মধ্যে ষাটোর্ধ ১২১ জন। এছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৪৬ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২৬ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১১ জন এবং ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৯ জন ও ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন রয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ১৪২ জন ও মহিলা ৭৮ জন। যাদের মধ্যে বাসায় ১৩ জন ছাড়া বাকিরা হাসপাতালে মারা গেছেন। একই সময়ে বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ৬৪ জন, খুলনা বিভাগে ৫৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৩ জন, বরিশাল বিভাগে ৪ জন, সিলেট বিভাগে ৬ জন, রংপুর বিভাগে ১৮ জন ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩ জন মারা গেছেন।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

করোনায় প্রতিদিনই কেড়ে নিচ্ছে নতুন প্রাণ!

আপলোড টাইম : ১১:০৬:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই ২০২১

চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরে করোনা ও উপসর্গে আরও ১৩ জনের প্রাণহানি
পূর্বের সবকিছু ছাপিয়ে সারা দেশে শনাক্তের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি : আরও ২২০ জনের মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক:
গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে আবারও করোনা আক্রান্তের রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন শনাক্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ৭৬৮ জনের শরীরে। একই সময়ে মৃত্যু হয়েছে আরও ২২০ জনের শরীরে। এটাই দেশের ইতিহাসে করোনা ভাইরাসে দ্বিতীয সর্বোচ্চ মৃত্যু। এদিকে, গতকাল চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৩৬ জনের শরীরে। গতকাল মেহেরপুরে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে আরও আটজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৩ জন।
চুয়াডাঙ্গা:
বৈশিক মহামারি করোনাভাইরাস প্রতিদিন কেড়ে নিচ্ছে নতুন নতুন প্রাণ। গতকাল চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত হয়ে তিনজন ও উপসর্গ নিয়ে আরও দুজনসহ মোট পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও ১৩৬ জনের শরীরে। গতকাল জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ চুয়াডাঙ্গার ৫২৫টি নমুনার ফলাফল প্রকাশ করে। এর মধ্যে ১৩৬টি নমুনার ফলাফল পজিটিভ ও ৩৮৯টি নমুনার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। জেলায় নতুন আক্রান্ত ১৩৬ জনের মধ্যে সদর উপজেলার ৫০ জন, আলমডাঙ্গা ইপজেলার ৩৩জন, দামুড়হুদা উপজেলার ২৪জন ও জীবননগরের ২৯ জন রয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৫.৯০ শতাংশ। এনিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত হয়েছে ৪ হাজার ৮১৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে সদর উপজেলার ২ হাজার ৩০ জন, আলমডাঙ্গার ৮১৬ জন, দামুড়হুদায় ১ হাজার ২৫ জন ও জীবননগরে ৯৩৫ জন। গতকাল জেলায় নতুন ১২৭ জন সুস্থ হয়েছে। এনিয়ে জেলায় মাট সুস্থ হয়েছে ২ হাজার ৭৩৭ জন।
গতকাল জেলায় করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৪৩ জনের। এর মধ্যে ১২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে জেলায় ও করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে জেলার বাইরে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. এ এস এম ফাতেহ্ আকরাম জানান, গতকাল জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতাল আইসোলেশনে দুজন ও আলমডাঙ্গায় একজনসহ তিনজন ও সদর হাসপাতালের ইয়োলো জোনে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর পর করোনা প্রটোকলে নিহতের লাশ পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। করোনায় মৃত্যু হওয়া নতুন তিনজনসহ জেলায় আক্রান্ত হয়ে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে মৃত্যু হয়েছে মোট ১২৭ জনের ও জেলার বাইরে মৃত্যু হয়েছে আরও ১৬ জনের।
জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ করোনা পরীক্ষার জন্য গত বৃহস্পতিবার গত শুক্রবার ২৯টি, শনিবার ৪২৩টি ও রোববার ৪৪৭টি নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবে প্রেরণ করে। গতকাল উক্ত নমুনা ও পূর্বের পেন্ডিং নমুনার মধ্যে ৫২৫টি নমুনার ফলাফল প্রকাশ করে জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ। গতকাল জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ আরও ৪৮৭টি নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করেছে।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিসের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী জেলা থেকে এ পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ ১৭ হাজার ৬৯২টি, প্রাপ্ত ফলাফল ১৭ হাজার ৩০০টি, পজিটিভ ৪ হাজার ৮১৩ জন। জেলায় বর্তমানে ১ হাজার ৯৪৩ জন হোম আইসোলেশন ও হাসপাতাল আইসোলেশনে রয়েছে। এর মধ্যে হোম আইসোলেশনে আছে ১ হাজার ৮১৬ জন ও হাসপাতাল আইসোলেশনে ১২৭ জন। জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৪৩ জনের। এর মধ্যে জেলায় আক্রান্ত হয়ে জেলার হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে মৃত্যু হয়েছে ১২৭ জনের। এছাড়া চুয়াডাঙ্গায় আক্রান্ত অন্য ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে জেলার বাইরে।
মেহেরপুর:
মেহেরপুরে প্রতিদিনই করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল সোমবার মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চার জন এবং জেলার বিভিন্ন স্থানে করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রাত নয়টায় মেহেরপুর সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ পরীক্ষিত ২২৭টি নমুনার ফলাফল প্রকাশ করে এর মধ্যে ৭৩টি নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে। নতুন আক্রান্ত ৭৩ জনের মধ্যে সদর উপজেলার ৪১ জন, গাংনী উপজেলার ২৩ জন ও মুজিবনগর উপজেলার ৯ জন রয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩২.১৫ ভাগ।
মেহেরপুর সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে মেহেরপুর জেলায় মোট পজিটিভ রোগীর সংখ্যা ৭৮৫ জন। এর মধ্যে সদরে ২৫২ জন, গাংনীতে ৪৩৫ ও মুজিবনগরে ৯৮ জন।
সারা দেশ:
সারা দেশে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে আরও ২২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু। এনিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৬ হাজার ৬৩৯ জনে। এর আগে, গতকাল ১১ জুলাই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৩০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছে ১৩ হাজার ৭৬৮ জন। এ নিয়ে দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০ লাখ ৩৪ হাজার ৯৫৭ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৬ হাজার ৪৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হলেও পরীক্ষা করা হয় ৪৪ হাজার ৬৭ জন। যেখানে শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ২৪ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের মোট হার ১৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, একদিনে নতুন করে সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ২০ জন। এ নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা ৮ লাখ ৮১ হাজার ৫২১ জন। বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, মারা যাওয়া ২২০ জনের মধ্যে ষাটোর্ধ ১২১ জন। এছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৪৬ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২৬ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১১ জন এবং ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৯ জন ও ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন রয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ১৪২ জন ও মহিলা ৭৮ জন। যাদের মধ্যে বাসায় ১৩ জন ছাড়া বাকিরা হাসপাতালে মারা গেছেন। একই সময়ে বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ৬৪ জন, খুলনা বিভাগে ৫৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৩ জন, বরিশাল বিভাগে ৪ জন, সিলেট বিভাগে ৬ জন, রংপুর বিভাগে ১৮ জন ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩ জন মারা গেছেন।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।