ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

করোনায় নারীর মৃত্যু, উপসর্গে মৃত দুজনের শরীরে ছিল ভাইরাস!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৫:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগাস্ট ২০২০
  • / ৪৩৪ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ৯ শ ছাড়াল, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫১ জন শনাক্ত

কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবে মেহেরপুরে ১৯, ঝিনাইদহে ৪৭ ও কুষ্টিয়ায় ১২ জনের রিপোর্ট পজিটিভ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৫১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় জেলা সিভিল সার্জন অফিস এ তথ্য নিশ্চিত করে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৪২ জনে। এদিকে, করোনা আক্রান্ত হয়ে গতকাল এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়াল ১৬ জনে।
জানা যায়, গত সোমবার করোনা আক্রান্ত সন্দেহে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ১ জন করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত ব্যক্তির নমুনাসহ ৮৪টি নমুনা সংগ্রহ করে। সংগৃহীত ৮৪টি নমুনা পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে প্রেরণ করা হয়। গতকাল উক্ত ৮৪টি নমুনার ফলাফল সিভিল সার্জন অফিসে এসে পৌঁছায়। এর মধ্যে ৫১ জনের নমুনার ফলাফল রিপোর্ট পজিটিভ ও ৩৩ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ। এর মধ্যে করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত ব্যক্তির নমুনার ফলাফল নেগেটিভ। গতকাল করোনা শনাক্ত ৫১ জনের বয়স ১৫ থেকে ৭৫ বছর পর্যন্ত। পুরুষ ৩৪ জন ও নারী ১৭ জন। ৮৪টি নমুনার মধ্যে ১০ আগস্ট ঝোড়াঘাটা গ্রামের সাহাদত হোসেন (৭৫) ও আলমডাঙ্গা উপজেলার মুন্সিগঞ্জ গ্রামের সাদরী আলম করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। ১১ আগস্ট তাঁদের মৃত্যু হয়। গতকাল সাহাদত হোসেন ও সাদরী আলম দুজনের নমুনার ফলাফল পজিটিভ এসেছে।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ফারজানা তসলিমা (৪২) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা দুইটার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত ফারজানা তসলিমা আলমডাঙ্গা উপজেলার থানাপাড়ার আব্দুল গণির স্ত্রী। গত শনিবার (৮ আগস্ট) করোনা পরীক্ষার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে নমুনা দেন ফারজানা তসলিমা। পরদিন রোববার (৯ আগস্ট) তাঁর নমুনার ফলাফল পজিটিভ আসে। সোমবার (১০ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে পরিবারের সদস্যরা ফারজানা তসলিমাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার বেলা দুইটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শামীম কবির বলেন, শ্বাসকষ্ট, ডায়াবেটিস, কিডনিজনিত সমস্যাসহ হার্টের রোগী ফারজানা তসলিমা করোনা পরীক্ষার জন্য ৮ আগস্ট নমুনা দেন। পরদিন তাঁর করোনা পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ আসে। ১০ আগস্ট তিনি সদর হাসপাতালের মহিলা আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বেলা দুইটার দিকে মারা যান তিনি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিহতের লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয় এবং করোনা প্রটোকলে তাঁর মরদেহ দাফন করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এ নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন ১৮ জন।
গতকাল করোনা আক্রান্ত সন্দেহে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ১০২টি নমুনা সংগ্রহ করেছে। সদর উপজেলা থেকে ৫৮টি, দামুড়হুদা উপজেলা থেকে ৪০টি, জীবননগর উপজলো থেকে ৪টি নমুনাসহ সংগৃহীত ১০২টি নমুনা পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবের তথ্যে জানা যায়, গতকাল ল্যাবে চুয়াডাঙ্গার ফলোআপ নমুনাসহ ১০৮টি, মেহেরপুরের ৪১টি, ঝিনাইদহের ১২৪টি, কুষ্টিয়ার ৯১টি নমুনাসহ ৩৬৪টি নমুনা পরীক্ষা করে চুয়াডাঙ্গায় নতুন ৫১ জন, মেহেরপুরে ১৯ জন, ঝিনাইদহের ৪৭ জন, কুষ্টিয়ায় ১২ জনসহ মোট ১২৯ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলার ১২ জনের ফলোআপ রিপোর্ট পজিটিভ। এছাড়া বাকিগুলোর ফলাফল নেগেটিভ।
অন্য দিকে, গত সোমবার (১০ আগস্ট) করোনা উপসর্গ নিয়ে শামীম রেজা (২৪) ও হামিদা বেগম (৭০) নামের দুজনের মৃত্যু হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ইয়োলো জোনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সাড়ে ১০টায় শামীম রেজা ও পরে দুপুর ১২টার দিকে হামিদা বেগমের মৃত্যু হয়। ওই দিন শামীম রেজার শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। গতকাল মৃত শামীম রেজার ফলাফল নেগেটিভ আসে। একই দিনে মৃত হামিদা বেগমের নমুনা সংগ্রহ করে পরদিন ১১ আগস্ট পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া মেডিকেলে পাঠানো হয়।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী জেলা থেকে এ পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ ৪ হাজার ১১২টি, প্রাপ্ত ফলাফল ৪ হাজার ৮টি, পজিটিভ ৯৪২ জন, নেগেটিভ ২ হাজার ৯১৬ জন। জেলায় মোট সুস্থতার সংখ্যা ৪৫৬ জন ও মৃত্যু ১৮ জন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

করোনায় নারীর মৃত্যু, উপসর্গে মৃত দুজনের শরীরে ছিল ভাইরাস!

আপলোড টাইম : ০৯:২৫:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগাস্ট ২০২০

চুয়াডাঙ্গায় কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ৯ শ ছাড়াল, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫১ জন শনাক্ত

কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবে মেহেরপুরে ১৯, ঝিনাইদহে ৪৭ ও কুষ্টিয়ায় ১২ জনের রিপোর্ট পজিটিভ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৫১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় জেলা সিভিল সার্জন অফিস এ তথ্য নিশ্চিত করে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৯৪২ জনে। এদিকে, করোনা আক্রান্ত হয়ে গতকাল এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়াল ১৬ জনে।
জানা যায়, গত সোমবার করোনা আক্রান্ত সন্দেহে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ১ জন করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত ব্যক্তির নমুনাসহ ৮৪টি নমুনা সংগ্রহ করে। সংগৃহীত ৮৪টি নমুনা পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে প্রেরণ করা হয়। গতকাল উক্ত ৮৪টি নমুনার ফলাফল সিভিল সার্জন অফিসে এসে পৌঁছায়। এর মধ্যে ৫১ জনের নমুনার ফলাফল রিপোর্ট পজিটিভ ও ৩৩ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ। এর মধ্যে করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত ব্যক্তির নমুনার ফলাফল নেগেটিভ। গতকাল করোনা শনাক্ত ৫১ জনের বয়স ১৫ থেকে ৭৫ বছর পর্যন্ত। পুরুষ ৩৪ জন ও নারী ১৭ জন। ৮৪টি নমুনার মধ্যে ১০ আগস্ট ঝোড়াঘাটা গ্রামের সাহাদত হোসেন (৭৫) ও আলমডাঙ্গা উপজেলার মুন্সিগঞ্জ গ্রামের সাদরী আলম করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। ১১ আগস্ট তাঁদের মৃত্যু হয়। গতকাল সাহাদত হোসেন ও সাদরী আলম দুজনের নমুনার ফলাফল পজিটিভ এসেছে।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ফারজানা তসলিমা (৪২) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা দুইটার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত ফারজানা তসলিমা আলমডাঙ্গা উপজেলার থানাপাড়ার আব্দুল গণির স্ত্রী। গত শনিবার (৮ আগস্ট) করোনা পরীক্ষার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে নমুনা দেন ফারজানা তসলিমা। পরদিন রোববার (৯ আগস্ট) তাঁর নমুনার ফলাফল পজিটিভ আসে। সোমবার (১০ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে পরিবারের সদস্যরা ফারজানা তসলিমাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার বেলা দুইটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শামীম কবির বলেন, শ্বাসকষ্ট, ডায়াবেটিস, কিডনিজনিত সমস্যাসহ হার্টের রোগী ফারজানা তসলিমা করোনা পরীক্ষার জন্য ৮ আগস্ট নমুনা দেন। পরদিন তাঁর করোনা পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ আসে। ১০ আগস্ট তিনি সদর হাসপাতালের মহিলা আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বেলা দুইটার দিকে মারা যান তিনি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিহতের লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয় এবং করোনা প্রটোকলে তাঁর মরদেহ দাফন করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এ নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন ১৮ জন।
গতকাল করোনা আক্রান্ত সন্দেহে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ১০২টি নমুনা সংগ্রহ করেছে। সদর উপজেলা থেকে ৫৮টি, দামুড়হুদা উপজেলা থেকে ৪০টি, জীবননগর উপজলো থেকে ৪টি নমুনাসহ সংগৃহীত ১০২টি নমুনা পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবের তথ্যে জানা যায়, গতকাল ল্যাবে চুয়াডাঙ্গার ফলোআপ নমুনাসহ ১০৮টি, মেহেরপুরের ৪১টি, ঝিনাইদহের ১২৪টি, কুষ্টিয়ার ৯১টি নমুনাসহ ৩৬৪টি নমুনা পরীক্ষা করে চুয়াডাঙ্গায় নতুন ৫১ জন, মেহেরপুরে ১৯ জন, ঝিনাইদহের ৪৭ জন, কুষ্টিয়ায় ১২ জনসহ মোট ১২৯ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলার ১২ জনের ফলোআপ রিপোর্ট পজিটিভ। এছাড়া বাকিগুলোর ফলাফল নেগেটিভ।
অন্য দিকে, গত সোমবার (১০ আগস্ট) করোনা উপসর্গ নিয়ে শামীম রেজা (২৪) ও হামিদা বেগম (৭০) নামের দুজনের মৃত্যু হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ইয়োলো জোনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সাড়ে ১০টায় শামীম রেজা ও পরে দুপুর ১২টার দিকে হামিদা বেগমের মৃত্যু হয়। ওই দিন শামীম রেজার শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। গতকাল মৃত শামীম রেজার ফলাফল নেগেটিভ আসে। একই দিনে মৃত হামিদা বেগমের নমুনা সংগ্রহ করে পরদিন ১১ আগস্ট পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া মেডিকেলে পাঠানো হয়।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী জেলা থেকে এ পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ ৪ হাজার ১১২টি, প্রাপ্ত ফলাফল ৪ হাজার ৮টি, পজিটিভ ৯৪২ জন, নেগেটিভ ২ হাজার ৯১৬ জন। জেলায় মোট সুস্থতার সংখ্যা ৪৫৬ জন ও মৃত্যু ১৮ জন।