ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

করোনায় জোন বিভাজন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জুন ২০২০
  • / ১৬৬ বার পড়া হয়েছে

পরিবর্তন করতে হবে অনেক কিছুই
দুই মাসের লকডাউন শেষে প্রায় সবই খুলে দেওয়া হয়েছে। এখন আবার ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। এ পরিকল্পনায় সারা দেশকে লাল, সবুজ ও হলুদ জোনে ভাগ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। যেসব এলাকা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে হবে, সেখানে স্থানীয়ভাবে লকডাউন জারি করা হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার অনুযায়ী সারা দেশকে এ তিন ভাগে ভাগ করা হবে। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগোবে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মিলে এটা বাস্তবায়ন করবে। এখনো জোন করা হয়নি। করার পর সরকার তা জানাবে। এখন পর্যন্ত ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রাম সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত। এলাকাভিত্তিক লকডাউনের সিদ্ধান্তও জোনিংয়ের মাধ্যমেই নেওয়া হবে।
সরকার চেষ্টা করছে করোনা পরিস্থিতি সামলে রাখার। কিন্তু খোদ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতা, জনসচেতনতার অভাব, ত্রাণভরসা না থাকা এবং সামাজিক প্রগতিবিরোধী নানা শক্তির প্রকাশ্য ও গোপন তৎপরতায় সরকারের কর্মকাণ্ডে লেজেগোবরে অবস্থা তৈরি হয়েছে। লকডাউন কেন সেটাই জনগণকে ঠিকমতো বোঝানো সম্ভব হয়নি, তারা এটাকে বেড়ানোর অবকাশ হিসেবে নিয়েছে। মসজিদে নামাজ আদায়ের ব্যাপারে অনেক আগেই সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও বাংলাদেশ সরকার সে ব্যবস্থা নিয়েছে অনেক পরে, এর বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা বন্ধে ও মুসল্লিদের সচেতন করা যায়নি। ত্রাণ বিতরণে ঝামেলা ছিল বিস্তর; তবু সরকার অসহায় মানুষকে ত্রাণ দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এটা আরো সুষ্ঠুভাবে করা যেত। চিকিৎসা সেবায় বিস্তর সমন্বয়হীনতার ঘটনা ঘটেছে। সাধারণ রোগের চিকিৎসা মেলেনি। করোনায় কী করণীয় তা নির্ধারণ করতে অনেক সময় লেগেছে, এখনো ব্যবস্থা যথাযথ নয়। শুরুর দিকে বিদেশাগতদের ব্যাপারে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এমন অনেক ঝামেলা গত দুই মাসে দেখা গেছে। এখন সরকার যে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে, অর্থাৎ ঝুঁকি সাপেক্ষে বিভিন্ন জোন করা সেটা বাস্তব সমস্যার নিরিখে করলেই ফল পাওয়া যেতে পারে, অন্যথায় নয়। সারা দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে পাঁচ হাজারের বেশি পুলিশ। সংক্রমণে লাগাম টানতে পুলিশ সদস্যদের জীবনাচরণে আনা হয়েছে ব্যাপক পরিবর্তন। এটা ভালো দিক। এ রকম আরো কার্যকর ও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন পড়বে। শুধু জোনিং নয়, জনগণের আচরণে এবং রাষ্ট্রীয় নীতিতেও কার্যকর পরিবর্তন আনতে হবে। গতানুগতিক চালে রাষ্ট্র চালানোর দিন বোধ হয় শেষ। রাষ্ট্রকে সত্যিই জনমুখী হতে হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

করোনায় জোন বিভাজন

আপলোড টাইম : ০৯:২৫:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জুন ২০২০

পরিবর্তন করতে হবে অনেক কিছুই
দুই মাসের লকডাউন শেষে প্রায় সবই খুলে দেওয়া হয়েছে। এখন আবার ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। এ পরিকল্পনায় সারা দেশকে লাল, সবুজ ও হলুদ জোনে ভাগ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। যেসব এলাকা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে হবে, সেখানে স্থানীয়ভাবে লকডাউন জারি করা হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার অনুযায়ী সারা দেশকে এ তিন ভাগে ভাগ করা হবে। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগোবে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মিলে এটা বাস্তবায়ন করবে। এখনো জোন করা হয়নি। করার পর সরকার তা জানাবে। এখন পর্যন্ত ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রাম সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত। এলাকাভিত্তিক লকডাউনের সিদ্ধান্তও জোনিংয়ের মাধ্যমেই নেওয়া হবে।
সরকার চেষ্টা করছে করোনা পরিস্থিতি সামলে রাখার। কিন্তু খোদ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতা, জনসচেতনতার অভাব, ত্রাণভরসা না থাকা এবং সামাজিক প্রগতিবিরোধী নানা শক্তির প্রকাশ্য ও গোপন তৎপরতায় সরকারের কর্মকাণ্ডে লেজেগোবরে অবস্থা তৈরি হয়েছে। লকডাউন কেন সেটাই জনগণকে ঠিকমতো বোঝানো সম্ভব হয়নি, তারা এটাকে বেড়ানোর অবকাশ হিসেবে নিয়েছে। মসজিদে নামাজ আদায়ের ব্যাপারে অনেক আগেই সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও বাংলাদেশ সরকার সে ব্যবস্থা নিয়েছে অনেক পরে, এর বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা বন্ধে ও মুসল্লিদের সচেতন করা যায়নি। ত্রাণ বিতরণে ঝামেলা ছিল বিস্তর; তবু সরকার অসহায় মানুষকে ত্রাণ দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এটা আরো সুষ্ঠুভাবে করা যেত। চিকিৎসা সেবায় বিস্তর সমন্বয়হীনতার ঘটনা ঘটেছে। সাধারণ রোগের চিকিৎসা মেলেনি। করোনায় কী করণীয় তা নির্ধারণ করতে অনেক সময় লেগেছে, এখনো ব্যবস্থা যথাযথ নয়। শুরুর দিকে বিদেশাগতদের ব্যাপারে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এমন অনেক ঝামেলা গত দুই মাসে দেখা গেছে। এখন সরকার যে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে, অর্থাৎ ঝুঁকি সাপেক্ষে বিভিন্ন জোন করা সেটা বাস্তব সমস্যার নিরিখে করলেই ফল পাওয়া যেতে পারে, অন্যথায় নয়। সারা দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে পাঁচ হাজারের বেশি পুলিশ। সংক্রমণে লাগাম টানতে পুলিশ সদস্যদের জীবনাচরণে আনা হয়েছে ব্যাপক পরিবর্তন। এটা ভালো দিক। এ রকম আরো কার্যকর ও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন পড়বে। শুধু জোনিং নয়, জনগণের আচরণে এবং রাষ্ট্রীয় নীতিতেও কার্যকর পরিবর্তন আনতে হবে। গতানুগতিক চালে রাষ্ট্র চালানোর দিন বোধ হয় শেষ। রাষ্ট্রকে সত্যিই জনমুখী হতে হবে।