ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ ৩৯ জনের মৃত্যু!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১২:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ নভেম্বর ২০২০
  • / ১৪১ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় আরও চারজনের করোনা শনাক্ত : দেশে বেড়েছে নতুন রোগী
সমীকরণ প্রতিবেদন:
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ৫৭ দিনের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় এটাই সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যু। গত এক মাসে মৃত্যুর সংখ্যা ২৫ জন ছাড়ায়নি কখনোই। গতকাল মঙ্গলবারই মৃত্যু হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় অনেকে মনে করছেন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যখন-তখন শুরু হতে পারে। এর আগে সর্বশেষ ২১শে সেপ্টেম্বর এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া করোনায় মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে নতুন শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২ হাজার ২১২ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে। গত ৭০দিনের মধ্যে গত সোমবার প্রথম দুই হাজার ছাড়ায় শনাক্তের সংখ্যা। এর আগে সর্বশেষ সর্বোচ্চ রোগী শনাক্ত হয়েছিল ২ সেপ্টেম্বরে ২ হাজার ৫৮২ জন। গতকাল বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি ও ওয়েবসাইট থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশে এনিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মোট মারা গেলেন ৬ হাজার ২৫৪ জন। আর মোট শনাক্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৬৮৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন পরীক্ষাগারে ১৫ হাজার ৯৯০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন রোগীদের শনাক্ত করা হয়েছে। গত কয়েকমাস ধরে নতুন রোগী শনাক্তের হার ১১ শতাংশের ঘরে থাকলেও, এখন শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩.৮৩।
বাংলাদেশে প্রথম মার্চ মাসে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। মে, জুন, জুলাই মাস নাগাদ প্রতিদিন চার হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত আর ৩০-৪০ জনের মৃত্যুর ঘটনা দেখা যায়। তবে পরবর্তীতে তা কমে আসে। কিন্তু শীতের সময়ে করোনাভাইরাসের আরেক দফা সংক্রমণ দেখা দিতে পারে বলে বেশ কিছুদিন ধরে সতর্ক করে দিচ্ছেন স্বাস্থ্য খাতের বিশেষজ্ঞরা। গত বিশে সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, বাংলাদেশে শীতকালে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়বে। বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে কথা বলে যানা যাচ্ছে, ক্রমশই সেখানে রোগী সংখ্যা বাড়ছে। অনেক হাসপাতালেই রোগী ফেরত দেয়া হচ্ছে আসন সংকটের কারণে। সংকট তৈরি হয়েছে আইসিউ বিছানারও। সবাইকে মাস্ক পরার ক্ষেত্রে জোর দেয়া হচ্ছে সরকারি প্রশাসনের পক্ষ থেকে। শীতপ্রধান অনেক দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করায় পুনরায় লকডাউন ও কড়াকড়ি আরোপ করার ঘটনাও ঘটেছে। বাংলাদেশেও শীতল আবহাওয়া দেখার সঙ্গে সঙ্গে করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ হাজার ৭৪৯ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৫২ হাজার ৮৯৫ জন।
চুয়াডাঙ্গা:
চুয়াডাঙ্গায় নতুন করে আরও চারজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৪৯ জনে। গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টায় জেলা সিভিল সার্জন অফিস এ তথ্য নিশ্চিত করেন। আক্রান্তদের মধ্যে সদর উপজেলার দুজন ও আলমডাঙ্গা উপজেলার দুজন রয়েছে। চারজনই পুরুষ, তাঁদের বয়স ২২ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। গতকাল জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলা হোম আইসোলেশন থেকে তিনজন সুস্থ হয়েছেন। জেলায় এনিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৪৪৪ জন।
জানা যায়, গত সোমবার জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ করোনা আক্রান্ত সন্দেহে ২০টি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে প্রেরণ করে। গতকাল ২০টি নমুনার ফলাফল সিভিল সার্জন অফিসে এসে পৌঁছায়। এর মধ্যে ৪টি নমুনার ফলাফল পজিটিভ ও বাকী ১৬টি নমুনার ফলাফল নেগেটিভ আসে। গতকাল জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ করোনা আক্রান্ত সন্দেহে সদর উপজেলা থেকে ১৫টি, আলমডাঙ্গা থেকে ৬টি ও দামুড়হুদা থেকে ৫টি নমুনাসহ সংগৃহীত ২৬টি নমুনা পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে প্রেরণ করেছে।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিসের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী জেলা থেকে এ পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ ৬ হাজার ৬১০টি, প্রাপ্ত ফলাফল ৬ হাজার ৩৬৩টি, পজিটিভ ১ হাজার ৫৪৯টি, নেগেটিভ ৪ হাজার ৮৭০টি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জেলায় গতকাল হোম আইসোলেশনে ছিলেন ৪১জন ও প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে ছিলেন ১২জন। চুয়াডাঙ্গা জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৪১ জন, এর মধ্যে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে জেলার বাইরে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ ৩৯ জনের মৃত্যু!

আপলোড টাইম : ১০:১২:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ নভেম্বর ২০২০

চুয়াডাঙ্গায় আরও চারজনের করোনা শনাক্ত : দেশে বেড়েছে নতুন রোগী
সমীকরণ প্রতিবেদন:
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ৫৭ দিনের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় এটাই সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যু। গত এক মাসে মৃত্যুর সংখ্যা ২৫ জন ছাড়ায়নি কখনোই। গতকাল মঙ্গলবারই মৃত্যু হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় অনেকে মনে করছেন করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যখন-তখন শুরু হতে পারে। এর আগে সর্বশেষ ২১শে সেপ্টেম্বর এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া করোনায় মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে নতুন শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২ হাজার ২১২ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে। গত ৭০দিনের মধ্যে গত সোমবার প্রথম দুই হাজার ছাড়ায় শনাক্তের সংখ্যা। এর আগে সর্বশেষ সর্বোচ্চ রোগী শনাক্ত হয়েছিল ২ সেপ্টেম্বরে ২ হাজার ৫৮২ জন। গতকাল বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি ও ওয়েবসাইট থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশে এনিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মোট মারা গেলেন ৬ হাজার ২৫৪ জন। আর মোট শনাক্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৬৮৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন পরীক্ষাগারে ১৫ হাজার ৯৯০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে নতুন রোগীদের শনাক্ত করা হয়েছে। গত কয়েকমাস ধরে নতুন রোগী শনাক্তের হার ১১ শতাংশের ঘরে থাকলেও, এখন শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩.৮৩।
বাংলাদেশে প্রথম মার্চ মাসে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। মে, জুন, জুলাই মাস নাগাদ প্রতিদিন চার হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত আর ৩০-৪০ জনের মৃত্যুর ঘটনা দেখা যায়। তবে পরবর্তীতে তা কমে আসে। কিন্তু শীতের সময়ে করোনাভাইরাসের আরেক দফা সংক্রমণ দেখা দিতে পারে বলে বেশ কিছুদিন ধরে সতর্ক করে দিচ্ছেন স্বাস্থ্য খাতের বিশেষজ্ঞরা। গত বিশে সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, বাংলাদেশে শীতকালে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়বে। বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে কথা বলে যানা যাচ্ছে, ক্রমশই সেখানে রোগী সংখ্যা বাড়ছে। অনেক হাসপাতালেই রোগী ফেরত দেয়া হচ্ছে আসন সংকটের কারণে। সংকট তৈরি হয়েছে আইসিউ বিছানারও। সবাইকে মাস্ক পরার ক্ষেত্রে জোর দেয়া হচ্ছে সরকারি প্রশাসনের পক্ষ থেকে। শীতপ্রধান অনেক দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করায় পুনরায় লকডাউন ও কড়াকড়ি আরোপ করার ঘটনাও ঘটেছে। বাংলাদেশেও শীতল আবহাওয়া দেখার সঙ্গে সঙ্গে করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ হাজার ৭৪৯ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৫২ হাজার ৮৯৫ জন।
চুয়াডাঙ্গা:
চুয়াডাঙ্গায় নতুন করে আরও চারজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৪৯ জনে। গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টায় জেলা সিভিল সার্জন অফিস এ তথ্য নিশ্চিত করেন। আক্রান্তদের মধ্যে সদর উপজেলার দুজন ও আলমডাঙ্গা উপজেলার দুজন রয়েছে। চারজনই পুরুষ, তাঁদের বয়স ২২ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। গতকাল জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলা হোম আইসোলেশন থেকে তিনজন সুস্থ হয়েছেন। জেলায় এনিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৪৪৪ জন।
জানা যায়, গত সোমবার জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ করোনা আক্রান্ত সন্দেহে ২০টি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে প্রেরণ করে। গতকাল ২০টি নমুনার ফলাফল সিভিল সার্জন অফিসে এসে পৌঁছায়। এর মধ্যে ৪টি নমুনার ফলাফল পজিটিভ ও বাকী ১৬টি নমুনার ফলাফল নেগেটিভ আসে। গতকাল জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ করোনা আক্রান্ত সন্দেহে সদর উপজেলা থেকে ১৫টি, আলমডাঙ্গা থেকে ৬টি ও দামুড়হুদা থেকে ৫টি নমুনাসহ সংগৃহীত ২৬টি নমুনা পরীক্ষার জন্য কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে প্রেরণ করেছে।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিসের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী জেলা থেকে এ পর্যন্ত মোট নমুনা সংগ্রহ ৬ হাজার ৬১০টি, প্রাপ্ত ফলাফল ৬ হাজার ৩৬৩টি, পজিটিভ ১ হাজার ৫৪৯টি, নেগেটিভ ৪ হাজার ৮৭০টি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জেলায় গতকাল হোম আইসোলেশনে ছিলেন ৪১জন ও প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে ছিলেন ১২জন। চুয়াডাঙ্গা জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৪১ জন, এর মধ্যে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে জেলার বাইরে।