করোনার বিস্তার প্রতিরোধ: প্রয়োজন আরও কঠোর পদক্ষেপ
- আপলোড টাইম : ১২:১১:০১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ এপ্রিল ২০২০
- / ২০৪ বার পড়া হয়েছে
অদৃশ্য শত্রু করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বর্তমানে মানবসভ্যতা এক অভাবনীয় সংকটের মধ্যে পড়েছে। প্রতিদিন বিশ্বে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে এ ভাইরাস। দেশে দেশে চলছে লকডাউন, শাটডাউন, জনতার কারফিউ, কারফিউ ইত্যাদি। ইতিমধ্যে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী এ ভাইরাস। স্পষ্টতই দেশে করোনা সংক্রমণের প্রকোপ বাড়ছে। বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। তাই করোনার বিস্তার রোধে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের কোনো বিকল্প এ মুহূর্তে নেই। করোনা মোকাবেলায় ইতিমধ্যে বিভিন্ন সতর্কতামূলক পদক্ষেপ ও উদ্যোগের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ৩১ দফা নির্দেশনা প্রদান করেছেন। দেশবাসীর উচিত এসব নির্দেশনা অনুযায়ী প্রত্যেকের চলাচলের পরিধি সীমিত করা; নিজেকে ঘরে আবদ্ধ রাখা এবং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও নিয়ম-কানুন কঠোরভাবে পরিপালন করা। যে কোনো ধরনের রোগ থেকে মুক্ত থাকার অন্যতম উপায় হচ্ছে সচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ। করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে সেলফ কোয়ারেন্টিন, হোম কোয়ারেন্টিনের মাধ্যমে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা জরুরি। কারণ এর মধ্যেই নিহিত রয়েছে ব্যক্তি ও সমষ্টির মঙ্গল ও কল্যাণ। সবাইকে মনে রাখতে হবে, কোয়ারেন্টিন কোনো সাজা নয়; নিজের ও পরিবারের, সর্বোপরি দেশবাসীর কল্যাণে নিরাপত্তা ও সুরক্ষামূলক একটি মহৎ প্রচেষ্টা। আশঙ্কার বিষয় হল, আমাদের হাসপাতালগুলো সাধারণত জনাকীর্ণ থাকে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী প্রচলিত ব্যবস্থাপনায় এসব হাসপাতালে যাওয়া-আসা করলে অন্যদের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে। এদিকে দৃষ্টি দেয়া জরুরি। একইসঙ্গে কাঁচাবাজারের বিক্রয় ব্যবস্থাপনাও ঢেলে সাজানো দরকার বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। চীনে এ ভাইরাসটি ছড়িয়েছে এমন একটি বাজার থেকে, যেখানে বিভিন্ন ধরনের পশু, পাখি, মাছ একই স্থানে বিক্রি হতো। আমাদের দেশেও প্রায় প্রতিটি বাজারেই মাছ, মুরগি, গরু, ছাগল ইত্যাদি একসঙ্গে বিক্রি হয়। এখান থেকে বিভিন্ন ধরনের রোগ ছড়িয়ে পড়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এ অবস্থায় প্রচলিত বিক্রয় পদ্ধতি ও বাজার ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভাবা উচিত বলে মনে করি আমরা। করোনাভাইরাসের থাবায় বর্তমানে বিশ্বসভ্যতা এক চরম সংকটের মধ্যে পড়েছে এবং এ পরিস্থিতি থেকে মানবজাতির উত্তরণ ঘটবে কীভাবে, তা এক বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। করোনাসৃষ্ট পরিস্থিতিতে বিশ্ব অর্থনীতির পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থনীতিকেও কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে।