ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

কবুল হয় না যাদের দোয়া

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:০১:৩৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ অগাস্ট ২০২১
  • / ৪০ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম প্রতিবেদন:
কোনো বান্দা যদি আল্লাহর কাছে সাহায্য চায়, আল্লাহ তাআলা সঙ্গে সঙ্গে ওই বান্দার আহবানে সাড়া দেন। বান্দা আল্লাহর কাছে যত বেশি প্রার্থনা করেন, আল্লাহ তার চেয়েও বেশি ক্ষমা করেন। তবে দুই শ্রেণির বান্দার চাওয়া-পাওয়া আল্লাহ তাআলা তাওবাহ ছাড়া কবুল করবেন না। সাহায্য প্রার্থনাকারীর জন্য দোয়া কবুল না হওয়ায় দুইটি বাঁধা রয়েছে। সেই বাঁধা দুইটি কী?
হজরত জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, কোনো ব্যক্তি (আল্লাহর কাছে) কোনো কিছু প্রার্থনা করলে আল্লাহ তাআলা তাকে তা দান করেন। অথবা তদানুযায়ী তার থেকে কোনো অমঙ্গল প্রতিহত করেন। যতক্ষণ না সে কোনো পাপাচারে লিপ্ত হয় বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য দোয়া করে।’ (তিরমিজি)
এ হাদিসে বান্দার কাক্সিক্ষত চাওয়া পূরণের কথা এসেছে। যদি কারো চাওয়া পূর্ণ না হয় তবে তার থেকে তার অমঙ্গল বা অকল্যাণগুলো দূর করে দেয়া হয়। আর এ জন্য অবশ্যই মুমিন বান্দাকে ২টি কাজ থেকে বিরত থাকার বর্ণনাও এ হাদিসে তুলে ধরা হয়েছে। তাহলো-
১. পাপের কাজ না করা কিংবা পাপ কাজ করার ব্যাপারে সাহায্য প্রার্থনা না করা। ২. আত্মীয়তার সুসম্পর্ক নষ্ট না করা কিংবা আত্মীয়তার সম্পর্ক নষ্ট করতে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।
যেহেতু এ দুই কাজের কারণে বান্দার কোনো দোয়াই আল্লাহ তাআলার দরবারে কবুল হয় না। তাই উল্লেখিত কাজ দু’টি থেকে বিরত থেকে দুনিয়ার কল্যাণ ও পরকালের সফলতা লাভে প্রার্থনা করাই মুমিন মুসলমানের অন্যতম কাজ। যারা এই দুই কাজে জড়িত; তাদের জন্য তাওবাহ করে এ কাজ দুইটি থেকে ফিরে আসা জরুরি। আর তাতেই তাদের নেক চাওয়া-পাওয়াগুলো আল্লাহ তাআলা পূরণ করে দেবেন।
মনে রাখতে হবে
মানুষের যে কোনো চাওয়া-পাওয়া মহান আল্লাহ তাআলা নিজ অনুগ্রহে পরিপূর্ণ করেন। কুরআনুল কারিমে ঘোষণাও এমনই। আল্লাহ তাআলা বলেন- ’তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।’ দোয়া বা প্রার্থনাকারী যত বেশি আল্লাহর কাছে দোয়া করবে, ক্ষমা চাইবে, রহমত কামনা করবে, আল্লাহর গুণগাণ গাইবে, ওই বান্দার জন্য তত বেশি লাভ। কেননা আল্লাহ তাআলা বান্দার চাওয়ার চেয়েও বেশি দানকারী। তার দানের কোনো সীমা-সংখ্যা নেই। হাদিসের বর্ণনাও তা উঠে এসেছে- হজরত উবাদা ইবনুস সামিত রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে আরও উল্লেখ কর হয়েছে যে, উপস্থিত লোকদের একজন বলল, তাহলে আমরা খুব বেশি বেশি দোয়া করতে পারি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘আল্লাহ তাআলা তার চেয়েও বেশি বেশি কবুলকারী।’ (তিরমিজি) সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, মহান আল্লাহকে বেশি স্মরণ করা। পাপাচার থেকে বিরত থাকা। আত্মীয়তার সুসম্পর্ক নষ্ট না করা। অন্যায় বা গোনাহের আবদার নিয়ে আল্লাহর স্মরণাপন্ন না হওয়া। তবেই আল্লাহ তাআলা বান্দার সব চাওয়া পরিপূর্ণ করে দেবেন। যাবতীয় অমঙ্গল ও অকল্যাণ থেকে হেফাজত করবেন। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের উপর আমল করার মাধ্যমে দোয়া কবুলে ধরণা দেওয়ার তাওফিক দান করুন। দুনিয়া কামিয়াবি ও পরকালের সফলতা লাভে তাঁরই দেখানো পদ্ধতিতে জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

কবুল হয় না যাদের দোয়া

আপলোড টাইম : ০৮:০১:৩৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ অগাস্ট ২০২১

ধর্ম প্রতিবেদন:
কোনো বান্দা যদি আল্লাহর কাছে সাহায্য চায়, আল্লাহ তাআলা সঙ্গে সঙ্গে ওই বান্দার আহবানে সাড়া দেন। বান্দা আল্লাহর কাছে যত বেশি প্রার্থনা করেন, আল্লাহ তার চেয়েও বেশি ক্ষমা করেন। তবে দুই শ্রেণির বান্দার চাওয়া-পাওয়া আল্লাহ তাআলা তাওবাহ ছাড়া কবুল করবেন না। সাহায্য প্রার্থনাকারীর জন্য দোয়া কবুল না হওয়ায় দুইটি বাঁধা রয়েছে। সেই বাঁধা দুইটি কী?
হজরত জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, কোনো ব্যক্তি (আল্লাহর কাছে) কোনো কিছু প্রার্থনা করলে আল্লাহ তাআলা তাকে তা দান করেন। অথবা তদানুযায়ী তার থেকে কোনো অমঙ্গল প্রতিহত করেন। যতক্ষণ না সে কোনো পাপাচারে লিপ্ত হয় বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য দোয়া করে।’ (তিরমিজি)
এ হাদিসে বান্দার কাক্সিক্ষত চাওয়া পূরণের কথা এসেছে। যদি কারো চাওয়া পূর্ণ না হয় তবে তার থেকে তার অমঙ্গল বা অকল্যাণগুলো দূর করে দেয়া হয়। আর এ জন্য অবশ্যই মুমিন বান্দাকে ২টি কাজ থেকে বিরত থাকার বর্ণনাও এ হাদিসে তুলে ধরা হয়েছে। তাহলো-
১. পাপের কাজ না করা কিংবা পাপ কাজ করার ব্যাপারে সাহায্য প্রার্থনা না করা। ২. আত্মীয়তার সুসম্পর্ক নষ্ট না করা কিংবা আত্মীয়তার সম্পর্ক নষ্ট করতে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।
যেহেতু এ দুই কাজের কারণে বান্দার কোনো দোয়াই আল্লাহ তাআলার দরবারে কবুল হয় না। তাই উল্লেখিত কাজ দু’টি থেকে বিরত থেকে দুনিয়ার কল্যাণ ও পরকালের সফলতা লাভে প্রার্থনা করাই মুমিন মুসলমানের অন্যতম কাজ। যারা এই দুই কাজে জড়িত; তাদের জন্য তাওবাহ করে এ কাজ দুইটি থেকে ফিরে আসা জরুরি। আর তাতেই তাদের নেক চাওয়া-পাওয়াগুলো আল্লাহ তাআলা পূরণ করে দেবেন।
মনে রাখতে হবে
মানুষের যে কোনো চাওয়া-পাওয়া মহান আল্লাহ তাআলা নিজ অনুগ্রহে পরিপূর্ণ করেন। কুরআনুল কারিমে ঘোষণাও এমনই। আল্লাহ তাআলা বলেন- ’তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।’ দোয়া বা প্রার্থনাকারী যত বেশি আল্লাহর কাছে দোয়া করবে, ক্ষমা চাইবে, রহমত কামনা করবে, আল্লাহর গুণগাণ গাইবে, ওই বান্দার জন্য তত বেশি লাভ। কেননা আল্লাহ তাআলা বান্দার চাওয়ার চেয়েও বেশি দানকারী। তার দানের কোনো সীমা-সংখ্যা নেই। হাদিসের বর্ণনাও তা উঠে এসেছে- হজরত উবাদা ইবনুস সামিত রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে আরও উল্লেখ কর হয়েছে যে, উপস্থিত লোকদের একজন বলল, তাহলে আমরা খুব বেশি বেশি দোয়া করতে পারি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘আল্লাহ তাআলা তার চেয়েও বেশি বেশি কবুলকারী।’ (তিরমিজি) সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, মহান আল্লাহকে বেশি স্মরণ করা। পাপাচার থেকে বিরত থাকা। আত্মীয়তার সুসম্পর্ক নষ্ট না করা। অন্যায় বা গোনাহের আবদার নিয়ে আল্লাহর স্মরণাপন্ন না হওয়া। তবেই আল্লাহ তাআলা বান্দার সব চাওয়া পরিপূর্ণ করে দেবেন। যাবতীয় অমঙ্গল ও অকল্যাণ থেকে হেফাজত করবেন। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের উপর আমল করার মাধ্যমে দোয়া কবুলে ধরণা দেওয়ার তাওফিক দান করুন। দুনিয়া কামিয়াবি ও পরকালের সফলতা লাভে তাঁরই দেখানো পদ্ধতিতে জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।