ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

কবরস্থান সংস্কারের ৪০ হাজার টাকা আত্মসাৎ!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:০২:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ জুলাই ২০১৯
  • / ২২৯ বার পড়া হয়েছে

আলমডাঙ্গা জেহালা ইউনিয়নের ওয়ার্ড মেম্বার আনারুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ
মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি:
আলমডাঙ্গার জেহালা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনারুলের বিরুদ্ধে একই ইউনিয়নের ছোট পুটিমারী কবরস্থান সংস্কারের ৪০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কবরস্থান সংস্কারের জন্য উপজেলা পরিষদের বরাদ্দ দেওয়া টিআর প্রকল্পের পুরো ৪০ হাজার টাকা আত্মসাতের খবর ফাঁস হয়ে গেলে সাধারণ গ্রামবাসীর রোষানলে পড়ে আনারুল মেম্বার। এ নিয়ে গত সোমবার রাতে গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা একটি সালিসি সভার আয়োজন করলেও আনারুল মেম্বার সালিসে উপস্থিত হননি।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহালা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনারুল ইসলাম ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছোট পুটিমারী কবরস্থান সংস্কারের জন্য আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ থেকে ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ পান। ওই বরাদ্দের পুরো টাকা ২০১৮ সালের জুন মাসে উত্তোলন করে নেন আনারুল মেম্বার। কিন্তু টাকা উত্তোলনের এক বছর পার হয়ে গেলেও গ্রামের কবরস্থান সংস্কারে একটি টাকাও ব্যয় করেননি তিনি। পরে টিআর প্রকল্পের ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দের বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে সাধারণ গ্রামবাসীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এমনকি গ্রামের চায়ের দোকান থেকে সর্বত্র দিনভর মেম্বারকে নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলে। এ ছাড়া সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে ছোট পুটিমারী গ্রামের মোড়ে আয়োজিত সালিসে আনারুল মেম্বার উপস্থিত না হলে পক্ষে-বিপক্ষে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সাধারণ গ্রামবাসী মেম্বারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
এ বিষয়ে ছোট পুটিমারী গ্রামের কবরস্থানের পরিচালনা কমিটির সদস্য সালাম ম-ল জানান, ‘আমাদের গ্রামের কবরস্থানে টুকিটাকি কিছু কাজ আছে। আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ যে ৪০ হাজার টাকা বাজেট দিয়েছিল, সে টাকা কাজে লাগালে কবরস্থান সংস্কারের কোনো কাজ বাদ থাকতো না। কবরস্থানটি সুন্দর হয়ে যেত। কিন্তু আনারুল মেম্বার সে টাকা আত্মসাৎ করে গ্রামবাসীর মনে কষ্ট দিলেন। কবরস্থানের বাজেটের ৪০ হাজার টাকার বিষয়ে গ্রামবাসী আনারুল মেম্বারকে চাপ দিলে আনারুল স্বীকার করেন যে তিনি টাকা পেয়েছে। তবে আনারুল মেম্বার আমাদের জানান, তিনি ৪০ হাজার টাকার মধ্যে ১৭ হাজার টাকা পেয়েছেন, বাকি টাকাটা অফিসের বিভিন্ন কর্মকর্তারা খেয়ে ফেলেছেন।’ এ ঘটনার পর সাধারণ গ্রামবাসী একটি সালিস সভার আয়োজন করলে আনারুল মেম্বার সেখানে উপস্থিত হননি বলেও জানান সালাম ম-ল।
ছোট পুটিমারী গ্রামের আসাবুল ব্যাপারী নামের একজন গ্রামবাসী জানান, ‘৪০ হাজার টাকা আত্মসাতের বিষয়টি আনারুল মেম্বার স্বীকার করে আমাদের জানিয়েছে, উপজেলা পরিষদে প্রকল্প বাবদ ৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বাকি টাকাটা তাঁর কাছে আছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, ‘৪০ হাজার টাকা আত্মসাতের বিষয়টি আনারুল মেম্বার অনেকের কাছে স্বীকার করেছেন। এখন আমরা কবরস্থান উন্নয়নের স্বার্থে সে টাকা চাইলে আমাদের তিনি বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। এমনকি মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার ভয়ও দেখাচ্ছেন।’
অভিযুক্ত আনারুল মেম্বারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে বলেন, ‘ছোট পুটিমারী গ্রামের কবরস্থানের নামে ৪০ হাজার টাকা বাজেট হয়েছে। কিন্তু টিআর প্রকল্পের এ ৪০ হাজার টাকা তুলতে অফিসে অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে। আর বাকি টাকা দিয়ে কবরস্থান সংস্কারের কাজ করছি। সব খরচ লেখা আছে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

কবরস্থান সংস্কারের ৪০ হাজার টাকা আত্মসাৎ!

আপলোড টাইম : ১১:০২:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ জুলাই ২০১৯

আলমডাঙ্গা জেহালা ইউনিয়নের ওয়ার্ড মেম্বার আনারুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ
মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি:
আলমডাঙ্গার জেহালা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনারুলের বিরুদ্ধে একই ইউনিয়নের ছোট পুটিমারী কবরস্থান সংস্কারের ৪০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কবরস্থান সংস্কারের জন্য উপজেলা পরিষদের বরাদ্দ দেওয়া টিআর প্রকল্পের পুরো ৪০ হাজার টাকা আত্মসাতের খবর ফাঁস হয়ে গেলে সাধারণ গ্রামবাসীর রোষানলে পড়ে আনারুল মেম্বার। এ নিয়ে গত সোমবার রাতে গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা একটি সালিসি সভার আয়োজন করলেও আনারুল মেম্বার সালিসে উপস্থিত হননি।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার জেহালা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনারুল ইসলাম ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছোট পুটিমারী কবরস্থান সংস্কারের জন্য আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ থেকে ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ পান। ওই বরাদ্দের পুরো টাকা ২০১৮ সালের জুন মাসে উত্তোলন করে নেন আনারুল মেম্বার। কিন্তু টাকা উত্তোলনের এক বছর পার হয়ে গেলেও গ্রামের কবরস্থান সংস্কারে একটি টাকাও ব্যয় করেননি তিনি। পরে টিআর প্রকল্পের ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দের বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে সাধারণ গ্রামবাসীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এমনকি গ্রামের চায়ের দোকান থেকে সর্বত্র দিনভর মেম্বারকে নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলে। এ ছাড়া সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে ছোট পুটিমারী গ্রামের মোড়ে আয়োজিত সালিসে আনারুল মেম্বার উপস্থিত না হলে পক্ষে-বিপক্ষে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সাধারণ গ্রামবাসী মেম্বারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
এ বিষয়ে ছোট পুটিমারী গ্রামের কবরস্থানের পরিচালনা কমিটির সদস্য সালাম ম-ল জানান, ‘আমাদের গ্রামের কবরস্থানে টুকিটাকি কিছু কাজ আছে। আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ যে ৪০ হাজার টাকা বাজেট দিয়েছিল, সে টাকা কাজে লাগালে কবরস্থান সংস্কারের কোনো কাজ বাদ থাকতো না। কবরস্থানটি সুন্দর হয়ে যেত। কিন্তু আনারুল মেম্বার সে টাকা আত্মসাৎ করে গ্রামবাসীর মনে কষ্ট দিলেন। কবরস্থানের বাজেটের ৪০ হাজার টাকার বিষয়ে গ্রামবাসী আনারুল মেম্বারকে চাপ দিলে আনারুল স্বীকার করেন যে তিনি টাকা পেয়েছে। তবে আনারুল মেম্বার আমাদের জানান, তিনি ৪০ হাজার টাকার মধ্যে ১৭ হাজার টাকা পেয়েছেন, বাকি টাকাটা অফিসের বিভিন্ন কর্মকর্তারা খেয়ে ফেলেছেন।’ এ ঘটনার পর সাধারণ গ্রামবাসী একটি সালিস সভার আয়োজন করলে আনারুল মেম্বার সেখানে উপস্থিত হননি বলেও জানান সালাম ম-ল।
ছোট পুটিমারী গ্রামের আসাবুল ব্যাপারী নামের একজন গ্রামবাসী জানান, ‘৪০ হাজার টাকা আত্মসাতের বিষয়টি আনারুল মেম্বার স্বীকার করে আমাদের জানিয়েছে, উপজেলা পরিষদে প্রকল্প বাবদ ৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বাকি টাকাটা তাঁর কাছে আছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, ‘৪০ হাজার টাকা আত্মসাতের বিষয়টি আনারুল মেম্বার অনেকের কাছে স্বীকার করেছেন। এখন আমরা কবরস্থান উন্নয়নের স্বার্থে সে টাকা চাইলে আমাদের তিনি বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। এমনকি মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার ভয়ও দেখাচ্ছেন।’
অভিযুক্ত আনারুল মেম্বারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে বলেন, ‘ছোট পুটিমারী গ্রামের কবরস্থানের নামে ৪০ হাজার টাকা বাজেট হয়েছে। কিন্তু টিআর প্রকল্পের এ ৪০ হাজার টাকা তুলতে অফিসে অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে। আর বাকি টাকা দিয়ে কবরস্থান সংস্কারের কাজ করছি। সব খরচ লেখা আছে।’