ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

এসএসসি’র প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানোই যাচ্ছে না : অসহায় মন্ত্রণালয়

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:০৯:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
  • / ৮১২ বার পড়া হয়েছে

বাংলা দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নও ফাঁস : ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে তৎপর অসাধু চক্র
ডেস্ক রিপোর্ট: আবারও প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটল। গতকাল শনিবার পর্যন্ত মাধ্যমিক ও সমমানের দুটি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুটি পরীক্ষাতেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের সুস্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে। এসএসসি পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনে গতকাল ফাঁস হওয়া প্রশ্ন দিয়েই বাংলা দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীরা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবার পরীক্ষার শুরুতে প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে বহু তর্জন-গর্জন করলেও আদতে কিছুই করতে পারেনি। প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতেই পারছে না তারা।
দেখা গেছে, গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার মতোই এবারও এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ফেসবুকে’ ছড়ানো হচ্ছে। আগের দিন রীতিমতো ঘোষণা ও বিজ্ঞাপন দিয়ে ফেসবুকের অন্তত পাঁচটি গ্রুপ থেকে মেসেঞ্জারে প্রশ্নপত্র ছড়ানো হচ্ছে। পরীক্ষার শেষে ছড়ানো ওই প্রশ্নপত্রের সঙ্গে মূল প্রশ্নের মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। বাংলা প্রথমপত্রের পর দ্বিতীয়পত্রের প্রশ্নও গতকাল পরীক্ষা শুরুর দেড় ঘণ্টা আগেই ফাঁস হয়ে ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। এরপরই চলমান এসএসসি পরীক্ষার সব বিষয়ের প্রশ্ন ফাঁসের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে বরাবরের মতো এবারও প্রশ্ন ফাঁসের সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ।


প্রশ্ন ফাঁসের কোনো খবর তাদের কাছে নেই বলে মন্তব্য করেছেন সব শিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ে গঠিত ‘আন্তঃশিক্ষা বোর্ড’ ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার। গতকাল সন্ধ্যায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর তিনি বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়ায় শুনেছেন। কিন্তু প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার কোনো প্রামাণ্য খবর তার কাছে নেই। তার পরও বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। তবে পরীক্ষা বাতিলের কোনো কারণ তিনি দেখছেন না।
যেভাবে প্রশ্ন ফাঁস : গতকাল বাংলা দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা শুরুর পৌনে এক ঘণ্টা আগেই প্রশ্নপত্র সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ফাঁস হওয়া সেই প্রশ্ন মিলে যাওয়ার পর কর্মকর্তারা বরাবরের মতোই বললেন, বিষয়টি তারা দেখবেন। গত বৃহস্পতিবার বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর থেকেই ১০০ ভাগ মেলার নিশ্চয়তা দিয়ে দ্বিতীয়পত্রের প্রশ্ন ফাঁস করার বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছিল ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে। গতকাল সকাল ১০টা থেকে বাংলা দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা শুরুর আগেই সকাল সোয়া ৯টার মধ্যেই উত্তরসহ ‘খ’ সেট বহুনির্বাচনী প্রশ্ন এসব গ্রুপে ফাঁস করা হলে তা ভাইরাল হয়ে যায়।
এছাড়া ফেসবুক মেসেঞ্জারে সকাল ৯টা ১৬ মিনিটে ‘হিমুর ছায়া’ নামের একটি আইডি থেকেও উত্তরসহ ‘খ’ সেটের প্রশ্ন ইমেজ বা ছবি আকারে পাঠানো হয়। পরীক্ষা শেষে দেখা যায়, বহুনির্বাচনী প্রশ্নের সঙ্গে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন হুবহু মিলে গেছে।
গত বৃহস্পতিবার থেকে সারাদেশে একযোগে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ২০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এসএসসিতে এবার অভিন্ন প্রশ্নপত্রে হচ্ছে সব বোর্ডের পরীক্ষা। প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানো নিয়ে সরকার আন্তরিক বলে বক্তব্য দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা খুবই ডেসপারেট, খুবই অ্যাগ্রেসিভ এ (প্রশ্ন ফাঁস) বিষয়ে। যদি কোথাও কেউ কোনোভাবে প্রশ্ন ফাঁসের চেষ্টা করেন, তিনি কোনোভাবেই রেহাই পাবেন না। কী হবে, আমিও সেটা ধারণা করতে পারি না। চরম একটা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অসহায় মন্ত্রণালয় : একের পর প্রশ্ন ফাঁসের কবলে পড়ে রীতিমতো অসহায় বোধ করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, তারা টানা দুই মাস প্রশ্নের নিরাপত্তা দিতে পেরেছেন। পরীক্ষার দিন সকালে তা ফাঁস হচ্ছে। সবাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করছেন। তবে এটা ঠেকাতে বিটিআরসি ও পুলিশের দায় নিয়ে কিছুই কেউ বলছেন না।
শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, এখন আর বোর্ড বা বিজি প্রেস থেকে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে না। সকাল ৯টার পর প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার মানে হলো পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে যুক্ত। সেটি ফেসবুকে ভাইরাল করে দেওয়ার ঘটনায় কর্মকর্তারাও আতঙ্কে। তারা বলছেন, এটি বোর্ডের পক্ষে রোধ করা সম্ভব নয়। এজন্য বিটিআরসি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর স্বতঃম্ফূর্ততা দরকার।
অবশ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা শিক্ষা বোর্ডগুলোর পক্ষ থেকেও বিটিআরসি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হয় না বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে গতকালের প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি বিটিআরসি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে মেইল করে জানানো হয়েছে বলে সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন। তিনি বলেন, ‘যেসব ফেসবুক পেজ থেকে প্রশ্ন ফাঁসের খবরটি ভাইরাল হয়েছে, তা মেইল করে দুটি সংস্থাকে জানানো হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পাঠানোর সঙ্গে সারাদেশের দশ হাজার শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী যুক্ত। একেক কেন্দ্রে একেকভাবে প্রশ্নপত্র পাঠানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে স্পিডবোট, এমনকি রিকশাও। এ ছাড়া কোনো কোনো কেন্দ্রে হেঁটেও প্রশ্ন পৌঁছে দেওয়া হয়। থানা বা ট্রেজারি থেকে কেন্দ্রে পৌঁছানোর আগে তিনজন সরাসরি এর দায়িত্বে থাকেন। এখন কাকে সন্দেহ করব? এই ১০ হাজার মানুষের মধ্যে ৯ হাজার ৯৯৯ জনও যদি সৎ হন, আর মাত্র একজন যদি অসৎ হন, তাহলে সেই একজনই বাকি সবার সততাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে আমরা কী করতে পারি?’
এর আগে শিক্ষামন্ত্রী ও সচিব দু’জনই সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ আসামাত্রই পরীক্ষা বাতিল করা হবে। প্রশ্ন ফাঁসের পর এ বিষয়ে মন্ত্রী বা সচিব কেউই মুখ খুলতে চাইছেন না। গতকাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত পরীক্ষা দুটি বাতিল করা হবে কি-না জানতে চাইলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার বোর্ড সচিবকে বিষয়টি জিজ্ঞাসা করার অনুরোধ করেন। সচিব শাহেদুল কবির চৌধুরী এখন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানেরও দায়িত্বে। একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

এসএসসি’র প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানোই যাচ্ছে না : অসহায় মন্ত্রণালয়

আপলোড টাইম : ১২:০৯:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৮

বাংলা দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নও ফাঁস : ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে তৎপর অসাধু চক্র
ডেস্ক রিপোর্ট: আবারও প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটল। গতকাল শনিবার পর্যন্ত মাধ্যমিক ও সমমানের দুটি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুটি পরীক্ষাতেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের সুস্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে। এসএসসি পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনে গতকাল ফাঁস হওয়া প্রশ্ন দিয়েই বাংলা দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীরা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবার পরীক্ষার শুরুতে প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতে বহু তর্জন-গর্জন করলেও আদতে কিছুই করতে পারেনি। প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকাতেই পারছে না তারা।
দেখা গেছে, গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার মতোই এবারও এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ফেসবুকে’ ছড়ানো হচ্ছে। আগের দিন রীতিমতো ঘোষণা ও বিজ্ঞাপন দিয়ে ফেসবুকের অন্তত পাঁচটি গ্রুপ থেকে মেসেঞ্জারে প্রশ্নপত্র ছড়ানো হচ্ছে। পরীক্ষার শেষে ছড়ানো ওই প্রশ্নপত্রের সঙ্গে মূল প্রশ্নের মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। বাংলা প্রথমপত্রের পর দ্বিতীয়পত্রের প্রশ্নও গতকাল পরীক্ষা শুরুর দেড় ঘণ্টা আগেই ফাঁস হয়ে ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। এরপরই চলমান এসএসসি পরীক্ষার সব বিষয়ের প্রশ্ন ফাঁসের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে বরাবরের মতো এবারও প্রশ্ন ফাঁসের সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ।


প্রশ্ন ফাঁসের কোনো খবর তাদের কাছে নেই বলে মন্তব্য করেছেন সব শিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ে গঠিত ‘আন্তঃশিক্ষা বোর্ড’ ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার। গতকাল সন্ধ্যায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবর তিনি বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়ায় শুনেছেন। কিন্তু প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার কোনো প্রামাণ্য খবর তার কাছে নেই। তার পরও বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। তবে পরীক্ষা বাতিলের কোনো কারণ তিনি দেখছেন না।
যেভাবে প্রশ্ন ফাঁস : গতকাল বাংলা দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা শুরুর পৌনে এক ঘণ্টা আগেই প্রশ্নপত্র সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ফাঁস হওয়া সেই প্রশ্ন মিলে যাওয়ার পর কর্মকর্তারা বরাবরের মতোই বললেন, বিষয়টি তারা দেখবেন। গত বৃহস্পতিবার বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর থেকেই ১০০ ভাগ মেলার নিশ্চয়তা দিয়ে দ্বিতীয়পত্রের প্রশ্ন ফাঁস করার বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছিল ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে। গতকাল সকাল ১০টা থেকে বাংলা দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা শুরুর আগেই সকাল সোয়া ৯টার মধ্যেই উত্তরসহ ‘খ’ সেট বহুনির্বাচনী প্রশ্ন এসব গ্রুপে ফাঁস করা হলে তা ভাইরাল হয়ে যায়।
এছাড়া ফেসবুক মেসেঞ্জারে সকাল ৯টা ১৬ মিনিটে ‘হিমুর ছায়া’ নামের একটি আইডি থেকেও উত্তরসহ ‘খ’ সেটের প্রশ্ন ইমেজ বা ছবি আকারে পাঠানো হয়। পরীক্ষা শেষে দেখা যায়, বহুনির্বাচনী প্রশ্নের সঙ্গে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন হুবহু মিলে গেছে।
গত বৃহস্পতিবার থেকে সারাদেশে একযোগে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ২০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এসএসসিতে এবার অভিন্ন প্রশ্নপত্রে হচ্ছে সব বোর্ডের পরীক্ষা। প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানো নিয়ে সরকার আন্তরিক বলে বক্তব্য দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা খুবই ডেসপারেট, খুবই অ্যাগ্রেসিভ এ (প্রশ্ন ফাঁস) বিষয়ে। যদি কোথাও কেউ কোনোভাবে প্রশ্ন ফাঁসের চেষ্টা করেন, তিনি কোনোভাবেই রেহাই পাবেন না। কী হবে, আমিও সেটা ধারণা করতে পারি না। চরম একটা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অসহায় মন্ত্রণালয় : একের পর প্রশ্ন ফাঁসের কবলে পড়ে রীতিমতো অসহায় বোধ করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, তারা টানা দুই মাস প্রশ্নের নিরাপত্তা দিতে পেরেছেন। পরীক্ষার দিন সকালে তা ফাঁস হচ্ছে। সবাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করছেন। তবে এটা ঠেকাতে বিটিআরসি ও পুলিশের দায় নিয়ে কিছুই কেউ বলছেন না।
শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, এখন আর বোর্ড বা বিজি প্রেস থেকে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে না। সকাল ৯টার পর প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার মানে হলো পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে যুক্ত। সেটি ফেসবুকে ভাইরাল করে দেওয়ার ঘটনায় কর্মকর্তারাও আতঙ্কে। তারা বলছেন, এটি বোর্ডের পক্ষে রোধ করা সম্ভব নয়। এজন্য বিটিআরসি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর স্বতঃম্ফূর্ততা দরকার।
অবশ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা শিক্ষা বোর্ডগুলোর পক্ষ থেকেও বিটিআরসি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হয় না বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে গতকালের প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি বিটিআরসি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে মেইল করে জানানো হয়েছে বলে সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন। তিনি বলেন, ‘যেসব ফেসবুক পেজ থেকে প্রশ্ন ফাঁসের খবরটি ভাইরাল হয়েছে, তা মেইল করে দুটি সংস্থাকে জানানো হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পাঠানোর সঙ্গে সারাদেশের দশ হাজার শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী যুক্ত। একেক কেন্দ্রে একেকভাবে প্রশ্নপত্র পাঠানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে স্পিডবোট, এমনকি রিকশাও। এ ছাড়া কোনো কোনো কেন্দ্রে হেঁটেও প্রশ্ন পৌঁছে দেওয়া হয়। থানা বা ট্রেজারি থেকে কেন্দ্রে পৌঁছানোর আগে তিনজন সরাসরি এর দায়িত্বে থাকেন। এখন কাকে সন্দেহ করব? এই ১০ হাজার মানুষের মধ্যে ৯ হাজার ৯৯৯ জনও যদি সৎ হন, আর মাত্র একজন যদি অসৎ হন, তাহলে সেই একজনই বাকি সবার সততাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে আমরা কী করতে পারি?’
এর আগে শিক্ষামন্ত্রী ও সচিব দু’জনই সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ আসামাত্রই পরীক্ষা বাতিল করা হবে। প্রশ্ন ফাঁসের পর এ বিষয়ে মন্ত্রী বা সচিব কেউই মুখ খুলতে চাইছেন না। গতকাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত পরীক্ষা দুটি বাতিল করা হবে কি-না জানতে চাইলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার বোর্ড সচিবকে বিষয়টি জিজ্ঞাসা করার অনুরোধ করেন। সচিব শাহেদুল কবির চৌধুরী এখন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানেরও দায়িত্বে। একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।