ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

এলোপাতাড়ি কোপে যুবলীগ কর্মী ভুট্টুর অবস্থা আশংঙ্কাজনক : রেফার

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৬:২১:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ জানুয়ারী ২০১৮
  • / ৪০১ বার পড়া হয়েছে

দামুড়হুদায় আবারও যুবলীগের তালেব-ইউসুফ গ্রুপের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা
নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা সদরের বাসষ্ট্যান্ডে মাসুদ রানা ভুট্টু নামে এক যুবলীগ কর্মীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করেছে ছাত্রলীগের কর্মীরা। যুবলীগ কর্মী ভুট্টুর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী নেওয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর শান্ত দামুড়হুদা আবারও অশান্ত হয়ে উঠতে পারে বলে সাধারণ মানুষ ধারণা করছে। এ ঘটনার পর থেকে দামুড়হুদায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মারাত্মকভাবে আহত ভুট্টুর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও বিষ্ফোরকসহ ৪টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আকরাম হোসেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রত্যক্ষদর্শী একজন জানান, গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে আছরের আযানের পর দামুড়হুদা দশমীপাড়ার আফজাল হোসেনের ছেলে যুবলীগ কর্মী মাসুদ রানা ভুট্টু (৩৫) তার মোটরসাইকেলে আরও ২জন আরোহী নিয়ে দামুড়হুদা বাসষ্ট্যান্ডে ফজু’র চা দোকানে চা খেতে আসে। ভুট্টু চা খাওয়া শেষ করে ওই দোকান থেকে একটা সিগারেট নিয়ে ধরিয়ে টানতে টানতে দোকানের পিছনের দিকে যায়। ভুট্টু পিছনে যাওয়ার সাথে সাথে সেখানে আগে থেকে ওৎপেতে থাকা ৪/৫ জন যুবক তাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। তখন ওই অবস্থায় ভুট্টু চিৎকার করতে করতে কোন মতে দোকানের সামনে এসে মোটরসাইকেলযোগে এলাকা ত্যাগ করে। এরপর পরই ৪/৫ জন যুবক মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায়।


এছাড়া প্রত্যক্ষদর্শী অনেকে জানায়, উপজেলা যুবলীগের ইউসুফ গ্রুপ ও আবু তালেব গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এর সূত্র ধরে বিকালে ইউসুফ পক্ষের সমর্থক মাসুদ রানা দোকানে চা খাওয়ার সময় অপরপক্ষের আবু তালেবের ছেলে বাঁধনসহ বেশকিছু যুবক পেছন থেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, আছরের নামাজ শেষ মুহুর্তে সারা শরীরে রক্ত নিয়ে বাঁচাও বাঁচাও করতে করতে ভুট্টু থানা চত্বরে প্রবেশ করে। ওই অবস্থায় সে থানার সিড়ির সামনে পড়ে যায়। পুলিশরা তাকে উঠিয়ে দ্রুত গাড়ি ডেকে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। ওই সময় থানার মসজিদ থেকে আছরের নামাজ পড়ে বের হওয়া অনেকেই শুনতে পান ভুট্ট থানা পুলিশকে বলছে শাহিন আর শরিফুল আমাকে চুয়াডাঙ্গার ছেলে পিলে দিয়ে মার খাওয়াল।
এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শামীম আরা জানান, জখম যুবলীগ কর্মীর মাথা, পিঠ ও হাতে অন্তত ৫০টি সেলাই দেয়া হয়েছে। তার ডান হাতটি কেটে ফেলা হতে পারে। তার অবস্থা কিছুটা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে রাজশাহী রেফার করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যুবলীগ কর্মী মাসুদ রানা ভুট্টু সাংবাদিকদের জানান, যুবলীগ নেতা দামুড়হুদা খাঁ’পাড়ার এড. আবু তালেবের ছেলে বাধনসহ ৪/৫ জন যুবক তাকে ধারাল অস্ত্রদিয়ে কুপিয়েছে। ধারাল অস্ত্রদিয়ে কোপানো যুবকদের মধ্যে বাধন ছাড়া সে ওই মুহুর্তে আর কাউকে চিনতে পারেনি।
দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আকরাম হোসেন জানান, গত রোজার ঈদের আগে দামুড়হুদা বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন মালিক সুপার মার্কেটে এড. আবু তালেবের ছেলে বাধনকে জেলা পরিষদের সদস্য যুবলীগ নেতা ইউসুফের ছেলে রাকিব দলবল নিয়ে বেধড়ক মারপিট করে। এসময় বাধনের লাঠির আঘাতে রাকিবের পিতা জেলা পরিষদের সদস্য যুবলীগ নেতা ইউসুফের একটা হাত ভেঙ্গে যায়। এ ঘটনায় থানায় পৃথক দুটি মামলাও হয়। পরে উভয়পক্ষ নিজেদের ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটান আপোষ মিমাংসার মধ্যদিয়ে। তারপর থেকে আর কোন গন্ডগোল হয়নি।
ওসি আরও বলেন ধারনা করা হচ্ছে, ওই সময়ের মারামারির জেরধরেই ভুট্টুকে কুপিয়েছে বাধনসহ তার সঙ্গীরা। ভুট্টুর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও বিষ্ফোরক আইনে ৪ টি মামলা রয়েছে। বাধনের নামে কোন মামলা নেই। নতুন করে অপ্রীতিকর কোন ঘটনা এড়াতে ঘটনার পর থেকে পুলিশ তৎপর রয়েছে এ বিষয়ে কোন মামলা হয়নি। মামলা হয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রহণ করা হবে। তাছাড়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অভিযুক্তদেরকে ধরতে অভিযান চলছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

এলোপাতাড়ি কোপে যুবলীগ কর্মী ভুট্টুর অবস্থা আশংঙ্কাজনক : রেফার

আপলোড টাইম : ০৬:২১:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ জানুয়ারী ২০১৮

দামুড়হুদায় আবারও যুবলীগের তালেব-ইউসুফ গ্রুপের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা
নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা সদরের বাসষ্ট্যান্ডে মাসুদ রানা ভুট্টু নামে এক যুবলীগ কর্মীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করেছে ছাত্রলীগের কর্মীরা। যুবলীগ কর্মী ভুট্টুর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী নেওয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর শান্ত দামুড়হুদা আবারও অশান্ত হয়ে উঠতে পারে বলে সাধারণ মানুষ ধারণা করছে। এ ঘটনার পর থেকে দামুড়হুদায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মারাত্মকভাবে আহত ভুট্টুর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও বিষ্ফোরকসহ ৪টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আকরাম হোসেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রত্যক্ষদর্শী একজন জানান, গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে আছরের আযানের পর দামুড়হুদা দশমীপাড়ার আফজাল হোসেনের ছেলে যুবলীগ কর্মী মাসুদ রানা ভুট্টু (৩৫) তার মোটরসাইকেলে আরও ২জন আরোহী নিয়ে দামুড়হুদা বাসষ্ট্যান্ডে ফজু’র চা দোকানে চা খেতে আসে। ভুট্টু চা খাওয়া শেষ করে ওই দোকান থেকে একটা সিগারেট নিয়ে ধরিয়ে টানতে টানতে দোকানের পিছনের দিকে যায়। ভুট্টু পিছনে যাওয়ার সাথে সাথে সেখানে আগে থেকে ওৎপেতে থাকা ৪/৫ জন যুবক তাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। তখন ওই অবস্থায় ভুট্টু চিৎকার করতে করতে কোন মতে দোকানের সামনে এসে মোটরসাইকেলযোগে এলাকা ত্যাগ করে। এরপর পরই ৪/৫ জন যুবক মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায়।


এছাড়া প্রত্যক্ষদর্শী অনেকে জানায়, উপজেলা যুবলীগের ইউসুফ গ্রুপ ও আবু তালেব গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এর সূত্র ধরে বিকালে ইউসুফ পক্ষের সমর্থক মাসুদ রানা দোকানে চা খাওয়ার সময় অপরপক্ষের আবু তালেবের ছেলে বাঁধনসহ বেশকিছু যুবক পেছন থেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, আছরের নামাজ শেষ মুহুর্তে সারা শরীরে রক্ত নিয়ে বাঁচাও বাঁচাও করতে করতে ভুট্টু থানা চত্বরে প্রবেশ করে। ওই অবস্থায় সে থানার সিড়ির সামনে পড়ে যায়। পুলিশরা তাকে উঠিয়ে দ্রুত গাড়ি ডেকে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। ওই সময় থানার মসজিদ থেকে আছরের নামাজ পড়ে বের হওয়া অনেকেই শুনতে পান ভুট্ট থানা পুলিশকে বলছে শাহিন আর শরিফুল আমাকে চুয়াডাঙ্গার ছেলে পিলে দিয়ে মার খাওয়াল।
এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শামীম আরা জানান, জখম যুবলীগ কর্মীর মাথা, পিঠ ও হাতে অন্তত ৫০টি সেলাই দেয়া হয়েছে। তার ডান হাতটি কেটে ফেলা হতে পারে। তার অবস্থা কিছুটা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে রাজশাহী রেফার করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যুবলীগ কর্মী মাসুদ রানা ভুট্টু সাংবাদিকদের জানান, যুবলীগ নেতা দামুড়হুদা খাঁ’পাড়ার এড. আবু তালেবের ছেলে বাধনসহ ৪/৫ জন যুবক তাকে ধারাল অস্ত্রদিয়ে কুপিয়েছে। ধারাল অস্ত্রদিয়ে কোপানো যুবকদের মধ্যে বাধন ছাড়া সে ওই মুহুর্তে আর কাউকে চিনতে পারেনি।
দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আকরাম হোসেন জানান, গত রোজার ঈদের আগে দামুড়হুদা বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন মালিক সুপার মার্কেটে এড. আবু তালেবের ছেলে বাধনকে জেলা পরিষদের সদস্য যুবলীগ নেতা ইউসুফের ছেলে রাকিব দলবল নিয়ে বেধড়ক মারপিট করে। এসময় বাধনের লাঠির আঘাতে রাকিবের পিতা জেলা পরিষদের সদস্য যুবলীগ নেতা ইউসুফের একটা হাত ভেঙ্গে যায়। এ ঘটনায় থানায় পৃথক দুটি মামলাও হয়। পরে উভয়পক্ষ নিজেদের ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটান আপোষ মিমাংসার মধ্যদিয়ে। তারপর থেকে আর কোন গন্ডগোল হয়নি।
ওসি আরও বলেন ধারনা করা হচ্ছে, ওই সময়ের মারামারির জেরধরেই ভুট্টুকে কুপিয়েছে বাধনসহ তার সঙ্গীরা। ভুট্টুর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও বিষ্ফোরক আইনে ৪ টি মামলা রয়েছে। বাধনের নামে কোন মামলা নেই। নতুন করে অপ্রীতিকর কোন ঘটনা এড়াতে ঘটনার পর থেকে পুলিশ তৎপর রয়েছে এ বিষয়ে কোন মামলা হয়নি। মামলা হয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রহণ করা হবে। তাছাড়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অভিযুক্তদেরকে ধরতে অভিযান চলছে।