ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

এভাবেই জিততে হয়!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৫:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মার্চ ২০১৮
  • / ৩১৮ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ ডেস্ক: এভাবে জিতবে বলেই কী তবে এমন অপেক্ষা! টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বশেষ জয় প্রায় এক বছর আগে। শ্রীলঙ্কার এই মাঠেই পাওয়া সে জয়ের পর বাংলাদেশ খুব যে বেশি ম্যাচ খেলেছে তা নয়। তবু মনে হচ্ছিল, টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের জয়? সে তো বোধ হয় অন্য জনমের কথা। টেস্ট, ওয়ানডেতে ভালো কিছু দেখা গেলেও টি-টোয়েন্টি মানেই যেন হারের মহাকাব্য। আজও প্রথম ওভারের পর আরেকটি হারের গল্প লেখা হবে বলেই মনে হচ্ছিল। তাসকিনের প্রথম ওভারেই ১৩ রান তোলা শ্রীলঙ্কা শেষ পর্যন্ত করল ২১৪ রান। রান তাড়া করে যে দলের জয়ের রেকর্ড ১৬৫ রানের সে বাংলাদেশের তাই আজ জয়ের আশাটা ছেড়ে দেওয়াটাই ছিল যুক্তিযুক্ত। কিন্তু লিটন দাস ও তামিম ইকবাল আশা ছাড়েননি। প্রথম ওভারে মাত্র একটা চার, তবু ১০ রান। পরের ওভারে ১ চার ও ১ ছক্কা, এবারও ১০। এভাবেই চার, ছক্কা চলল। রানের চাকাও গড়াল না শুধু, দৌড়াল। ২৫ বলে ৫০ পেরোল বাংলাদেশ। স্কোরটা ১০০ হতে অবশ্য একটু সময় লাগল বাংলাদেশের। তবুও ৯.২ ওভারেই টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের স্কোর ১০০ হতে দেখা গেছে শেষ কবে! এর মধ্যেই অবশ্য লিটন ফিরে গেছেন। তবে ১৯ বলের এক ইনিংসে (৪৩) চোখ জুড়ানো যে পাঁচটি ছক্কা মেরেছেন, তাতেই দলের আত্মবিশ্বাসটা টইটম্বুর হয়ে উঠল। দল ১০০ ছোঁয়ার পরের বলেই তামিম (২৯ বলে ৪৭) আউট হওয়ার পরও দলের বিশ্বাস টলল না। আজ যে সবাই বিশ্বাস নিয়েই নেমেছেন, আজ জিতবই এ কারণেই পরিস্থিতির সঙ্গে বেমানান সৌম্যের ইনিংসটির (২২ বলে ২৪) পরও বাংলাদেশ দেড় শ করে ফেলল ১৪ ওভারেই। ৬ ওভারে ৬৫ রান দরকার, বাংলাদেশ কি পারবে? পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৭৪ রান করার পরও বিশ্বাস হচ্ছিল না। কারণ, এই বাংলাদেশই যে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৩ বলে ১ রান তুলতে না পারার এক বিস্ময় জন্ম দিয়েছিল। উইকেটেও কেমন করে যেন সে ম্যাচের দুই কুশীলব, মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ! দলকে ২২ রান দুরে রেখে ভারত ম্যাচের মতোই প্রায় কাছাকাছি জায়গায় ক্যাচ দিয়ে মাহমুদউল্লাহ ফিরতেই মনে কু ডাকা শুরু। আবারও কি ‘কাছে তবু কত দূরের’ কষ্টে পুড়বে বাংলাদেশ? ১০ বলে ১৮ রানের দূরত্বে রেখে হাস্যকরভাবে সাব্বিরের রান আউটের পর তো মনে হচ্ছিল টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো দুই শ রান করাটাই আজকের দিনের সান্ত¡না হয়ে থাকবে। কিন্তু একজন মুশফিক যে ছিলেন উইকেটে। ২৪ বলে ফিফটি ছুঁয়েই আর দায়িত্ব সাড়েননি। ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে ম্যাচ যখন হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে, ঠিক তখনই এক ছক্কা। শেষ ওভারে ৯ রান দূরত্বে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ, স্ট্রাইকে মুশফিক। প্রথম বলে ২ রান, ৫ বলে ৭! পরের বলে ৪! সমীকরণতা দাঁড়াল ৪ বলে তিন। দুর্দান্ত, অবিশ্বাস্য মুশফিকের লাগল দুই বল। দুই বল বাকি রেখে বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টিতে সেরা জয়টা এনে দিলেন মুশফিক। ৩৫ বলে ৭২ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসটা যে আজকের জন্য জমা রেখেছিলেন মুশফিক!

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

এভাবেই জিততে হয়!

আপলোড টাইম : ০৯:২৫:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মার্চ ২০১৮

সমীকরণ ডেস্ক: এভাবে জিতবে বলেই কী তবে এমন অপেক্ষা! টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বশেষ জয় প্রায় এক বছর আগে। শ্রীলঙ্কার এই মাঠেই পাওয়া সে জয়ের পর বাংলাদেশ খুব যে বেশি ম্যাচ খেলেছে তা নয়। তবু মনে হচ্ছিল, টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের জয়? সে তো বোধ হয় অন্য জনমের কথা। টেস্ট, ওয়ানডেতে ভালো কিছু দেখা গেলেও টি-টোয়েন্টি মানেই যেন হারের মহাকাব্য। আজও প্রথম ওভারের পর আরেকটি হারের গল্প লেখা হবে বলেই মনে হচ্ছিল। তাসকিনের প্রথম ওভারেই ১৩ রান তোলা শ্রীলঙ্কা শেষ পর্যন্ত করল ২১৪ রান। রান তাড়া করে যে দলের জয়ের রেকর্ড ১৬৫ রানের সে বাংলাদেশের তাই আজ জয়ের আশাটা ছেড়ে দেওয়াটাই ছিল যুক্তিযুক্ত। কিন্তু লিটন দাস ও তামিম ইকবাল আশা ছাড়েননি। প্রথম ওভারে মাত্র একটা চার, তবু ১০ রান। পরের ওভারে ১ চার ও ১ ছক্কা, এবারও ১০। এভাবেই চার, ছক্কা চলল। রানের চাকাও গড়াল না শুধু, দৌড়াল। ২৫ বলে ৫০ পেরোল বাংলাদেশ। স্কোরটা ১০০ হতে অবশ্য একটু সময় লাগল বাংলাদেশের। তবুও ৯.২ ওভারেই টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের স্কোর ১০০ হতে দেখা গেছে শেষ কবে! এর মধ্যেই অবশ্য লিটন ফিরে গেছেন। তবে ১৯ বলের এক ইনিংসে (৪৩) চোখ জুড়ানো যে পাঁচটি ছক্কা মেরেছেন, তাতেই দলের আত্মবিশ্বাসটা টইটম্বুর হয়ে উঠল। দল ১০০ ছোঁয়ার পরের বলেই তামিম (২৯ বলে ৪৭) আউট হওয়ার পরও দলের বিশ্বাস টলল না। আজ যে সবাই বিশ্বাস নিয়েই নেমেছেন, আজ জিতবই এ কারণেই পরিস্থিতির সঙ্গে বেমানান সৌম্যের ইনিংসটির (২২ বলে ২৪) পরও বাংলাদেশ দেড় শ করে ফেলল ১৪ ওভারেই। ৬ ওভারে ৬৫ রান দরকার, বাংলাদেশ কি পারবে? পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৭৪ রান করার পরও বিশ্বাস হচ্ছিল না। কারণ, এই বাংলাদেশই যে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৩ বলে ১ রান তুলতে না পারার এক বিস্ময় জন্ম দিয়েছিল। উইকেটেও কেমন করে যেন সে ম্যাচের দুই কুশীলব, মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ! দলকে ২২ রান দুরে রেখে ভারত ম্যাচের মতোই প্রায় কাছাকাছি জায়গায় ক্যাচ দিয়ে মাহমুদউল্লাহ ফিরতেই মনে কু ডাকা শুরু। আবারও কি ‘কাছে তবু কত দূরের’ কষ্টে পুড়বে বাংলাদেশ? ১০ বলে ১৮ রানের দূরত্বে রেখে হাস্যকরভাবে সাব্বিরের রান আউটের পর তো মনে হচ্ছিল টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো দুই শ রান করাটাই আজকের দিনের সান্ত¡না হয়ে থাকবে। কিন্তু একজন মুশফিক যে ছিলেন উইকেটে। ২৪ বলে ফিফটি ছুঁয়েই আর দায়িত্ব সাড়েননি। ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে ম্যাচ যখন হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে, ঠিক তখনই এক ছক্কা। শেষ ওভারে ৯ রান দূরত্বে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ, স্ট্রাইকে মুশফিক। প্রথম বলে ২ রান, ৫ বলে ৭! পরের বলে ৪! সমীকরণতা দাঁড়াল ৪ বলে তিন। দুর্দান্ত, অবিশ্বাস্য মুশফিকের লাগল দুই বল। দুই বল বাকি রেখে বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টিতে সেরা জয়টা এনে দিলেন মুশফিক। ৩৫ বলে ৭২ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসটা যে আজকের জন্য জমা রেখেছিলেন মুশফিক!