ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

এবার ম্যাজিস্ট্রেটকেই ধমক দিলেন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৪২:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২১
  • / ২২১ বার পড়া হয়েছে

হুঙ্কার দেওয়া কুষ্টিয়ার সেই এসপিকে হাইকোর্টে তলব
সমীকরণ প্রতিবেদন:
কুষ্টিয়ার আলোচিত পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম তানভীর আরাফাতকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। সদ্য অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনের ভোট কেন্দ্রে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন হাসানকে অপমান, অপদস্ত করার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। ঘটনার ব্যাখ্যা চাইতেই তাকে তলব করা হয়েছে। আগামী ২৫ জানুয়ারি তাকে সশরীরে হাজির হয়ে ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। গতকাল বুধবার বিচারপতি মামনুন রহমান এবং বিচারপতি খিজির হায়াতের ডিভিশন বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন। এ তথ্য জানান ওই বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. তাহিরুল ইসলাম। তিনি জানান, ভেড়ামারা পৌরসভা নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকালে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন হাসানের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগের বিষয়ে তাকে তলব করা হয়েছে। এর আগে এসপি এসএম তানভীর আরাফাতের দুর্ব্যবহারের ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মহসিন হাসান নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেন। আবেদনের কপি সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রার জেনারেল, আইনমন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পুলিশের আইজির কাছে পাঠানো হয়েছে।
আবেদনে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন হাসান উল্লেখ করেন, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পৌরসভা নির্বাচনে ১৪ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রথম শ্রেণির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হই। ১৬ জানুয়ারি আমার দায়িত্বপালন অবস্থায় সকাল ১০টায় ভেড়ামারা পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে অবস্থানকালে একজন ভোটারের অভিযোগের ভিত্তিতে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করি। সেখানে কতিপয় ব্যক্তিকে ভোটকেন্দ্রের বুথের ভেতর লম্বা বেঞ্চে পোলিং এজেন্টদের সঙ্গে বসে থাকতে দেখি। তখন তাদের পরিচয়পত্র দেখাতে বললে তারা পরিচয়পত্র না দেখিয়ে প্রিজাইডিং অফিসারের স্বাক্ষরিত এ-ফোর সাইজের কাগজ দেখান। আমি সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসারকে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বুথের বাইরে ডাকি। কথা বলা শুরু করতেই ওই ভোটকেন্দ্রে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত ৪০-৫০ জন ফোর্সসহ প্রবেশ করেন। প্রথমেই তিনি প্রিজাইডিং অফিসারকে উচ্চস্বরে তলব করেন। তাৎক্ষণিক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমানসহ কয়েকজন ফোর্স প্রিজাইডিং অফিসারকে আমার সাথে কথা বলতে না দিয়েই তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপাচাপি করেন। তখন আমি নিজের পরিচয় দিয়ে বলি প্রিজাইডিং অফিসারের সাথে একটি বিষয়ে কথা বলছি। কথা শেষ হলে ওনাকে নিয়ে যান। এরপরও এএসপি মোস্তাফিজুর রহমান ধমক দিয়ে প্রিজাইডিং অফিসারকে আমার সামনে থেকে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ সুপার তানভীর আরাফাত আমার দিকে অগ্রসর হন। আমাকে জিজ্ঞেস করেন, আপনি কে? কী করেন এখানে?
আমি আমার পরিচয় দিলে তিনি আরও ক্ষিপ্তস্বরে বলেন, আপনি এখানে কী করেন? বেয়াদব, বের হয়ে যান এখান থেকে! আমি পুলিশ সুপার ও তার ফোর্সদের আক্রমণাত্মক চরম অসৌজন্যমূলক ও মারমুখী আচরণে হতচকিত ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকি। এরপর এসপিসহ তার সঙ্গী ফোর্সরা আমার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় আমাকে উদ্দেশ্য করে একাধিকবার বলেন, এসব লোককে পাঠায় কে? বেয়াদব ছেলে। এখানে কাজ কী আপনার? বের হয়ে যান এখান থেকে। তারা কেন্দ্র থেকে চলে যাওয়ার পর আমি বিষয়টি ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করি।
আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, পুলিশ সুপার ও তার সঙ্গী ফোর্সদের আচরণ স্থানীয় সরকার নির্বাচন বিধিমালা ২০১০ এর ৬৯, ৭০, ৭৪, ৮০ ও ৮১ বিধির সরাসরি লঙ্ঘন। তাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রার্থনা করছি। এর আগে গত ডিসেম্বরে কুষ্টিয়ার এসপি এসএম তানভীর আরাফাত জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়ে আলোচনায় আসেন। সে সময় কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধু এবং বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনায় এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উদ্দেশ্যে জ্বালাময়ী বক্তব্য দেন তানভীর আরাফাত। তিনি বলেছিলেন- আমি সত্যি দুঃখিত, লজ্জিত, আবেগাপ্লুত, রাগান্বিত। আমি এখানকার পুলিশ সুপার। খুবই লজ্জিত যে আমাদের এখানে দুটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। একটি জাতির পিতার ভাস্কর্য, আরেকটি বাঘা যতীনের আবক্ষ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। জাতির পিতার ভাস্কর্য আপনারা ভাঙেন, আপনাদের স্পর্ধা কত বড়! যাদের ধরা হয়েছে, তাদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। হুঙ্কার ছেড়ে বলেন, কঠোরভাবে বলতে চাই, পরবর্তীতে এমন কোনো ঘটনা যদি ঘটে, সরকারকে একদম দুর্বল মনে করবেন না মৌলবাদী চক্র। হাত কিন্তু ভেঙে দিব। বাংলাদেশ যদি পছন্দ না হয়, তাহলে পাকিস্তান চলে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। তানভীর আরাফাত বলেছিলেন, কোরআন আমরাও পড়েছি। কোরআন শরীফ চারবার খতম দিয়েছি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আমিও পড়ি। আপনি বলার কে, আমি বেহেস্তে যাব, কি যাব না? বেহেস্তে যাওয়ার টিকিট কি আপনি আমাকে দিবেন?
তার এ বক্তব্যের পর হেফাজতে ইসলাম এক বিবৃতিতে এসপি তানভীর আরাফাতকে বরখাস্তের দাবি জানায়। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদীর গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, কুষ্টিয়ার এসপি এসএম তানভীর আরাফাত কর্তৃক তথাকথিত মৌলবাদের ধোঁয়া তুলে হাত ভেঙে দেয়ার হুমকি সরকারি পোশাকে গণবিরোধী মাস্তানি। বিবৃতিতে বলা হয়, পুলিশের দায়িত্ব অপরাধ ঠেকানো এবং অপরাধীদের গ্রেফতার করে আদালতে বিচারপ্রক্রিয়ায় পাঠানো। আর বিচার করবে আদালত। কিন্তু পুলিশ কোনো অপরাধীর হাত ভেঙে দিতে পারে না। কিংবা কোনো অপরাধীকে বিনাবিচারে জেল খাটাতেও পারে না। বিবৃতিতে বলা হয়, মৌলবাদ ও ধর্ম ব্যবসার জিগির তুলে আলেম-সমাজকে ছোট করার সংঘবদ্ধ প্রপাগান্ডা চলছে, যার পরিণতি কখনোই ভালো হবে না। যতই ক্ষমতা থাকুক, আল্লাহর গজব আসলে দুনিয়ার কোনো ক্ষমতা দিয়েই তা ঠেকানো যাবে না। সরকারের কাছে আমরা অবিলম্বে উক্ত এসপিকে বরখাস্ত করার আহ্বান জানানো হয়। উল্লেখ্য, ২৪তম বিসিএস’র পুলিশ কর্মকর্তা পিপিএম (বার) এসএম তানভীর আরাফাত ২০১৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

এবার ম্যাজিস্ট্রেটকেই ধমক দিলেন

আপলোড টাইম : ০৯:৪২:০৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২১

হুঙ্কার দেওয়া কুষ্টিয়ার সেই এসপিকে হাইকোর্টে তলব
সমীকরণ প্রতিবেদন:
কুষ্টিয়ার আলোচিত পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম তানভীর আরাফাতকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। সদ্য অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনের ভোট কেন্দ্রে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন হাসানকে অপমান, অপদস্ত করার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। ঘটনার ব্যাখ্যা চাইতেই তাকে তলব করা হয়েছে। আগামী ২৫ জানুয়ারি তাকে সশরীরে হাজির হয়ে ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। গতকাল বুধবার বিচারপতি মামনুন রহমান এবং বিচারপতি খিজির হায়াতের ডিভিশন বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন। এ তথ্য জানান ওই বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. তাহিরুল ইসলাম। তিনি জানান, ভেড়ামারা পৌরসভা নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকালে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন হাসানের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগের বিষয়ে তাকে তলব করা হয়েছে। এর আগে এসপি এসএম তানভীর আরাফাতের দুর্ব্যবহারের ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মহসিন হাসান নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেন। আবেদনের কপি সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রার জেনারেল, আইনমন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পুলিশের আইজির কাছে পাঠানো হয়েছে।
আবেদনে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন হাসান উল্লেখ করেন, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পৌরসভা নির্বাচনে ১৪ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রথম শ্রেণির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হই। ১৬ জানুয়ারি আমার দায়িত্বপালন অবস্থায় সকাল ১০টায় ভেড়ামারা পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে অবস্থানকালে একজন ভোটারের অভিযোগের ভিত্তিতে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করি। সেখানে কতিপয় ব্যক্তিকে ভোটকেন্দ্রের বুথের ভেতর লম্বা বেঞ্চে পোলিং এজেন্টদের সঙ্গে বসে থাকতে দেখি। তখন তাদের পরিচয়পত্র দেখাতে বললে তারা পরিচয়পত্র না দেখিয়ে প্রিজাইডিং অফিসারের স্বাক্ষরিত এ-ফোর সাইজের কাগজ দেখান। আমি সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসারকে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বুথের বাইরে ডাকি। কথা বলা শুরু করতেই ওই ভোটকেন্দ্রে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত ৪০-৫০ জন ফোর্সসহ প্রবেশ করেন। প্রথমেই তিনি প্রিজাইডিং অফিসারকে উচ্চস্বরে তলব করেন। তাৎক্ষণিক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমানসহ কয়েকজন ফোর্স প্রিজাইডিং অফিসারকে আমার সাথে কথা বলতে না দিয়েই তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপাচাপি করেন। তখন আমি নিজের পরিচয় দিয়ে বলি প্রিজাইডিং অফিসারের সাথে একটি বিষয়ে কথা বলছি। কথা শেষ হলে ওনাকে নিয়ে যান। এরপরও এএসপি মোস্তাফিজুর রহমান ধমক দিয়ে প্রিজাইডিং অফিসারকে আমার সামনে থেকে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ সুপার তানভীর আরাফাত আমার দিকে অগ্রসর হন। আমাকে জিজ্ঞেস করেন, আপনি কে? কী করেন এখানে?
আমি আমার পরিচয় দিলে তিনি আরও ক্ষিপ্তস্বরে বলেন, আপনি এখানে কী করেন? বেয়াদব, বের হয়ে যান এখান থেকে! আমি পুলিশ সুপার ও তার ফোর্সদের আক্রমণাত্মক চরম অসৌজন্যমূলক ও মারমুখী আচরণে হতচকিত ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকি। এরপর এসপিসহ তার সঙ্গী ফোর্সরা আমার সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় আমাকে উদ্দেশ্য করে একাধিকবার বলেন, এসব লোককে পাঠায় কে? বেয়াদব ছেলে। এখানে কাজ কী আপনার? বের হয়ে যান এখান থেকে। তারা কেন্দ্র থেকে চলে যাওয়ার পর আমি বিষয়টি ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করি।
আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, পুলিশ সুপার ও তার সঙ্গী ফোর্সদের আচরণ স্থানীয় সরকার নির্বাচন বিধিমালা ২০১০ এর ৬৯, ৭০, ৭৪, ৮০ ও ৮১ বিধির সরাসরি লঙ্ঘন। তাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রার্থনা করছি। এর আগে গত ডিসেম্বরে কুষ্টিয়ার এসপি এসএম তানভীর আরাফাত জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়ে আলোচনায় আসেন। সে সময় কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধু এবং বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনায় এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উদ্দেশ্যে জ্বালাময়ী বক্তব্য দেন তানভীর আরাফাত। তিনি বলেছিলেন- আমি সত্যি দুঃখিত, লজ্জিত, আবেগাপ্লুত, রাগান্বিত। আমি এখানকার পুলিশ সুপার। খুবই লজ্জিত যে আমাদের এখানে দুটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। একটি জাতির পিতার ভাস্কর্য, আরেকটি বাঘা যতীনের আবক্ষ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। জাতির পিতার ভাস্কর্য আপনারা ভাঙেন, আপনাদের স্পর্ধা কত বড়! যাদের ধরা হয়েছে, তাদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। হুঙ্কার ছেড়ে বলেন, কঠোরভাবে বলতে চাই, পরবর্তীতে এমন কোনো ঘটনা যদি ঘটে, সরকারকে একদম দুর্বল মনে করবেন না মৌলবাদী চক্র। হাত কিন্তু ভেঙে দিব। বাংলাদেশ যদি পছন্দ না হয়, তাহলে পাকিস্তান চলে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। তানভীর আরাফাত বলেছিলেন, কোরআন আমরাও পড়েছি। কোরআন শরীফ চারবার খতম দিয়েছি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আমিও পড়ি। আপনি বলার কে, আমি বেহেস্তে যাব, কি যাব না? বেহেস্তে যাওয়ার টিকিট কি আপনি আমাকে দিবেন?
তার এ বক্তব্যের পর হেফাজতে ইসলাম এক বিবৃতিতে এসপি তানভীর আরাফাতকে বরখাস্তের দাবি জানায়। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদীর গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, কুষ্টিয়ার এসপি এসএম তানভীর আরাফাত কর্তৃক তথাকথিত মৌলবাদের ধোঁয়া তুলে হাত ভেঙে দেয়ার হুমকি সরকারি পোশাকে গণবিরোধী মাস্তানি। বিবৃতিতে বলা হয়, পুলিশের দায়িত্ব অপরাধ ঠেকানো এবং অপরাধীদের গ্রেফতার করে আদালতে বিচারপ্রক্রিয়ায় পাঠানো। আর বিচার করবে আদালত। কিন্তু পুলিশ কোনো অপরাধীর হাত ভেঙে দিতে পারে না। কিংবা কোনো অপরাধীকে বিনাবিচারে জেল খাটাতেও পারে না। বিবৃতিতে বলা হয়, মৌলবাদ ও ধর্ম ব্যবসার জিগির তুলে আলেম-সমাজকে ছোট করার সংঘবদ্ধ প্রপাগান্ডা চলছে, যার পরিণতি কখনোই ভালো হবে না। যতই ক্ষমতা থাকুক, আল্লাহর গজব আসলে দুনিয়ার কোনো ক্ষমতা দিয়েই তা ঠেকানো যাবে না। সরকারের কাছে আমরা অবিলম্বে উক্ত এসপিকে বরখাস্ত করার আহ্বান জানানো হয়। উল্লেখ্য, ২৪তম বিসিএস’র পুলিশ কর্মকর্তা পিপিএম (বার) এসএম তানভীর আরাফাত ২০১৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন।