ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

এতিম শিশুদের প্রতি রাসুলুল্লাহ (সা.)

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:২১:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ ডিসেম্বর ২০১৮
  • / ৩৫৪ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক: হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এমনিতেই ছিলেন জনদরদি মানবতাবাদী নবী। তার সঙ্গে পৃথিবীর কোনো মানবদরদির তুলনা চলে না। তার ওপর এতিম-অসহায়দের প্রতি তিনি ছিলেন অনেক দরদি ও সহানুভূতিশীল। তিনি এতিম-অভাবীদের অনেক ভালোবাসতেন সাহায্য করতেন। একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) ঈদের নামাজ পড়ানোর জন্যে বের হলেন। রাস্তার পাশে মাঠে কিছু কিশোর খেলাধুলা করছিল। কিন্তু তাদের একজন মাঠের এককোণে বসে কাঁদছিল। পরনে তার ছেঁড়া জরাজীর্ণ কাপড়। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে খেয়াল করলেন। কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, বাবা তুমি কাঁদছ কেন? ছেলেটি বলল, আমার মা-বাবা নেই। এমন কোনো আত্মীয়ও নেই যার কাছে আমি আশ্রয় নিতে পারি। রাসুলুল্লাহ (সা.) তার কথা শুনে কষ্ট পেলেন। বললেন, আজ থেকে আমিই তোমার বাবা। আয়েশা তোমার মা, ফাতেমা তোমার বোন। তুমি কি সন্তুষ্ট? ছেলেটি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! এত কিছু পেয়েও আমি কি সন্তুষ্ট না হয়ে পারি। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে বাসায় নিয়ে গেলেন, সুন্দর জামা পরালেন এবং তৃপ্তি ভরে খাওয়ালেন। এরপর ছেলেটি হাসতে হাসতে আবার সেই মাঠে ফিরে গেল। অন্য ছেলেরা তার এ অবস্থা দেখে অবাক হলো। জিজ্ঞেস করল, কিছুক্ষণ আগে না তুমি কাঁদছিলে? এর মধ্যে এমন কী হলো যে, তুমি খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেলে? ছেলেটি বলল, আমি অনাহারে ছিলাম, পরিতৃপ্ত হয়েছি। পোশাকহীন ছিলাম, পোশাক পেয়েছি। এতিম ছিলাম, আল্লাহর রাসুলকে পিতা হিসেবে পেয়েছি, তার পরিবারের সবাইকে আমার পরিবার হিসেবে পেয়েছি। এখন আমার চেয়ে সুখী আর কে আছে? যায়েদ বিন হারেসা (রা.) শিশুকালে দাস হিসেবে বিক্রি হন। হাতবদল হতে হতে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাতে এসে পড়েন। তার পিতা মাতা তার খোঁজ পেয়ে তাকে মুক্ত করতে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে আসেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে মুক্ত করে দিয়ে তার পিতা-মাতার সঙ্গে চলে যাওয়ার অথবা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে থেকে যাওয়ার সুযোগ দিলেন। তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে থেকে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর স্নেহের কারণে সে এরূপ করেছিল। পরবর্তীতে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে আপন পালক পুত্র হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। আমরা মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আদর্শ গ্রহণ করতে পারলে বর্তমান সমাজটা আরও সুন্দর ও আদর্শম-িত হতো।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

এতিম শিশুদের প্রতি রাসুলুল্লাহ (সা.)

আপলোড টাইম : ১১:২১:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ ডিসেম্বর ২০১৮

ধর্ম ডেস্ক: হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এমনিতেই ছিলেন জনদরদি মানবতাবাদী নবী। তার সঙ্গে পৃথিবীর কোনো মানবদরদির তুলনা চলে না। তার ওপর এতিম-অসহায়দের প্রতি তিনি ছিলেন অনেক দরদি ও সহানুভূতিশীল। তিনি এতিম-অভাবীদের অনেক ভালোবাসতেন সাহায্য করতেন। একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) ঈদের নামাজ পড়ানোর জন্যে বের হলেন। রাস্তার পাশে মাঠে কিছু কিশোর খেলাধুলা করছিল। কিন্তু তাদের একজন মাঠের এককোণে বসে কাঁদছিল। পরনে তার ছেঁড়া জরাজীর্ণ কাপড়। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে খেয়াল করলেন। কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, বাবা তুমি কাঁদছ কেন? ছেলেটি বলল, আমার মা-বাবা নেই। এমন কোনো আত্মীয়ও নেই যার কাছে আমি আশ্রয় নিতে পারি। রাসুলুল্লাহ (সা.) তার কথা শুনে কষ্ট পেলেন। বললেন, আজ থেকে আমিই তোমার বাবা। আয়েশা তোমার মা, ফাতেমা তোমার বোন। তুমি কি সন্তুষ্ট? ছেলেটি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! এত কিছু পেয়েও আমি কি সন্তুষ্ট না হয়ে পারি। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে বাসায় নিয়ে গেলেন, সুন্দর জামা পরালেন এবং তৃপ্তি ভরে খাওয়ালেন। এরপর ছেলেটি হাসতে হাসতে আবার সেই মাঠে ফিরে গেল। অন্য ছেলেরা তার এ অবস্থা দেখে অবাক হলো। জিজ্ঞেস করল, কিছুক্ষণ আগে না তুমি কাঁদছিলে? এর মধ্যে এমন কী হলো যে, তুমি খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেলে? ছেলেটি বলল, আমি অনাহারে ছিলাম, পরিতৃপ্ত হয়েছি। পোশাকহীন ছিলাম, পোশাক পেয়েছি। এতিম ছিলাম, আল্লাহর রাসুলকে পিতা হিসেবে পেয়েছি, তার পরিবারের সবাইকে আমার পরিবার হিসেবে পেয়েছি। এখন আমার চেয়ে সুখী আর কে আছে? যায়েদ বিন হারেসা (রা.) শিশুকালে দাস হিসেবে বিক্রি হন। হাতবদল হতে হতে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাতে এসে পড়েন। তার পিতা মাতা তার খোঁজ পেয়ে তাকে মুক্ত করতে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে আসেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে মুক্ত করে দিয়ে তার পিতা-মাতার সঙ্গে চলে যাওয়ার অথবা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে থেকে যাওয়ার সুযোগ দিলেন। তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে থেকে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করলেন। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর স্নেহের কারণে সে এরূপ করেছিল। পরবর্তীতে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে আপন পালক পুত্র হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। আমরা মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আদর্শ গ্রহণ করতে পারলে বর্তমান সমাজটা আরও সুন্দর ও আদর্শম-িত হতো।