ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

উভয় সংকটে আওয়ামী লীগ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৪০:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ মার্চ ২০১৯
  • / ৩১০ বার পড়া হয়েছে

বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় বাড়ছে দলীয় কোন্দল
সমীকরণ ডেস্ক:
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অধিকাংশ স্থানে একাধিক দলীয় প্রার্থী নিয়ে উভয় সংকটে আছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ- এমনটি মনে করছেন দলটির সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, একক প্রার্থী নিশ্চিত করতে গেলে বেড়ে যায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের সংখ্যা।
এতে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার শঙ্কা থাকে। আর এ কারণেই এ নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক করতে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন দিলেও ‘বিদ্রোহী প্রার্থীর’ ব্যাপারে নমনীয় দলটি। শুধু নমনীয়ই নয়, কোনো কোনো উপজেলায় বিদ্রোহীদের ওপর আছে স্থানীয় এমপি ও প্রভাবশালী নেতাদের আশীর্বাদ। পাশাপাশি দলীয় মনোনয়ন না দিয়ে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে দুই ভাইস চেয়ারম্যানের পদ। এতে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী দলগুলো এ নির্বাচনে অংশ না নেয়ার পরও আশঙ্কাজনক হারে কমেনি প্রার্থীর সংখ্যা।
অন্যদিকে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহীসহ দুই ভাইস চেয়ারম্যান পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় দলের তৃণমূলে সৃষ্টি হয়েছে এক ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। প্রতিদ্বন্দ্বীদের ঠেকাতে কোনো কোনো উপজেলায় স্থানীয়ভাবে চলছে বহিষ্কার-পাল্টা বহিষ্কার। আবার কোথাও প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে দলীয় কোন্দল। ঘটছে সংঘর্ষের ঘটনাও। কেন্দ্র থেকে বিদ্যমান এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ভোটের দিনও সহিংসতা হতে পারে, যা দলের ভাবমূর্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে- এমন আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।
এদিকে নানা কৌশল নেয়ার পরও পাঁচ ধাপে অনুষ্ঠেয় উপজেলা নির্বাচনের প্রথম চার ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন ১২৪ জন চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। এছাড়া বাকি উপজেলার প্রায় সবগুলোতেই প্রতি পদের বিপরীতে রয়েছে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী। চলতি মাসেই প্রথম চার ধাপে ৪৬৪টি উপজেলায় ভোট হবে। প্রথম ধাপে ৮৬ উপজেলায় ভোট হবে ১০ মার্চ।
এতে প্রার্থী ১ হাজার ৮৮ জন। এসব উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ২৮৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৮৭ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩১৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন। দ্বিতীয় ধাপে ১২৪ উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেন ১ হাজার ৬২৬ জন। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৪৮৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬৭৬ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৬৭ জন প্রার্থী রয়েছে।
এ ধাপে ১৮ মার্চ ভোট গ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন। তৃতীয় ধাপে ভোট গ্রহণ হবে ২৪ মার্চ। এ ধাপের ১২৭ উপজেলায় তিনটি পদে ১ হাজার ৬৬৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৪৭৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭২৬ জন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৬১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। চতুর্থ ধাপে ১২২ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪১৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬০১ জন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪২৭ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এই ধাপে প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১৩ মার্চ আর ভোট গ্রহণ ৩১ মার্চ। এ প্রথম চার ধাপে দেখা গেছে, তিন পদেই অধিকাংশ প্রার্থী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। পঞ্চম ধাপে বাকি উপজেলাগুলোতে ভোট হবে রোজার ঈদের পর।
বিভিন্ন উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ এবং নিজেদের মধ্যে কোন্দল হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলেন, এ ব্যাপারে একটা সংকট তো রয়েছেই। আমরা সব সময় চেয়েছি নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হোক। বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে তৃণমূলে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না এখনও কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। তবে আমরা বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলেন, আমরা শুরু থেকেই চেয়েছি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনটা উৎসবমুখর হোক। সেখানে যারা যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা সবাই নির্বাচন করতে পারবেন। এতে কোনো সমস্যা নেই। তাহলে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না’।

১/১

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

উভয় সংকটে আওয়ামী লীগ

আপলোড টাইম : ১০:৪০:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ মার্চ ২০১৯

বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় বাড়ছে দলীয় কোন্দল
সমীকরণ ডেস্ক:
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অধিকাংশ স্থানে একাধিক দলীয় প্রার্থী নিয়ে উভয় সংকটে আছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ- এমনটি মনে করছেন দলটির সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, একক প্রার্থী নিশ্চিত করতে গেলে বেড়ে যায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের সংখ্যা।
এতে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার শঙ্কা থাকে। আর এ কারণেই এ নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক করতে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন দিলেও ‘বিদ্রোহী প্রার্থীর’ ব্যাপারে নমনীয় দলটি। শুধু নমনীয়ই নয়, কোনো কোনো উপজেলায় বিদ্রোহীদের ওপর আছে স্থানীয় এমপি ও প্রভাবশালী নেতাদের আশীর্বাদ। পাশাপাশি দলীয় মনোনয়ন না দিয়ে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে দুই ভাইস চেয়ারম্যানের পদ। এতে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী দলগুলো এ নির্বাচনে অংশ না নেয়ার পরও আশঙ্কাজনক হারে কমেনি প্রার্থীর সংখ্যা।
অন্যদিকে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহীসহ দুই ভাইস চেয়ারম্যান পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় দলের তৃণমূলে সৃষ্টি হয়েছে এক ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। প্রতিদ্বন্দ্বীদের ঠেকাতে কোনো কোনো উপজেলায় স্থানীয়ভাবে চলছে বহিষ্কার-পাল্টা বহিষ্কার। আবার কোথাও প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে দলীয় কোন্দল। ঘটছে সংঘর্ষের ঘটনাও। কেন্দ্র থেকে বিদ্যমান এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ভোটের দিনও সহিংসতা হতে পারে, যা দলের ভাবমূর্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে- এমন আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।
এদিকে নানা কৌশল নেয়ার পরও পাঁচ ধাপে অনুষ্ঠেয় উপজেলা নির্বাচনের প্রথম চার ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন ১২৪ জন চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। এছাড়া বাকি উপজেলার প্রায় সবগুলোতেই প্রতি পদের বিপরীতে রয়েছে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী। চলতি মাসেই প্রথম চার ধাপে ৪৬৪টি উপজেলায় ভোট হবে। প্রথম ধাপে ৮৬ উপজেলায় ভোট হবে ১০ মার্চ।
এতে প্রার্থী ১ হাজার ৮৮ জন। এসব উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ২৮৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৮৭ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩১৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন। দ্বিতীয় ধাপে ১২৪ উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেন ১ হাজার ৬২৬ জন। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৪৮৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬৭৬ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৬৭ জন প্রার্থী রয়েছে।
এ ধাপে ১৮ মার্চ ভোট গ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন। তৃতীয় ধাপে ভোট গ্রহণ হবে ২৪ মার্চ। এ ধাপের ১২৭ উপজেলায় তিনটি পদে ১ হাজার ৬৬৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৪৭৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭২৬ জন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৬১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। চতুর্থ ধাপে ১২২ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪১৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬০১ জন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪২৭ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এই ধাপে প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১৩ মার্চ আর ভোট গ্রহণ ৩১ মার্চ। এ প্রথম চার ধাপে দেখা গেছে, তিন পদেই অধিকাংশ প্রার্থী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। পঞ্চম ধাপে বাকি উপজেলাগুলোতে ভোট হবে রোজার ঈদের পর।
বিভিন্ন উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ এবং নিজেদের মধ্যে কোন্দল হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলেন, এ ব্যাপারে একটা সংকট তো রয়েছেই। আমরা সব সময় চেয়েছি নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হোক। বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে তৃণমূলে কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না এখনও কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। তবে আমরা বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলেন, আমরা শুরু থেকেই চেয়েছি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনটা উৎসবমুখর হোক। সেখানে যারা যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা সবাই নির্বাচন করতে পারবেন। এতে কোনো সমস্যা নেই। তাহলে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না’।

১/১