ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ইসলামের ন্যায়বিচার

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৬:৩৮:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৮
  • / ৩৮৭ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক: ইসলামের বিশ্বদৃষ্টিতে ন্যায়বিচার মানে, বিভিন্ন বিষয়কে সেগুলোর যথাযথ স্থানে স্থাপন করা। অন্যদের সঙ্গে সম-আচরণ করাও ন্যায়বিচার। ইসলামে ন্যায়বিচার একটি নৈতিক গুণ এবং মানবিক ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য। পাশ্চাত্যের ঐতিহ্যেও একই দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করা হয়। ন্যায়বিচার সাম্য বা সমতার ঘনিষ্ঠ এ কারণে যে, অধিকার ও দায়িত্বের মধ্যে ভারসাম্য সৃষ্টি করে ন্যায়বিচার। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহ তার রাসুলকে (সা.) বলছেন, ‘হে আমার বান্দারা, আমি নিজের জন্য অবিচার নিষিদ্ধ করেছি এবং এটা নিষিদ্ধ করেছি তোমাদের জন্যও। অতএব একে অন্যের প্রতি অবিচার করা থেকে বিরত থেকো।’ ন্যায়বিচার নৈতিক পরিশুদ্ধি ও সুনীতির প্রতিনিধিত্ব করে। কারণ এর মাধ্যমে কোনো জিনিস বা বিষয় সে স্থান পায় যেখানে এর থাকা উচিত। কোরানে ন্যায়বিচারকে একটি পরম গুণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইসলামে ন্যায়বিচারকে এত বেশি মর্যাদা দেয়া হয় যে, তাওহিদ ও রিসালাতের পরই এর স্থান। আল্লাহতায়ালা কোরানে ঘোষণা করছেন, আল্লাহ ন্যায়বিচার ও সদাচরণের নির্দেশ দিচ্ছেন (সূরা নাহল: ৯০)। হে ইমানদারগণ! আল্লাহর জন্য ন্যায়পরায়ণ হও এবং ন্যায়বিচার সহকারে সাক্ষ্য বহনকারী হও (সূরা মায়েদা: ৮)। এ প্রেক্ষাপটে আমরা বলতে পারি, ন্যায়বিচার ইসলামে একটি আবশ্যিক কর্তব্য এবং অবিচার নিষিদ্ধ। ন্যায়বিচারের প্রতি ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি সামগ্রিক এবং তা জীবনের সব দিকেই পরিব্যাপ্ত। যে পথ ধরে গেলেই ন্যায়বিচারে পৌঁছা যাবে, সেটাই ইসলামি আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে ধরে নেয়া হয়। আল্লাহ চেয়েছেন ন্যায়বিচার। তিনি এ জন্য কেবল একটি পথ বেঁধে দেননি; তিনি সাধারণ নীতিমালা দিয়েছেন ন্যায়বিচারের জন্য। কিভাবে তা অর্জিত হবে, সেটা স্থির করে দিয়েছেন। তাই যাবতীয় উপায়-উপকরণ, পন্থা-পদ্ধতি, যা কিছুই ন্যায়বিচারে সহায়ক কিংবা এর বিকাশ ও অগ্রগতি সাধন করে থাকে আর সেটা যদি ইসলামি আইন লঙ্ঘন না করে, তা বৈধ বলে গণ্য হবে। কোরানে কারিমে ন্যায়বিচারের যে মানদ- নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে তা ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণী-গোত্র নির্বিশেষে সবার ক্ষেত্রে সমভাবে প্রযোজ্য। কারণ মুসলমানদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে যেন বন্ধু ও বৈরী, সুহৃদ ও শত্রু সবার প্রতি একইভাবে ন্যায়বিচার করা হয়। সবপর্যায়েই ন্যায়নীতি অবলম্বন করা চাই। ইসলামী চিন্তাবিদদের অভিমত, এই নির্দেশগুলো সব জাতি, সব ধর্মাবলম্বী তথা বাস্তবে গোটা মানবজাতির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এক কথায়, কোরানের দৃষ্টিতে ন্যায়বিচার করতে আমরা বাধ্য।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ইসলামের ন্যায়বিচার

আপলোড টাইম : ০৬:৩৮:০৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৮

ধর্ম ডেস্ক: ইসলামের বিশ্বদৃষ্টিতে ন্যায়বিচার মানে, বিভিন্ন বিষয়কে সেগুলোর যথাযথ স্থানে স্থাপন করা। অন্যদের সঙ্গে সম-আচরণ করাও ন্যায়বিচার। ইসলামে ন্যায়বিচার একটি নৈতিক গুণ এবং মানবিক ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য। পাশ্চাত্যের ঐতিহ্যেও একই দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করা হয়। ন্যায়বিচার সাম্য বা সমতার ঘনিষ্ঠ এ কারণে যে, অধিকার ও দায়িত্বের মধ্যে ভারসাম্য সৃষ্টি করে ন্যায়বিচার। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহ তার রাসুলকে (সা.) বলছেন, ‘হে আমার বান্দারা, আমি নিজের জন্য অবিচার নিষিদ্ধ করেছি এবং এটা নিষিদ্ধ করেছি তোমাদের জন্যও। অতএব একে অন্যের প্রতি অবিচার করা থেকে বিরত থেকো।’ ন্যায়বিচার নৈতিক পরিশুদ্ধি ও সুনীতির প্রতিনিধিত্ব করে। কারণ এর মাধ্যমে কোনো জিনিস বা বিষয় সে স্থান পায় যেখানে এর থাকা উচিত। কোরানে ন্যায়বিচারকে একটি পরম গুণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইসলামে ন্যায়বিচারকে এত বেশি মর্যাদা দেয়া হয় যে, তাওহিদ ও রিসালাতের পরই এর স্থান। আল্লাহতায়ালা কোরানে ঘোষণা করছেন, আল্লাহ ন্যায়বিচার ও সদাচরণের নির্দেশ দিচ্ছেন (সূরা নাহল: ৯০)। হে ইমানদারগণ! আল্লাহর জন্য ন্যায়পরায়ণ হও এবং ন্যায়বিচার সহকারে সাক্ষ্য বহনকারী হও (সূরা মায়েদা: ৮)। এ প্রেক্ষাপটে আমরা বলতে পারি, ন্যায়বিচার ইসলামে একটি আবশ্যিক কর্তব্য এবং অবিচার নিষিদ্ধ। ন্যায়বিচারের প্রতি ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি সামগ্রিক এবং তা জীবনের সব দিকেই পরিব্যাপ্ত। যে পথ ধরে গেলেই ন্যায়বিচারে পৌঁছা যাবে, সেটাই ইসলামি আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে ধরে নেয়া হয়। আল্লাহ চেয়েছেন ন্যায়বিচার। তিনি এ জন্য কেবল একটি পথ বেঁধে দেননি; তিনি সাধারণ নীতিমালা দিয়েছেন ন্যায়বিচারের জন্য। কিভাবে তা অর্জিত হবে, সেটা স্থির করে দিয়েছেন। তাই যাবতীয় উপায়-উপকরণ, পন্থা-পদ্ধতি, যা কিছুই ন্যায়বিচারে সহায়ক কিংবা এর বিকাশ ও অগ্রগতি সাধন করে থাকে আর সেটা যদি ইসলামি আইন লঙ্ঘন না করে, তা বৈধ বলে গণ্য হবে। কোরানে কারিমে ন্যায়বিচারের যে মানদ- নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে তা ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণী-গোত্র নির্বিশেষে সবার ক্ষেত্রে সমভাবে প্রযোজ্য। কারণ মুসলমানদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে যেন বন্ধু ও বৈরী, সুহৃদ ও শত্রু সবার প্রতি একইভাবে ন্যায়বিচার করা হয়। সবপর্যায়েই ন্যায়নীতি অবলম্বন করা চাই। ইসলামী চিন্তাবিদদের অভিমত, এই নির্দেশগুলো সব জাতি, সব ধর্মাবলম্বী তথা বাস্তবে গোটা মানবজাতির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এক কথায়, কোরানের দৃষ্টিতে ন্যায়বিচার করতে আমরা বাধ্য।