ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ইসলামী শিক্ষার সূচনা ও বিস্তার

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:২৭:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  • / ১৪১২ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক: মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আগমন করেন একটি ‘অশিক্ষিত’ জাতির মাঝে। তার আগমনের সময় আরবে উল্লেখযোগ্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল না। কোরানের সর্ব প্রথম নাজিলকৃত আয়াতগুলোতে শিক্ষার প্রতি বিশেষভাবে তাগিদ দেয়া হয়। সে অর্থে ইসলামী শিক্ষার শুরু হয় ওহির নূর থেকে। ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞানের শুরুতে আছে আল্লাহর জ্ঞান। দীনি জ্ঞানের মূলে হচ্ছেন মহান আল্লাহ। তার পক্ষ থেকে হজরত জিব্রাইল (আ.)-এর মাধ্যমে ওহির জ্ঞান এসেছে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে। তার মাধ্যমে প্রাপ্ত শিক্ষা ও জ্ঞান ছড়িয়ে পড়েছে মুসলিম শিক্ষক, জ্ঞানী ও গবেষকদের মাধ্যমে। এ হিসেবে ইসলামের প্রথম শিক্ষাঙ্গন বা মাদরাসা হচ্ছে মক্কার নূরপর্বতের চূড়ায়। হেরা গুহায়। দ্বিতীয় মাদরাসা হচ্ছে, হারাম শরিফের সীমানায় সাহাবি আরকাম ইবনে আরকামের বাড়ি, দারুল আরকাম মাদরাসা। যার মহান শিক্ষক হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)। শিক্ষার্থী হলেন, মক্কী জীবনে ইসলামে দীক্ষিত সাহাবায়ে কেরাম। তৃতীয় মাদরাসা মসজিদে নববী। ছাত্র মাদানী জীবনের সাহাবায়ে কেরাম। যেখানে সুফফার ছাত্ররা পড়াশোনা করতেন। প্রথম আবাসিক মাদরাসার ছাত্রসমাজ আসহাবে সুফফা। হাবশার বেলাল, রুমের সুহাইব ও পারস্যের সালমান ছিলেন এখানে আন্তর্জাতিক বিশ্বের প্রতিনিধি। সুফফা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়। এখানকার শিক্ষাপ্রাপ্ত সাহাবায়ে কেরাম ছড়িয়ে পড়েন পৃথিবীর চারদিকে। এরপর আলেম সাহাবিরা যে যেখানে স্থায়ী হয়েছেন সেখানেই মাদরাসা চালু রেখেছেন। মাদরাসা চালুর সুন্নত তরিকা ছিল শুরুতে একটি মসজিদ করা। মসজিদ সংলগ্ন জায়গায় মাদরাসা ও খানকা বানানো। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) তায়েফে স্থায়ী হলে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। পাশে মাদরাসা করেন। সেখানে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ মুফাসসির হওয়ায় জ্ঞানপিপাসু শিক্ষার্থীরা আসত, তিনি তাদের দীনি শিক্ষা দিতেন। আরো গভীর তত্ত্ব ও মারেফত নিয়ে আলোচনার জন্য মাদরাসার পাশে নির্মিত একটি খাস কামরায় বিশিষ্ট শিক্ষার্থীরা একত্র হতো। সেখানে তিনি উচ্চতর শিক্ষা বিষয়ে আলোচনা করতেন। এটিই ছিল খানকার সূচনা। উম্মতের সেরা ফিকাহবিদ হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) আমিরুল মুমিনীন হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর নির্দেশে কুফা শহরে বসবাস করেন। সেখানে তিনিও একটি মাদরাসা চালু করেন। এ মাদরাসার মুহতামিম হন একাধারে তাবেয়ী ইবরাহিম নাখয়ী (রহ.), তারপর হজরত হাম্মাদ (রহ.) এবং তারপর হন ইমাম আযম আবু হানিফা (রহ.)। এরপর মুসলিম বিশ্বে হাজার হাজার মাদরাসা চালু হতে থাকে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ইসলামী শিক্ষার সূচনা ও বিস্তার

আপলোড টাইম : ১১:২৭:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ধর্ম ডেস্ক: মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আগমন করেন একটি ‘অশিক্ষিত’ জাতির মাঝে। তার আগমনের সময় আরবে উল্লেখযোগ্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল না। কোরানের সর্ব প্রথম নাজিলকৃত আয়াতগুলোতে শিক্ষার প্রতি বিশেষভাবে তাগিদ দেয়া হয়। সে অর্থে ইসলামী শিক্ষার শুরু হয় ওহির নূর থেকে। ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞানের শুরুতে আছে আল্লাহর জ্ঞান। দীনি জ্ঞানের মূলে হচ্ছেন মহান আল্লাহ। তার পক্ষ থেকে হজরত জিব্রাইল (আ.)-এর মাধ্যমে ওহির জ্ঞান এসেছে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে। তার মাধ্যমে প্রাপ্ত শিক্ষা ও জ্ঞান ছড়িয়ে পড়েছে মুসলিম শিক্ষক, জ্ঞানী ও গবেষকদের মাধ্যমে। এ হিসেবে ইসলামের প্রথম শিক্ষাঙ্গন বা মাদরাসা হচ্ছে মক্কার নূরপর্বতের চূড়ায়। হেরা গুহায়। দ্বিতীয় মাদরাসা হচ্ছে, হারাম শরিফের সীমানায় সাহাবি আরকাম ইবনে আরকামের বাড়ি, দারুল আরকাম মাদরাসা। যার মহান শিক্ষক হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)। শিক্ষার্থী হলেন, মক্কী জীবনে ইসলামে দীক্ষিত সাহাবায়ে কেরাম। তৃতীয় মাদরাসা মসজিদে নববী। ছাত্র মাদানী জীবনের সাহাবায়ে কেরাম। যেখানে সুফফার ছাত্ররা পড়াশোনা করতেন। প্রথম আবাসিক মাদরাসার ছাত্রসমাজ আসহাবে সুফফা। হাবশার বেলাল, রুমের সুহাইব ও পারস্যের সালমান ছিলেন এখানে আন্তর্জাতিক বিশ্বের প্রতিনিধি। সুফফা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়। এখানকার শিক্ষাপ্রাপ্ত সাহাবায়ে কেরাম ছড়িয়ে পড়েন পৃথিবীর চারদিকে। এরপর আলেম সাহাবিরা যে যেখানে স্থায়ী হয়েছেন সেখানেই মাদরাসা চালু রেখেছেন। মাদরাসা চালুর সুন্নত তরিকা ছিল শুরুতে একটি মসজিদ করা। মসজিদ সংলগ্ন জায়গায় মাদরাসা ও খানকা বানানো। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) তায়েফে স্থায়ী হলে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। পাশে মাদরাসা করেন। সেখানে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ মুফাসসির হওয়ায় জ্ঞানপিপাসু শিক্ষার্থীরা আসত, তিনি তাদের দীনি শিক্ষা দিতেন। আরো গভীর তত্ত্ব ও মারেফত নিয়ে আলোচনার জন্য মাদরাসার পাশে নির্মিত একটি খাস কামরায় বিশিষ্ট শিক্ষার্থীরা একত্র হতো। সেখানে তিনি উচ্চতর শিক্ষা বিষয়ে আলোচনা করতেন। এটিই ছিল খানকার সূচনা। উম্মতের সেরা ফিকাহবিদ হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) আমিরুল মুমিনীন হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর নির্দেশে কুফা শহরে বসবাস করেন। সেখানে তিনিও একটি মাদরাসা চালু করেন। এ মাদরাসার মুহতামিম হন একাধারে তাবেয়ী ইবরাহিম নাখয়ী (রহ.), তারপর হজরত হাম্মাদ (রহ.) এবং তারপর হন ইমাম আযম আবু হানিফা (রহ.)। এরপর মুসলিম বিশ্বে হাজার হাজার মাদরাসা চালু হতে থাকে।