ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ইজিবাইকের সঙ্গে সংঘর্ষে স্কুলছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৪৯:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / ৩০ বার পড়া হয়েছে

দামুড়হুদায় আত্মহত্যার ভয় দেখিয়ে কেনা মোটরসাইকেলই হলো কাল
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় আত্মহত্যার ভয় দেখিয়ে কেনা মোটরসাইকেলই মৃত্যুর কারণ হয়েছে রানা হোসেন (১৭) নামের এক কিশোরের। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় ব্যক্তিরা রানাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত রানা দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের শেখপাড়ার মীর হায়দার আলী ও বিউটি খাতুনের ছেলে এবং জয়রামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার দামুড়হুদার কয়েকজন যুবকের সঙ্গে মোটরসাইকেল নিয়ে রানার বাগবিতণ্ডা হয়। যে কারণে রানার বাবা মোটরসাইকেলটি ঘরের মধ্যে রেখে চাবি নিজের কাছে রেখেছিলেন। দুই দিন পর গতকাল দুপুরে মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে দামুড়হুদা বাজারের উদ্দেশে যাচ্ছিল রানা। এসময় শেখপাড়া থেকে প্রধান সড়কে উঠলে একটি বাইসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লেগে সামনে থেকে আসা একটি ইজিবাইকের সঙ্গে রানার মোটরসাইকেলের মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। স্থানীয় ব্যক্তিরা রক্তাক্ত অবস্থায় রানাকে দ্রুত উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাদিয়া আক্তার রানাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত রানার ফুফাত ভাই মোকলেসুর রহমান বলেন, ছয় ভাই বোনের মধ্যে রানা সকলের ছোট। পাঁচ বোনেরই বিয়ে হয়ে গেছে। রানা ছিল সকলের আদরের। দেড় বছর পূর্বে মোটরসাইকেল কেনার জন্য বাবা-মাকে চাপ দেয় রানা। মোটরসাইকেল কিনে না দিলে সে আত্মহত্যা করবে বলেও জানায়। কৃষক বাবা একমাত্র ছেলেকে হারানোর ভয়ে ছেলের পছন্দের অ্যাপাচি (ফোর-ভি) মোটরসাইকেল কিনে দেয়। কিন্তু কে জানত এই মোটরসাইকেলই তাঁদের একমাত্র ছেলের প্রাণ কেড়ে নেবে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাদিয়া আক্তার বলেন, ‘স্থানীয় ব্যক্তিরা দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রানাকে জরুরি বিভাগে নেয়। মোটরসাইকেলে দুর্ঘটনায় রানা আহত হয়েছিল বলে তারা জানান। জরুরি বিভাবে আমরা রানাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। হাসপাতালে নেওয়ার পূর্বেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।’
দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল খালেক বলেন, ‘দামুড়হুদার জয়রামপুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় রানা নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক রানাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত রানার পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় ও তাঁদের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়ায় লাশ দাফনের অনুমতি দিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করা হয়। ’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ইজিবাইকের সঙ্গে সংঘর্ষে স্কুলছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু

আপলোড টাইম : ০৮:৪৯:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১

দামুড়হুদায় আত্মহত্যার ভয় দেখিয়ে কেনা মোটরসাইকেলই হলো কাল
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় আত্মহত্যার ভয় দেখিয়ে কেনা মোটরসাইকেলই মৃত্যুর কারণ হয়েছে রানা হোসেন (১৭) নামের এক কিশোরের। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় ব্যক্তিরা রানাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত রানা দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের শেখপাড়ার মীর হায়দার আলী ও বিউটি খাতুনের ছেলে এবং জয়রামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার দামুড়হুদার কয়েকজন যুবকের সঙ্গে মোটরসাইকেল নিয়ে রানার বাগবিতণ্ডা হয়। যে কারণে রানার বাবা মোটরসাইকেলটি ঘরের মধ্যে রেখে চাবি নিজের কাছে রেখেছিলেন। দুই দিন পর গতকাল দুপুরে মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে দামুড়হুদা বাজারের উদ্দেশে যাচ্ছিল রানা। এসময় শেখপাড়া থেকে প্রধান সড়কে উঠলে একটি বাইসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লেগে সামনে থেকে আসা একটি ইজিবাইকের সঙ্গে রানার মোটরসাইকেলের মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। স্থানীয় ব্যক্তিরা রক্তাক্ত অবস্থায় রানাকে দ্রুত উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাদিয়া আক্তার রানাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত রানার ফুফাত ভাই মোকলেসুর রহমান বলেন, ছয় ভাই বোনের মধ্যে রানা সকলের ছোট। পাঁচ বোনেরই বিয়ে হয়ে গেছে। রানা ছিল সকলের আদরের। দেড় বছর পূর্বে মোটরসাইকেল কেনার জন্য বাবা-মাকে চাপ দেয় রানা। মোটরসাইকেল কিনে না দিলে সে আত্মহত্যা করবে বলেও জানায়। কৃষক বাবা একমাত্র ছেলেকে হারানোর ভয়ে ছেলের পছন্দের অ্যাপাচি (ফোর-ভি) মোটরসাইকেল কিনে দেয়। কিন্তু কে জানত এই মোটরসাইকেলই তাঁদের একমাত্র ছেলের প্রাণ কেড়ে নেবে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাদিয়া আক্তার বলেন, ‘স্থানীয় ব্যক্তিরা দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রানাকে জরুরি বিভাগে নেয়। মোটরসাইকেলে দুর্ঘটনায় রানা আহত হয়েছিল বলে তারা জানান। জরুরি বিভাবে আমরা রানাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। হাসপাতালে নেওয়ার পূর্বেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।’
দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল খালেক বলেন, ‘দামুড়হুদার জয়রামপুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় রানা নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক রানাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত রানার পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় ও তাঁদের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়ায় লাশ দাফনের অনুমতি দিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করা হয়। ’