ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ইউটিউবে ভিডিও দেখে বায়োফ্লোকে মাছ চাষে সফল ইয়াছিন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১৭:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ জুন ২০২০
  • / ৪১৭ বার পড়া হয়েছে

মিঠুন মাহমুদ:
জীবননগরে ইউটিউব চ্যানেলে বায়োফ্লোক পদ্ধতিতে মাছ চাষের ভিডিও দেখে বসতবাড়িতে বায়োফ্লোকে পাবদা মাছ চাষ করে সফল হয়েছেন ইয়াছিন। বাড়ির উঠানে পলিথিনের ঘের আর ইটের দেওয়াল দিয়ে পানিবদ্ধ করে সেখানে চাষ হচ্ছে মাছ। সল্প খরচে অল্প সময়ে বায়োফ্লোকে মাছ চাষ করে লাভবান হওয়ায় এলাকার বেকার যুবকেরা বায়োফ্লোক মাছ চাষে ঝুঁকে পড়ছেন।
জানা যায়, জীবননগর উপজেলার বাঁকা ইউনিয়নের প্রতাবপুর গ্রামের ইয়াছিন হোসেন পেশায় একজন ইলেকট্রিক ম্যাকানিক ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি ঢাকাতে কাজ করতেন। কাজের ফাঁকে পড়ে থাকতেন ইউটিউব নিয়ে। ইউটিউব চ্যানেলে বায়োফ্লোক পদ্ধতিতে মাছ চাষ দেখে তিনি নিজের বাড়িতে অল্প পরিসরে একটি ঘের তৈরি করেন এবং উদ্বুদ্ধ নিজেই বায়োফ্লোক তৈরি করে গত এক বছর আগে মাছ চাষ শুরু করেন। শুরুটা অল্প পরিসরে হলেও বর্তমান তিনি বাড়িতে তিনটি মাছের ঘের তৈরি করেছেন। মৎস্য চাষি ইয়াছিন হোসেন বলেন, ‘আমি গত তিন বছর আগে ঢাকাতে চাকরি করা অবস্থায় কাজের ফাঁকে ফাঁকে ইউটিউব চ্যানেল দেখতাম। এর মধ্যে দেখি পলিথিন কাগজে পানিবদ্ধ করে মাছ চাষ করছে বেশ কিছু যুবক। আমি মাছ চাষটা দেখে প্রথমে আশ^র্য হয়ে উঠি। বায়োফ্লোক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে কোনো পুকুর লাগে না, পলিথিন বা ইটের দেওয়াল তৈরি করেই মাছ চাষ করা যায় এবং অল্প সময়ের মধ্যে মাছগুলো বড় হয় ও মোটা অংকের টাকায় বাজারে বিক্রয় করা যায়। ইউটিউব চ্যানেলে দেখে আমি বাড়িতে এসে নিজে নিজেই বায়োফ্লোক মেশিন তৈরি করি এবং মাছের ডিম ফুটিয়ে ও মাছের ঘের করে সব মিলিয়ে আমি ৫০ হাজার টাকা খরচ করি। প্রথম বছরেই আমার মাছের ঘেরেই খরচ উঠে কিছুটা লাভ হয়। বর্তমান আমার ঘেরে ১২ হাজার মাছ আছে। যার বর্তমান বাজার মূল্যে ২ শ টাকা কেজি দরে বিক্রয় করলেও আমার খরচ-খরচা সব বাদ দিয়ে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা লাভ থাকবে।’ ইয়াছিনের বায়োফ্লোক মাছ চাষ এ উপজেলায় ব্যাপক হারে সাড়া পড়েছে। এদিকে ইয়াছিনের দাবি, যদি সরকারিভাবে তাঁকে সহযোগিতা করা হত, তাহলে মৎস্য চাষে তিনি আরও সফলতা পেতেন।
জীবননগর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফরহাদুর রেজা বলেন, ‘জীবননগর উপজেলায় ইয়াছিন সর্বপ্রথম জীবননগরে বায়োফ্লোক পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু করে। পরবর্তীতে আরও দুইজন এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করছে। ইয়াছিন মাছ চাষে সফল হয়েছে এবং বাকি দুইজন নতুন ভাবে শুরু করেছে। তবে এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করলে সহজেই লাভবান হওয়া যায়। আমরা উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে মাছ চাষের প্রশিক্ষণ দিয়েছি এবং অন্যান্য যেসব সুবিধা আছে, সেগুলোও তাদের দেওয়া হবে। আমরা সব সময় তাদের পাশে আছি। বেকার বাড়িতে বসে না থেকে যদি কেউ এ পদ্ধতি অবলম্বন করে মাছ চাষ কওে, তা হলে অবশ্যই সে লাভবান হবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

ইউটিউবে ভিডিও দেখে বায়োফ্লোকে মাছ চাষে সফল ইয়াছিন

আপলোড টাইম : ০৯:১৭:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ জুন ২০২০

মিঠুন মাহমুদ:
জীবননগরে ইউটিউব চ্যানেলে বায়োফ্লোক পদ্ধতিতে মাছ চাষের ভিডিও দেখে বসতবাড়িতে বায়োফ্লোকে পাবদা মাছ চাষ করে সফল হয়েছেন ইয়াছিন। বাড়ির উঠানে পলিথিনের ঘের আর ইটের দেওয়াল দিয়ে পানিবদ্ধ করে সেখানে চাষ হচ্ছে মাছ। সল্প খরচে অল্প সময়ে বায়োফ্লোকে মাছ চাষ করে লাভবান হওয়ায় এলাকার বেকার যুবকেরা বায়োফ্লোক মাছ চাষে ঝুঁকে পড়ছেন।
জানা যায়, জীবননগর উপজেলার বাঁকা ইউনিয়নের প্রতাবপুর গ্রামের ইয়াছিন হোসেন পেশায় একজন ইলেকট্রিক ম্যাকানিক ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি ঢাকাতে কাজ করতেন। কাজের ফাঁকে পড়ে থাকতেন ইউটিউব নিয়ে। ইউটিউব চ্যানেলে বায়োফ্লোক পদ্ধতিতে মাছ চাষ দেখে তিনি নিজের বাড়িতে অল্প পরিসরে একটি ঘের তৈরি করেন এবং উদ্বুদ্ধ নিজেই বায়োফ্লোক তৈরি করে গত এক বছর আগে মাছ চাষ শুরু করেন। শুরুটা অল্প পরিসরে হলেও বর্তমান তিনি বাড়িতে তিনটি মাছের ঘের তৈরি করেছেন। মৎস্য চাষি ইয়াছিন হোসেন বলেন, ‘আমি গত তিন বছর আগে ঢাকাতে চাকরি করা অবস্থায় কাজের ফাঁকে ফাঁকে ইউটিউব চ্যানেল দেখতাম। এর মধ্যে দেখি পলিথিন কাগজে পানিবদ্ধ করে মাছ চাষ করছে বেশ কিছু যুবক। আমি মাছ চাষটা দেখে প্রথমে আশ^র্য হয়ে উঠি। বায়োফ্লোক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করতে কোনো পুকুর লাগে না, পলিথিন বা ইটের দেওয়াল তৈরি করেই মাছ চাষ করা যায় এবং অল্প সময়ের মধ্যে মাছগুলো বড় হয় ও মোটা অংকের টাকায় বাজারে বিক্রয় করা যায়। ইউটিউব চ্যানেলে দেখে আমি বাড়িতে এসে নিজে নিজেই বায়োফ্লোক মেশিন তৈরি করি এবং মাছের ডিম ফুটিয়ে ও মাছের ঘের করে সব মিলিয়ে আমি ৫০ হাজার টাকা খরচ করি। প্রথম বছরেই আমার মাছের ঘেরেই খরচ উঠে কিছুটা লাভ হয়। বর্তমান আমার ঘেরে ১২ হাজার মাছ আছে। যার বর্তমান বাজার মূল্যে ২ শ টাকা কেজি দরে বিক্রয় করলেও আমার খরচ-খরচা সব বাদ দিয়ে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা লাভ থাকবে।’ ইয়াছিনের বায়োফ্লোক মাছ চাষ এ উপজেলায় ব্যাপক হারে সাড়া পড়েছে। এদিকে ইয়াছিনের দাবি, যদি সরকারিভাবে তাঁকে সহযোগিতা করা হত, তাহলে মৎস্য চাষে তিনি আরও সফলতা পেতেন।
জীবননগর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফরহাদুর রেজা বলেন, ‘জীবননগর উপজেলায় ইয়াছিন সর্বপ্রথম জীবননগরে বায়োফ্লোক পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু করে। পরবর্তীতে আরও দুইজন এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করছে। ইয়াছিন মাছ চাষে সফল হয়েছে এবং বাকি দুইজন নতুন ভাবে শুরু করেছে। তবে এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করলে সহজেই লাভবান হওয়া যায়। আমরা উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে মাছ চাষের প্রশিক্ষণ দিয়েছি এবং অন্যান্য যেসব সুবিধা আছে, সেগুলোও তাদের দেওয়া হবে। আমরা সব সময় তাদের পাশে আছি। বেকার বাড়িতে বসে না থেকে যদি কেউ এ পদ্ধতি অবলম্বন করে মাছ চাষ কওে, তা হলে অবশ্যই সে লাভবান হবে।’