ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আসছে দূষণখেকো বাড়ি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৬:০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ এপ্রিল ২০১৮
  • / ৬৭৯ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক: প্যারিস ভিত্তিক স্থপতি ভিনসেন্ট ক্যালেবট নতুন এক স্বপ্ন দেখেছেন। তিনি এখন থেকে আর ভবনের গতানুগতিক ডিজাইন করবেন না। সভ্যতার উন্নয়নের সাথে সাথে যেভাবে উষ্ণায়ন ও পরিবেশ দূষণ বেড়ে চলেছে তার বিরুদ্ধে তিনি লড়তে চান নিজের স্থাপত্য মেধা দিয়ে। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তার নকশা করা সব ভবন হবে পরিবেশবান্ধব। সোজা কথায় ‘দূষণখেকো’। এভাবেই তিনি বিশ্ব উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন। এই স্থপতি বলেছেন, তার ভাবনায় এখন শুধু ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। তারা যাতে সুস্থ সুন্দরভাবে জীবন কাটিয়ে যেতে পারে সেই লক্ষ্যে কাজ করবেন তিনি। ইতিমধ্যে তিনি তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেতে শুরু করে দিয়েছেন তার প্রথম ‘ইকো-ফ্রেন্ডলি’ অট্টালিকা তৈরির কাজ। চলতি বছরের শেষ নাগাদ এটি সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে যাবে। অবিশ্বাস্য শোনালেও সত্য, এই ভবনের ‘শরীরের’ চারপাশজুড়ে লাগানো হবে ২৩ হাজার ছোটবড় গাছ। অর্থাৎ এই বাড়িতে বাস করা হবে একটা ছোটখাটো বনের ভিতর বাস করার মতো। এসব গাছে বনের গাছপালার মতো পাখিরা বাসা বাধবে। বাস করবে কাঠবিড়ালি, বানর ইত্যাদির মতো গেছো প্রাণীরাও। এটি নিচ থেকে উপর পর্যন্ত যেতে যেতে ৯০ ডিগ্রী কোনে বাক খাবে। স্থপতি ভিনসেন্ট জানিয়েছেন তার ডিজাইন করা প্রতিটি ভবন বছরে বাতাস থেকে ১৩০ টন করে বিষাক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে নিতে পারবে। শহরের রাস্তায় হাজার হাজার গাড়ির ধোঁয়া যে পরিমাণ পরিবেশ দূষণ সৃষ্টি করে তা সবার জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই একটি বাড়ি যদি ১৩০ টন কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে নেয় তবে সেটা মানুষের জন্য আশীর্বাদই বটে। ভিনসেন্ট তাইপেতে যে ভবনটি তৈরি করছেন তা কেবল ইকো-ফ্রেন্ডলি নয়, এনার্জি সেভারও বটে। এর ডিজাইন এমন যে দিনের বেলায় ঘরের ভেতর কোনো বাতি জ্বালানোর দরকার পড়বে না। প্রটচুর আলো ঘরে ঢুকতে পারবে। এর সুপরিকল্পিত ভেন্টিলেশন ব্যবস্থাও ঘরে এসি লাগানোর প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে দেবে। ছাদে বসানো হবে অসংখ্য সোলার প্যানেল যা থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ ভবনের প্রয়োজন মিটিয়েও বাইরের কাজে ব্যবহার করা যাবে। আর বর্ষাকালে এই ভবনের উপর পড়া বৃষ্টির পুরোটাই রিসাইক্লিং করে বিশুদ্ধ খাবার পানি হিসেবে সরবরাহ করা হবে। তিনি স্বপ্ন দেখেন ২০৫০ সাল নাগাদ তার প্রিয় শহর প্যারিসকেও পুরোপুরি গ্রিন সিটিতে পরিণত করবেন। তখন শহুরে মানুষও গ্রামের সবুজ পরিবেশ ও নির্মল বাতাসের মধ্যে থাকার অনুভূতি পাবে। ধরণীকে বাঁচাতে গেলে এ ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ ছাড়া উপায় নেই বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আসছে দূষণখেকো বাড়ি

আপলোড টাইম : ০৬:০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ এপ্রিল ২০১৮

প্রযুক্তি ডেস্ক: প্যারিস ভিত্তিক স্থপতি ভিনসেন্ট ক্যালেবট নতুন এক স্বপ্ন দেখেছেন। তিনি এখন থেকে আর ভবনের গতানুগতিক ডিজাইন করবেন না। সভ্যতার উন্নয়নের সাথে সাথে যেভাবে উষ্ণায়ন ও পরিবেশ দূষণ বেড়ে চলেছে তার বিরুদ্ধে তিনি লড়তে চান নিজের স্থাপত্য মেধা দিয়ে। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তার নকশা করা সব ভবন হবে পরিবেশবান্ধব। সোজা কথায় ‘দূষণখেকো’। এভাবেই তিনি বিশ্ব উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন। এই স্থপতি বলেছেন, তার ভাবনায় এখন শুধু ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। তারা যাতে সুস্থ সুন্দরভাবে জীবন কাটিয়ে যেতে পারে সেই লক্ষ্যে কাজ করবেন তিনি। ইতিমধ্যে তিনি তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেতে শুরু করে দিয়েছেন তার প্রথম ‘ইকো-ফ্রেন্ডলি’ অট্টালিকা তৈরির কাজ। চলতি বছরের শেষ নাগাদ এটি সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে যাবে। অবিশ্বাস্য শোনালেও সত্য, এই ভবনের ‘শরীরের’ চারপাশজুড়ে লাগানো হবে ২৩ হাজার ছোটবড় গাছ। অর্থাৎ এই বাড়িতে বাস করা হবে একটা ছোটখাটো বনের ভিতর বাস করার মতো। এসব গাছে বনের গাছপালার মতো পাখিরা বাসা বাধবে। বাস করবে কাঠবিড়ালি, বানর ইত্যাদির মতো গেছো প্রাণীরাও। এটি নিচ থেকে উপর পর্যন্ত যেতে যেতে ৯০ ডিগ্রী কোনে বাক খাবে। স্থপতি ভিনসেন্ট জানিয়েছেন তার ডিজাইন করা প্রতিটি ভবন বছরে বাতাস থেকে ১৩০ টন করে বিষাক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে নিতে পারবে। শহরের রাস্তায় হাজার হাজার গাড়ির ধোঁয়া যে পরিমাণ পরিবেশ দূষণ সৃষ্টি করে তা সবার জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই একটি বাড়ি যদি ১৩০ টন কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে নেয় তবে সেটা মানুষের জন্য আশীর্বাদই বটে। ভিনসেন্ট তাইপেতে যে ভবনটি তৈরি করছেন তা কেবল ইকো-ফ্রেন্ডলি নয়, এনার্জি সেভারও বটে। এর ডিজাইন এমন যে দিনের বেলায় ঘরের ভেতর কোনো বাতি জ্বালানোর দরকার পড়বে না। প্রটচুর আলো ঘরে ঢুকতে পারবে। এর সুপরিকল্পিত ভেন্টিলেশন ব্যবস্থাও ঘরে এসি লাগানোর প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে দেবে। ছাদে বসানো হবে অসংখ্য সোলার প্যানেল যা থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ ভবনের প্রয়োজন মিটিয়েও বাইরের কাজে ব্যবহার করা যাবে। আর বর্ষাকালে এই ভবনের উপর পড়া বৃষ্টির পুরোটাই রিসাইক্লিং করে বিশুদ্ধ খাবার পানি হিসেবে সরবরাহ করা হবে। তিনি স্বপ্ন দেখেন ২০৫০ সাল নাগাদ তার প্রিয় শহর প্যারিসকেও পুরোপুরি গ্রিন সিটিতে পরিণত করবেন। তখন শহুরে মানুষও গ্রামের সবুজ পরিবেশ ও নির্মল বাতাসের মধ্যে থাকার অনুভূতি পাবে। ধরণীকে বাঁচাতে গেলে এ ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ ছাড়া উপায় নেই বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।