ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গায় সিন্ডিকেট করে ঔষধের মূল্য বৃদ্ধি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ডিসেম্বর ২০১৮
  • / ৩৭৭ বার পড়া হয়েছে

আলমডাঙ্গা অফিস: আলমডাঙ্গা ড্রাগ সমিতি সিন্ডিকেট করে আরোপিত মূল্যে ঔষধ বিক্রি করতে বাধ্য করায় বৃদ্ধি পেয়েছে ঔষধের মূল্য। সমিতি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম দামে ঔষধ বিক্রি করলেই সংশ্লিষ্ট ফার্মেসী মালিকের উপর নেমে আসে সমিতির কঠোর শাস্তির খড়গ। ফলে সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছে হতদরিদ্র মানুষ।
জানা গেছে, সম্প্রতি আলমডাঙ্গা ড্রাগ সমিতি ঔষধ বিক্রির ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। সমিতির নির্ধারিত মূল্যে ঔষধ বিক্রির বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছে ওই সিন্ডিকেট। ফলে কোন ফার্মেসী মালিক লাভ কম রেখে কিংবা লাভ না রেখে ঔষধ বিক্রি করতে পারছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আলমডাঙ্গা শহরের এক ঔষধ ব্যবসায়ী জানান, ইচ্ছে থাকলেও কম লাভ করে ঔষধ বিক্রি করতে পারছি না। আত্মীয় এমন কী হতদরিদ্রের নিকটও বিনা লাভে ঔষধ বিক্রি করতে পারি না। এ সিন্ডিকেট করার আগে তারা ঔষধের মোড়কের গায়ের দামের অনেক কম মূল্যে ঔষধ কিনেছে। রাতারাতি এত বেশি দাম তাদের নিকট থেকে নিতে নিজেরও লজ্জা লাগে। কনা ফার্মেসীর মালিক জানান, দরিদ্র মানুষ ছাড়াও আত্মীয়-স্বজন ও গুরুজনদের নিকট নামমাত্র লাভে ঔষধ বিক্রি করতাম। কিন্তু এখন সমিতি ভয়ে আর সম্ভব হচ্ছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন ফার্মেসী মালিক জানান, টপটেন কোম্পানীর ঔষধের ক্ষেত্রে ১৩ পার্সেন্ট ও অন্যান্য কোম্পানির ঔষধের ক্ষেত্রে ত্রিশ পার্সেন্ট কমিশন থাকে। ছোট ছোট ফার্মেসী ও গ্রামের বাজারের ফার্মেসীগুলো সাধারণত টপটেন কোম্পানির ঔষধ বিক্রি করেন না। সেক্ষেত্রে গ্রামের দরিদ্র মানুষের নিকট তারা ঔষধের মোড়কের গায়ের মূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে বিক্রি করতে পারেন। কিন্তু সমিতির সিন্ডিকেটের কারণে দরিদ্র মানুষ এখন বঞ্চিত হচ্ছেন। কম দামে ঔষধ বিক্রির কারণে ড্রাগ সমিতি আলমডাঙ্গা হাইরোডের দীপ্ত ফার্মেসীকে ৫শ টাকা জরিমানা করেছে।
এদিকে, ঔষধ বিক্রি বিষয়ে এমন নির্মম সিন্ডিকেট গড়ে ওঠায় ফুঁসে উঠেছে আলমডাঙ্গাবাসী। ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তোলার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সকলকে ভোক্তা অধিকার আইন নিয়ে সোচ্চার হতে আহ্বান করা হচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে গতকাল আলমডাঙ্গা উপজেলা ড্রাগ সমিতির সভাপতি আকবর আলী আকুসহ এক প্রতিনিধি দল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট যান। তারা মোড়কেরর গায়ের মূল্যের চেয়ে ২ পার্সেন্ট কম দামে ঔষধ বিক্রির প্রস্তাব দেন। কিন্তু তাদের প্রস্তাবে সাড়া দেননি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাহাত মান্নান। তিনি বলেছেন, কে কত ছাড়ে ঔষধ বিক্রি করবে সেটা তার নিজস্ব ব্যাপার। এখানে বিক্রেতার স্বাধীনতা পুরোপুরি থাকতে হবে। বিক্রেতার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হলে সমিতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবেন বলেও তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আলমডাঙ্গায় সিন্ডিকেট করে ঔষধের মূল্য বৃদ্ধি

আপলোড টাইম : ১১:০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ডিসেম্বর ২০১৮

আলমডাঙ্গা অফিস: আলমডাঙ্গা ড্রাগ সমিতি সিন্ডিকেট করে আরোপিত মূল্যে ঔষধ বিক্রি করতে বাধ্য করায় বৃদ্ধি পেয়েছে ঔষধের মূল্য। সমিতি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম দামে ঔষধ বিক্রি করলেই সংশ্লিষ্ট ফার্মেসী মালিকের উপর নেমে আসে সমিতির কঠোর শাস্তির খড়গ। ফলে সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছে হতদরিদ্র মানুষ।
জানা গেছে, সম্প্রতি আলমডাঙ্গা ড্রাগ সমিতি ঔষধ বিক্রির ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। সমিতির নির্ধারিত মূল্যে ঔষধ বিক্রির বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছে ওই সিন্ডিকেট। ফলে কোন ফার্মেসী মালিক লাভ কম রেখে কিংবা লাভ না রেখে ঔষধ বিক্রি করতে পারছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আলমডাঙ্গা শহরের এক ঔষধ ব্যবসায়ী জানান, ইচ্ছে থাকলেও কম লাভ করে ঔষধ বিক্রি করতে পারছি না। আত্মীয় এমন কী হতদরিদ্রের নিকটও বিনা লাভে ঔষধ বিক্রি করতে পারি না। এ সিন্ডিকেট করার আগে তারা ঔষধের মোড়কের গায়ের দামের অনেক কম মূল্যে ঔষধ কিনেছে। রাতারাতি এত বেশি দাম তাদের নিকট থেকে নিতে নিজেরও লজ্জা লাগে। কনা ফার্মেসীর মালিক জানান, দরিদ্র মানুষ ছাড়াও আত্মীয়-স্বজন ও গুরুজনদের নিকট নামমাত্র লাভে ঔষধ বিক্রি করতাম। কিন্তু এখন সমিতি ভয়ে আর সম্ভব হচ্ছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন ফার্মেসী মালিক জানান, টপটেন কোম্পানীর ঔষধের ক্ষেত্রে ১৩ পার্সেন্ট ও অন্যান্য কোম্পানির ঔষধের ক্ষেত্রে ত্রিশ পার্সেন্ট কমিশন থাকে। ছোট ছোট ফার্মেসী ও গ্রামের বাজারের ফার্মেসীগুলো সাধারণত টপটেন কোম্পানির ঔষধ বিক্রি করেন না। সেক্ষেত্রে গ্রামের দরিদ্র মানুষের নিকট তারা ঔষধের মোড়কের গায়ের মূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে বিক্রি করতে পারেন। কিন্তু সমিতির সিন্ডিকেটের কারণে দরিদ্র মানুষ এখন বঞ্চিত হচ্ছেন। কম দামে ঔষধ বিক্রির কারণে ড্রাগ সমিতি আলমডাঙ্গা হাইরোডের দীপ্ত ফার্মেসীকে ৫শ টাকা জরিমানা করেছে।
এদিকে, ঔষধ বিক্রি বিষয়ে এমন নির্মম সিন্ডিকেট গড়ে ওঠায় ফুঁসে উঠেছে আলমডাঙ্গাবাসী। ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। প্রতিরোধ কমিটি গড়ে তোলার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সকলকে ভোক্তা অধিকার আইন নিয়ে সোচ্চার হতে আহ্বান করা হচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে গতকাল আলমডাঙ্গা উপজেলা ড্রাগ সমিতির সভাপতি আকবর আলী আকুসহ এক প্রতিনিধি দল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট যান। তারা মোড়কেরর গায়ের মূল্যের চেয়ে ২ পার্সেন্ট কম দামে ঔষধ বিক্রির প্রস্তাব দেন। কিন্তু তাদের প্রস্তাবে সাড়া দেননি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাহাত মান্নান। তিনি বলেছেন, কে কত ছাড়ে ঔষধ বিক্রি করবে সেটা তার নিজস্ব ব্যাপার। এখানে বিক্রেতার স্বাধীনতা পুরোপুরি থাকতে হবে। বিক্রেতার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হলে সমিতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবেন বলেও তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন।