ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে মাদকব্যবসায়ী সাধু নিহত : অস্ত্র-গুলি ও ফেনসিডিল উদ্ধার

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৬:৩০:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ মে ২০১৮
  • / ৭৭৭ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহসহ সারাদেশে মাদক নির্মূলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান : ৭ জেলায় নিহত-৯
ঘটনাস্থল থেকে ফিরে এসএম শাফায়েত/আফজালুল হক: সারাদেশে মাদক নির্মূলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান চলছে। এরই অংশ হিসেবে রোববার রাত থেকে সোমবার সকালের মধ্যে সাত জেলায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে ৯ জন নিহত হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযোগ তারা সবাই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কারও কারও বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনে একাধিক মামলাও রয়েছে। এর মধ্যে টাঙ্গাইলে, রাজশাহী, ঝিনাইদহ ও নরসিংদীতে র‌্যাবের গুলিতে চারজন এবং চুয়াডাঙ্গায় ও গাজীপুরের টঙ্গীতে পুলিশের গুলিতে দুইজন নিহত হয়েছেন। আর যশোরে তিনজনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ বলেছে, মাদক কারবারিদের মধ্যে গোলাগুলিতে তাদের মৃত্যু হয়েছে।


এদিকে, আলমডাঙ্গা রেল স্টেশনের পশ্চিম পাশের মাঠে মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে কামরুজ্জামান সাধু খাঁ (৪৫) নামের অপর এক শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে আলমডাঙ্গা রেল স্টেশনের পশ্চিম পাশের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, ৩ রাউন্ড গুলি এবং ১ বস্তা ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে। বন্দুকযুদ্ধে আলমডাঙ্গা থানার ৪ পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। নিহত কামরুজ্জামান সাধু আলমডাঙ্গা উপজেলার হারদী থানাপাড়ার মৃত এমদাদুলের ছেলে। সে এতদাঞ্চলের শীর্ষ মাদকব্যবসায়ী; তার নামে আলমডাঙ্গা থানায় ১২টি মাদক মামলা রয়েছে।

পুলিশ জানায়, আলমডাঙ্গা স্টেশনের পশ্চিম দিকের একটি জঙ্গলের ভেতরে ৮/১০ জন মাদক বিক্রেতা অবস্থান করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি দল ওই স্থানে অভিযান চালায়। রাত দেড়টার দিকে পুলিশের টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছালে মাদক বিক্রেতারা পুলিশের ওপর গুলি চালায়। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী দুই পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ হয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কামরুজ্জামানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এদিকে বন্দুকযুদ্ধের সময় আলমডাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিয়াউর রহমান, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আব্দুল হামিদ, কনস্টেবল মাসুদ রানা ও কনস্টেবল রাকিবুল হোসেন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খাঁন জানান, ঘটনাস্থল তল্লাশি করে একটি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি ও এক বস্তা ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে। কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা থানায় মাদক পাচারসহ ১২টি মামলা রয়েছে। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, নিহতের মাথায় ও বুকে একটি করে দু’টি গুলির চিহ্ন প্রাথমিক ভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ থেকেই তার মৃত্যু হয়েছে।ঝিনাইদহ অফিস জানিয়েছে, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নরেন্দ্রপুর এলাকার র‌্যাবের সঙ্গে “বন্দুকযুদ্ধে” ছব্দুল মন্ডল (৪৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। তিনি নরেন্দ্রপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। এসময় র‌্যাব ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশী নাইন এমএম পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, ১০০ বোতল ফেনসিডিল, ১৫০ পিস ইয়াবা ও একটি হেলমেট উদ্ধার করেছে। ঝিনাইদহ র‌্যাব-৬ এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক এএসপি গোলাম মোর্শেদের ভাষ্যমতে, গত রোববার দিনগত রাত ১.৩০টার সময় র‌্যাব-৬ এর একটি টহল দল নরেন্দ্রপুর গ্রামের মাঠে চেকপোষ্ট বসিয়ে টহলে ছিল। এ সময় মাদকের চালান নিয়ে ছব্দুল মন্ডল ও তার সহযোগীরা মটরসাইকেল নিয়ে যাচ্ছিল। র‌্যাব সদস্যরা এ সময় তাদের চ্যালেঞ্জ করলে মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। র‌্যাব ও পাল্টা গুলি ছোড়ে। উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলিতে ছব্দুল মন্ডল নিহত হন। বাকি ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। এসময় র‌্যাব ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশী নাইন এমএম পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, ১০০ বোতল ফেনসিডিল, ১৫০ পিস ইয়াবা ও একটি হেলমেট উদ্ধার করে। কালীগঞ্জ থানার ওসি মিজানুর রহমান খান বলেন, বন্দুকযুদ্ধে নিহতের লাশ প্রথমে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আলমডাঙ্গায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে মাদকব্যবসায়ী সাধু নিহত : অস্ত্র-গুলি ও ফেনসিডিল উদ্ধার

আপলোড টাইম : ০৬:৩০:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ মে ২০১৮

চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহসহ সারাদেশে মাদক নির্মূলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান : ৭ জেলায় নিহত-৯
ঘটনাস্থল থেকে ফিরে এসএম শাফায়েত/আফজালুল হক: সারাদেশে মাদক নির্মূলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান চলছে। এরই অংশ হিসেবে রোববার রাত থেকে সোমবার সকালের মধ্যে সাত জেলায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে ৯ জন নিহত হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযোগ তারা সবাই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কারও কারও বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনে একাধিক মামলাও রয়েছে। এর মধ্যে টাঙ্গাইলে, রাজশাহী, ঝিনাইদহ ও নরসিংদীতে র‌্যাবের গুলিতে চারজন এবং চুয়াডাঙ্গায় ও গাজীপুরের টঙ্গীতে পুলিশের গুলিতে দুইজন নিহত হয়েছেন। আর যশোরে তিনজনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ বলেছে, মাদক কারবারিদের মধ্যে গোলাগুলিতে তাদের মৃত্যু হয়েছে।


এদিকে, আলমডাঙ্গা রেল স্টেশনের পশ্চিম পাশের মাঠে মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে কামরুজ্জামান সাধু খাঁ (৪৫) নামের অপর এক শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে আলমডাঙ্গা রেল স্টেশনের পশ্চিম পাশের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, ৩ রাউন্ড গুলি এবং ১ বস্তা ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে। বন্দুকযুদ্ধে আলমডাঙ্গা থানার ৪ পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। নিহত কামরুজ্জামান সাধু আলমডাঙ্গা উপজেলার হারদী থানাপাড়ার মৃত এমদাদুলের ছেলে। সে এতদাঞ্চলের শীর্ষ মাদকব্যবসায়ী; তার নামে আলমডাঙ্গা থানায় ১২টি মাদক মামলা রয়েছে।

পুলিশ জানায়, আলমডাঙ্গা স্টেশনের পশ্চিম দিকের একটি জঙ্গলের ভেতরে ৮/১০ জন মাদক বিক্রেতা অবস্থান করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি দল ওই স্থানে অভিযান চালায়। রাত দেড়টার দিকে পুলিশের টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছালে মাদক বিক্রেতারা পুলিশের ওপর গুলি চালায়। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী দুই পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ হয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কামরুজ্জামানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এদিকে বন্দুকযুদ্ধের সময় আলমডাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিয়াউর রহমান, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আব্দুল হামিদ, কনস্টেবল মাসুদ রানা ও কনস্টেবল রাকিবুল হোসেন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খাঁন জানান, ঘটনাস্থল তল্লাশি করে একটি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি ও এক বস্তা ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে। কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা থানায় মাদক পাচারসহ ১২টি মামলা রয়েছে। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, নিহতের মাথায় ও বুকে একটি করে দু’টি গুলির চিহ্ন প্রাথমিক ভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ থেকেই তার মৃত্যু হয়েছে।ঝিনাইদহ অফিস জানিয়েছে, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নরেন্দ্রপুর এলাকার র‌্যাবের সঙ্গে “বন্দুকযুদ্ধে” ছব্দুল মন্ডল (৪৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। তিনি নরেন্দ্রপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। এসময় র‌্যাব ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশী নাইন এমএম পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, ১০০ বোতল ফেনসিডিল, ১৫০ পিস ইয়াবা ও একটি হেলমেট উদ্ধার করেছে। ঝিনাইদহ র‌্যাব-৬ এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক এএসপি গোলাম মোর্শেদের ভাষ্যমতে, গত রোববার দিনগত রাত ১.৩০টার সময় র‌্যাব-৬ এর একটি টহল দল নরেন্দ্রপুর গ্রামের মাঠে চেকপোষ্ট বসিয়ে টহলে ছিল। এ সময় মাদকের চালান নিয়ে ছব্দুল মন্ডল ও তার সহযোগীরা মটরসাইকেল নিয়ে যাচ্ছিল। র‌্যাব সদস্যরা এ সময় তাদের চ্যালেঞ্জ করলে মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। র‌্যাব ও পাল্টা গুলি ছোড়ে। উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলিতে ছব্দুল মন্ডল নিহত হন। বাকি ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। এসময় র‌্যাব ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশী নাইন এমএম পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, ১০০ বোতল ফেনসিডিল, ১৫০ পিস ইয়াবা ও একটি হেলমেট উদ্ধার করে। কালীগঞ্জ থানার ওসি মিজানুর রহমান খান বলেন, বন্দুকযুদ্ধে নিহতের লাশ প্রথমে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।