ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গায় এডিপি কাজে অনিয়মের অভিযোগ!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ জুন ২০২০
  • / ২০৫ বার পড়া হয়েছে

আলমডাঙ্গায় এডিপি কাজে অনিয়মের অভিযোগ!প্রতিবেদক, আলমডাঙ্গা:
আলমডাঙ্গার কেদারনগর গ্রামে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের যোগসাজসে বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল (এডিপির) প্রকল্পের টাকায় রাস্তা নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে এলাকাবাসী। প্রভাব খাটিয়ে বরাদ্দকৃত রাস্তায় নিম্নমানের ইট ও অর্ধেক রাস্তা নির্মাণ করেই বিল উত্তোলনের পাঁয়তারা করছেন ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যান।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় প্রায় ২ কোটি ৭৯ লাখ টাকার এডিপি ও ইউডিপি প্রকল্পের বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ৩০ জুনের মধ্যে শতভাগ কাজ বাস্তবায়ন করে অর্থ উত্তোলনে সরকারি নির্দেশনা ছিল। জানা যায়, আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি ইউনিয়নের জন্য এডিপি প্রকল্পের ৩টি রাস্তা সোলিংকরণ ও একটি ঈদগাহ মাঠের জন্য গেট নির্মাণকাজের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ৫ লাখ ১৫ হাজার ৬ শ টাকা।
সরেজমিন দেখা গেছে, আলমডাঙ্গা বেলগাছি ইউনিয়নের কেদারনগর গ্রামের পূর্বপাড়ায় মেইন রাস্তার পাশে শাহ সর্দ্দারের বাড়ি থেকে আসমতের বাড়ি পর্যন্ত ইটের রাস্তায় সোলিং কাজের জন্য ১ লাখ টাকা বরাদ্দ পায়। রাস্তা আসমতের বাড়ি পর্যন্ত শেষ হওয়ার কথা কাগজে থাকলেও আসলামের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার কাজ শেষ হয়। এছাড়াও, পূর্ব পাড়ায় মেইন রাস্তার ইয়াকুব ফারাজির বাড়ি হতে জোয়ার্দ্দার বাড়ি পর্যন্ত ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা সোলিং করণে বরাদ্দ পায়। এই রাস্তায় ও জোয়ার্দ্দার পাড়ার মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা বোরহান জোয়ার্দ্দারের জমি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ করে।
এদিকে, গত বছরের প্রকল্পের এডিপি সোলিং রাস্তা নির্মাণ করা হয়। সেই রাস্তায় আবারও এডিপি কাজের বরাদ্দ দেয় স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যান। এডিপি বরাদ্দে আপান মণ্ডলের বাড়ি হতে হাতেম মালিথার বাড়ি পর্যন্ত সোলিং রাস্তা নির্মাণে ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। কিন্ত গত বছর আপান মণ্ডলের বাড়ি হতে দুখু বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ কাজ শেষ করেছে। এ বছরে আবারো দুখুর বাড়ি হতে হাতেম মালিথার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ করছে। কিন্তু প্রায় ১ শ ফিট রাস্তার বরাদ্দ পুরোই পকেটে তোলার চেষ্টায় ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যানগণ। এই রাস্তাগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানে ইট। যা রাস্তা নির্মাণের জন্য অনুপযোগী। রাস্তায় ৫ ইঞ্চি বালি দেওয়ার নিয়ম থাকলেও তা ২ ইঞ্চিতে পরিণত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
কেদারনগর গ্রামের আফাজ, সাদেক, সফি, দেলোয়ারসহ অনেকে দাবি তোলেন, রাস্তায় ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে। দেখার কেউ নেই। আমরা কার কাছে অভিযোগ করবো। তারা ভোটের সময় পা ধরতে আসে, কিন্তু রাস্তা নির্মাণের সময় তাদের পা ধরলেও রাস্তা নির্মাণ উন্নয়নমূলক হয় না।
এ ব্যাপারে কেদারনগর গ্রামের ইউপি সদস্য ও কাজের পিআইসি হিসাবে দায়িত্বরত বাবুল হোসেন বলেন, কাজ সব সঠিকভাবেই হচ্ছে।
এই ব্যাপারে আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ বলেন, ‘কেদারনগর গ্রামে রাস্তা নির্মাণে অনিয়মের বিষয়টি মোবাইলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। আমি ঘটনাস্থলে ইঞ্জিনিয়ার পাঠিয়ে সঠিকভাবে কাজ বুঝে নিবো।’
আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন আলী বলেন, ‘এডিপি কাজে কোনো ধরণের অনিয়ম মেনে নেওয়া যাবে না। যদি কোনো নিম্নমানের সামগ্রী অথবা রাস্তা কম করে, তা সঠিক নিয়মে কাজ করে জনগণের স্বার্থে সরকারকে বুঝিয়ে দিতে হবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আলমডাঙ্গায় এডিপি কাজে অনিয়মের অভিযোগ!

আপলোড টাইম : ০৯:২৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ জুন ২০২০

আলমডাঙ্গায় এডিপি কাজে অনিয়মের অভিযোগ!প্রতিবেদক, আলমডাঙ্গা:
আলমডাঙ্গার কেদারনগর গ্রামে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের যোগসাজসে বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল (এডিপির) প্রকল্পের টাকায় রাস্তা নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে এলাকাবাসী। প্রভাব খাটিয়ে বরাদ্দকৃত রাস্তায় নিম্নমানের ইট ও অর্ধেক রাস্তা নির্মাণ করেই বিল উত্তোলনের পাঁয়তারা করছেন ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যান।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় প্রায় ২ কোটি ৭৯ লাখ টাকার এডিপি ও ইউডিপি প্রকল্পের বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ৩০ জুনের মধ্যে শতভাগ কাজ বাস্তবায়ন করে অর্থ উত্তোলনে সরকারি নির্দেশনা ছিল। জানা যায়, আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি ইউনিয়নের জন্য এডিপি প্রকল্পের ৩টি রাস্তা সোলিংকরণ ও একটি ঈদগাহ মাঠের জন্য গেট নির্মাণকাজের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ৫ লাখ ১৫ হাজার ৬ শ টাকা।
সরেজমিন দেখা গেছে, আলমডাঙ্গা বেলগাছি ইউনিয়নের কেদারনগর গ্রামের পূর্বপাড়ায় মেইন রাস্তার পাশে শাহ সর্দ্দারের বাড়ি থেকে আসমতের বাড়ি পর্যন্ত ইটের রাস্তায় সোলিং কাজের জন্য ১ লাখ টাকা বরাদ্দ পায়। রাস্তা আসমতের বাড়ি পর্যন্ত শেষ হওয়ার কথা কাগজে থাকলেও আসলামের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার কাজ শেষ হয়। এছাড়াও, পূর্ব পাড়ায় মেইন রাস্তার ইয়াকুব ফারাজির বাড়ি হতে জোয়ার্দ্দার বাড়ি পর্যন্ত ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা সোলিং করণে বরাদ্দ পায়। এই রাস্তায় ও জোয়ার্দ্দার পাড়ার মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা বোরহান জোয়ার্দ্দারের জমি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ করে।
এদিকে, গত বছরের প্রকল্পের এডিপি সোলিং রাস্তা নির্মাণ করা হয়। সেই রাস্তায় আবারও এডিপি কাজের বরাদ্দ দেয় স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যান। এডিপি বরাদ্দে আপান মণ্ডলের বাড়ি হতে হাতেম মালিথার বাড়ি পর্যন্ত সোলিং রাস্তা নির্মাণে ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। কিন্ত গত বছর আপান মণ্ডলের বাড়ি হতে দুখু বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ কাজ শেষ করেছে। এ বছরে আবারো দুখুর বাড়ি হতে হাতেম মালিথার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ করছে। কিন্তু প্রায় ১ শ ফিট রাস্তার বরাদ্দ পুরোই পকেটে তোলার চেষ্টায় ইউপি মেম্বার ও চেয়ারম্যানগণ। এই রাস্তাগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানে ইট। যা রাস্তা নির্মাণের জন্য অনুপযোগী। রাস্তায় ৫ ইঞ্চি বালি দেওয়ার নিয়ম থাকলেও তা ২ ইঞ্চিতে পরিণত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
কেদারনগর গ্রামের আফাজ, সাদেক, সফি, দেলোয়ারসহ অনেকে দাবি তোলেন, রাস্তায় ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে। দেখার কেউ নেই। আমরা কার কাছে অভিযোগ করবো। তারা ভোটের সময় পা ধরতে আসে, কিন্তু রাস্তা নির্মাণের সময় তাদের পা ধরলেও রাস্তা নির্মাণ উন্নয়নমূলক হয় না।
এ ব্যাপারে কেদারনগর গ্রামের ইউপি সদস্য ও কাজের পিআইসি হিসাবে দায়িত্বরত বাবুল হোসেন বলেন, কাজ সব সঠিকভাবেই হচ্ছে।
এই ব্যাপারে আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ বলেন, ‘কেদারনগর গ্রামে রাস্তা নির্মাণে অনিয়মের বিষয়টি মোবাইলে স্থানীয়রা জানিয়েছে। আমি ঘটনাস্থলে ইঞ্জিনিয়ার পাঠিয়ে সঠিকভাবে কাজ বুঝে নিবো।’
আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিটন আলী বলেন, ‘এডিপি কাজে কোনো ধরণের অনিয়ম মেনে নেওয়া যাবে না। যদি কোনো নিম্নমানের সামগ্রী অথবা রাস্তা কম করে, তা সঠিক নিয়মে কাজ করে জনগণের স্বার্থে সরকারকে বুঝিয়ে দিতে হবে।’