ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আলমডাঙ্গার শেফা ক্লিনিকে চরম অবহেলায় তরুনী বধূর মৃত্যু উত্তেজিত স্বজনদের ক্লিনিকে চড়াও : তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্ত

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০২:১১:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬
  • / ১৮৮২ বার পড়া হয়েছে

Clinic-1আলমডাঙ্গা অফিস: মাত্র ১৯ বছর বয়সেই স্বপ্নময়ী আঁখির জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দিল আলমডাঙ্গার শেফা ক্লিনিক। তার আর বাঁচা হল না। কোলের সন্তানকেও আর দেখা হল না। এই তরুনী বধুর জীবনের উষালগ্নেই জীবন প্রদীপ নিভে গেল ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলায়। বুকভরা স্বপ্নে বিভোর আঁখি সন্তানকে বুকে নিয়ে বাড়ি ফেরার স্বপ্ন দেখলেও লাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে ডাক্তারের অমার্জনীয় অবহেলায়। গতকাল সোমবার সকালে ক্লিনিকে সন্তান প্রসব করা আঁখির চিকিৎসকের অবহেলায় করুন মৃত্যু হয়। মৃত আঁখির স্বজনেরা জানায়, আলমডাঙ্গার দুর্লভপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে সবুর বিয়ে করে হাটবোয়ালিয়া গ্রামের আসাদুল হকের মেয়ে আঁখির সাথে। এরইClinic-2 মধ্যে আঁখি সন্তান সম্ভাবা হয়ে পড়ে। তারা দুজনে সিদ্ধান্ত নেয় সিজারিয়ান বাচ্চা নিবে। গত শনিবার আব্দুস সবুর তার স্ত্রীকে আলমডাঙ্গার শেফা ক্লিনিকে ভর্তি করায়। ডাক্তার চৈতালী চুয়াডাঙ্গা থেকে আলমডাঙ্গায় এসে আঁখিকে সিজার করে আবার চুয়াডাঙ্গায় চলে যান। আঁখির অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, সিজার হওয়ার পর আঁখি রক্ত শন্যতায় ভুগতে থাকে। রাতে আঁখিকে বেডে ফেলে রেখে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাদের বেডে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। আঁখির যে চিকিৎসা প্রয়োজন ডাক্তার তা দেননি। রাতভর চিকিৎসাহীনতায় আঁখি গতকাল সকালের দিকে না ফেরার দেশে যাত্রা শুরু তরে। অবস্থা বেগতিক দেখে সকালে ডাক্তার এসে আঁখির শরীরে রক্ত পুশ করেন। কিন্তু আঁখির বেঁচে থাকার জন্যে ডাক্তারের তৎপরতা অনেক দেরী হয়ে যায়। সে তার বেঁচে থাকার স্বপ্নকে জলাঞ্জলী দিয়ে অবশেষে সকালেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এতে কয়েক ঘন্টা পরই সদ্যজাত শিশু সারাজীবনের মত তার মাকে হারিয়ে ফেলে। আঁখির করুন মৃত্যুর পর তার আত্মীয়-স্বজন মুহুর্তে উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তারা হয়ে ওঠে প্রতিবাদী। অকালে আপনজন হারানো স্বজনেরা ক্লিনিকের ওপর চড়াও হয়। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের অবহেলার তীব্র প্রতিবাদ করতে থাকে। এ সময় উত্তেজনা চরমে পৌছলে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ ক্লিনিকে অবস্থান নেয়। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ চিকিৎসায় অবহেলার সর্বদায় দায়িত্ব কাধে নিয়ে সমঝোতায় আসতে চায়। তৃতীয় একটি পক্ষের কাছে গিয়ে পড়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। সমঝোতাও সামনের দিকে এগুতে থাকে। উত্তেজনাও ক্রমেই থিতিয়ে আসে। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ঝড়-ঝাপটার পর গতকাল রাতে আর একটু শান্তিতে ঘুমাবেন। আঁখির মরে যাওয়ার কষ্ট তার স্বজনেরাও একদিন ভুলে যাবে। কিন্তু সদ্যজাত শিশুর জীবনে মা‘য়ের শুন্যতা জীবনভর রয়ে যাবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আলমডাঙ্গার শেফা ক্লিনিকে চরম অবহেলায় তরুনী বধূর মৃত্যু উত্তেজিত স্বজনদের ক্লিনিকে চড়াও : তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্ত

আপলোড টাইম : ০২:১১:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬

Clinic-1আলমডাঙ্গা অফিস: মাত্র ১৯ বছর বয়সেই স্বপ্নময়ী আঁখির জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দিল আলমডাঙ্গার শেফা ক্লিনিক। তার আর বাঁচা হল না। কোলের সন্তানকেও আর দেখা হল না। এই তরুনী বধুর জীবনের উষালগ্নেই জীবন প্রদীপ নিভে গেল ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলায়। বুকভরা স্বপ্নে বিভোর আঁখি সন্তানকে বুকে নিয়ে বাড়ি ফেরার স্বপ্ন দেখলেও লাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে ডাক্তারের অমার্জনীয় অবহেলায়। গতকাল সোমবার সকালে ক্লিনিকে সন্তান প্রসব করা আঁখির চিকিৎসকের অবহেলায় করুন মৃত্যু হয়। মৃত আঁখির স্বজনেরা জানায়, আলমডাঙ্গার দুর্লভপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে সবুর বিয়ে করে হাটবোয়ালিয়া গ্রামের আসাদুল হকের মেয়ে আঁখির সাথে। এরইClinic-2 মধ্যে আঁখি সন্তান সম্ভাবা হয়ে পড়ে। তারা দুজনে সিদ্ধান্ত নেয় সিজারিয়ান বাচ্চা নিবে। গত শনিবার আব্দুস সবুর তার স্ত্রীকে আলমডাঙ্গার শেফা ক্লিনিকে ভর্তি করায়। ডাক্তার চৈতালী চুয়াডাঙ্গা থেকে আলমডাঙ্গায় এসে আঁখিকে সিজার করে আবার চুয়াডাঙ্গায় চলে যান। আঁখির অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, সিজার হওয়ার পর আঁখি রক্ত শন্যতায় ভুগতে থাকে। রাতে আঁখিকে বেডে ফেলে রেখে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাদের বেডে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। আঁখির যে চিকিৎসা প্রয়োজন ডাক্তার তা দেননি। রাতভর চিকিৎসাহীনতায় আঁখি গতকাল সকালের দিকে না ফেরার দেশে যাত্রা শুরু তরে। অবস্থা বেগতিক দেখে সকালে ডাক্তার এসে আঁখির শরীরে রক্ত পুশ করেন। কিন্তু আঁখির বেঁচে থাকার জন্যে ডাক্তারের তৎপরতা অনেক দেরী হয়ে যায়। সে তার বেঁচে থাকার স্বপ্নকে জলাঞ্জলী দিয়ে অবশেষে সকালেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এতে কয়েক ঘন্টা পরই সদ্যজাত শিশু সারাজীবনের মত তার মাকে হারিয়ে ফেলে। আঁখির করুন মৃত্যুর পর তার আত্মীয়-স্বজন মুহুর্তে উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তারা হয়ে ওঠে প্রতিবাদী। অকালে আপনজন হারানো স্বজনেরা ক্লিনিকের ওপর চড়াও হয়। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের অবহেলার তীব্র প্রতিবাদ করতে থাকে। এ সময় উত্তেজনা চরমে পৌছলে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ ক্লিনিকে অবস্থান নেয়। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ চিকিৎসায় অবহেলার সর্বদায় দায়িত্ব কাধে নিয়ে সমঝোতায় আসতে চায়। তৃতীয় একটি পক্ষের কাছে গিয়ে পড়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। সমঝোতাও সামনের দিকে এগুতে থাকে। উত্তেজনাও ক্রমেই থিতিয়ে আসে। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ঝড়-ঝাপটার পর গতকাল রাতে আর একটু শান্তিতে ঘুমাবেন। আঁখির মরে যাওয়ার কষ্ট তার স্বজনেরাও একদিন ভুলে যাবে। কিন্তু সদ্যজাত শিশুর জীবনে মা‘য়ের শুন্যতা জীবনভর রয়ে যাবে।