ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আরেকটি ফরাসি বিপ্লব? ফ্রান্স-বেলজিয়াম ফাইনালে যাওয়ার লড়াই আজ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জুলাই ২০১৮
  • / ৬১৭ বার পড়া হয়েছে

স্পোর্টস ডেস্ক: বিশ্বকাপ শুরুর আগেই ফেবারিটের তালিকায় ছিলো ফ্রান্স ও বেলজিয়াম। সমর্থকদের প্রত্যাশা পূরণ করে দু’দলই উঠেছে রাশিয়া বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। স্বপ্নের ফাইনালে খেলার লক্ষ্যে আজ ২১তম বিশ্বকাপ আসরের প্রথম সেমিফাইনালের মুখোমুখি হবে এ দু’দল। সেন্ট পিটার্সবার্গের ক্রিস্টভস্কি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায়। এ ম্যাচ নিয়ে ইতোমধ্যে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে সর্বত্র। একদিকে ১৯৯৮ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের সামনে দীর্ঘ ১২ বছর পর বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠার সুযোগ, অন্যদিকে প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলার হাতছানি রেড ডেভিলসদের সামনে। শেষ পর্যন্ত ফাইনালে যাচ্ছে কারা- হুগো লরিসের নেতৃত্বাধীন ফ্রান্স নাকি এডেন হ্যাজার্ডের নেতৃত্বাধীন বেলজিয়াম তা দেখার অপেক্ষায় এখন সারা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীরা।
সোনালি প্রজন্মের হাতে এখন বেলজিয়ামের ফুটবল। তরী বাইছেন স্প্যানিশ কোচ রবার্তো মার্টিনেজ। তার পাঠশালায় কেভিন ডি ব্রুয়েন, অধিনায়ক ইডেন হ্যাজার্ড, রোমেলু লুকাকু, ভিনসেন্ট কোম্পানিরা দেখিয়েছেন কিভাবে প্রতিপক্ষের অহঙ্কার গুঁড়িয়ে দিতে হয়। আক্রমণভাগে লুকাকু যেন দৈত্যদানব। ব্রুয়েন ধারালো অস্ত্র। ইডেন হ্যাজার্ড কামানের গোলা। ফ্রান্স কাকে রেখে কাকে ঠেকাবে তা নিয়ে চলছে যুদ্ধের প্রস্তুতি। বেলজিয়ামের যে কোনো খেলোয়াড় যে কোনো সময় গোল করতে পারেন। ১৪টি গোল করেছেন ৯ জন। বেলজিয়ামের লুকাকু বলছেন, ফ্রান্সের বিপক্ষে সেমিফাইনালের খেলাটি হবে ব্রাজিলের বিপক্ষের ম্যাচের চেয়েও কঠিন। মাঝমাঠেও শক্তিশালী বেলজিয়াম। সবচেয়ে বড় দুর্বলতা তাদের রক্ষণে। তাদের একটা কৌতুক আছে ডিফেন্ডার ভিনসেন্ট কোম্পানিকে নিয়ে। বেলজিয়াম বিশ্বের বিখ্যাত কাচের গ্লাস উৎপাদনকারী দেশ। সাংবাদিকরা বলেন, সবচেয়ে দুর্বল কাঁচ হচ্ছেন ভিনসেন্ট কোম্পানি। একটু টোকা লাগলেই চুরমার।’ এমন ডিফেন্ডারকে ভাঙতে পারেনি ব্রাজিলের নেইমার, ফারনাদিনহো, ফিলিপ কোটিনহো, গ্যাব্রিয়েল জেসুসরা। হোক না ক্যাসিমিরো হলুদ কার্ডের শাস্তি থাকায় নামতে পারেননি। তাই বলে মাঝমাঠের পুরো জমিটা ফাঁকা থাকবে?
২০১৪ বিশ্বকাপ ফুটবলের সেমিফাইনালে জার্মানিদের বিপক্ষে নেইমার খেলতে পারেননি ইনজুরির কারণে, রক্ষণে হলুদ কার্ডের কারণে থিয়েগো সিলভা নামতে পারেননি। ওখানেই শেষ হয়ে গিয়েছিল ব্রাজিল। আর এবার ক্যাসিমিরোর মতো মিডফিল্ডার না থাকায় হেরে গেল বেলজিয়ামের কাছেও। ব্রাজিল বেলজিয়ামের গোলপোস্টের পাহারাদার কুর্তোয়াকেই হারাতে পারেনি। একবারও বিপদে ফেলতে পারেনি। গোল একটা হজম করলেও সেটা নিয়ে ব্রাজিলও সন্তুষ্ট ছিল না। গোলপোস্টের নিচে কুর্তোয়া একজন হার না মানা যোদ্ধা সেটা দেখে নিয়েছেন ফ্রান্সের কোচ। কিভাবে তাকে ঘোলা জল খাওয়াবেন সেটা তৈরি করে রেখেছেন। বেলজিয়ামের আক্রমণভাগের লুকাকুর পারফরম্যান্স দেখেছেন ফ্রান্সের কোচ, সব খবরও নিয়েছেন। সে কি পরিমাণ ফুটওয়ার্ক করেন সেই চার্ট ফ্রান্সের কোচের হাতে। কারণ ২৪ বছর বয়সী লুকাকু ৪ গোল করেছেন। ব্রাজিলের জালে গোল না করলেও বল বাড়িয়ে গোল করিয়েছেন। খেলাটা তৈরি করেছেন। ভয়ঙ্কর লুকাকুর দিকে তাকিয়ে আছে বেলজিকরা।
মাত্র তিন সপ্তাহের অনুশীলনে বেলজিয়াম দলকে বদলে দিয়েছেন স্প্যানিশ কোচ রবার্তো মার্টিনেজ। বলেছিলেন, ব্রাজিলের সঙ্গে পারতে হলে খেললেই হবে না। ট্যাকটিকেল গেম খেলতে হবে। সেটাই করেছিলাম।’ উরুগুয়েকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে আসা ফ্রান্সের কোচ দেদিয়ের দেশম জানেন মার্টিনেজের দুর্বলতা কোথায়। ট্যাকটিকেল জাদু দেখাবেন। নিজের গেম প্ল্যান নিয়ে মুখ খোলেননি। অনুশীলনেও কাউকে ঢুকতে দেননি। বেলজিয়াম কোচও একই পথে হেঁটেছেন। কোনো গোপনীয়তা প্রকাশ করবেন না। তাহলে দলের অনেক কিছ্ইু ফাঁস হয়ে যাবে। এমনকি আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন ছাড়া দলের কাউকে সংবাদ মাধ্যদের সঙ্গেও কথা বলতে দিচ্ছেন না বেলজিয়াম কোচ মার্টিনেজ এবং ফ্রান্সের কোচ দেশম। যা করার তারা সেটা মাঠেই দেখাতে চান। ভুলে গেলে চলবে না, আর্জেন্টিনাকে কিভাবে বিদয়ে করেছিল ফ্রান্স। ফরাসি ফুটবলার পগবা, গ্রিজম্যান, এমবাপে আর্জেন্টিনাকে নাকানি চুবানি দিয়েছেন। তারাই আজ আরেকটা লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে সেন্ট পিটারবার্গের শহরে। ‘৮৬ বিশ্বকাপ ফুটবলের সেমিফাইনালে ফ্রান্স-পশ্চিম জার্মানি এবং বেলজিয়াম-আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হয়। বেলজিয়াম এবং ফ্রান্স হেরে গিয়ে তৃতীয় স্থানের লড়াইয়ে নামে। সেখানেও হেরে যায় বেলজিয়াম।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আরেকটি ফরাসি বিপ্লব? ফ্রান্স-বেলজিয়াম ফাইনালে যাওয়ার লড়াই আজ

আপলোড টাইম : ১০:১৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জুলাই ২০১৮

স্পোর্টস ডেস্ক: বিশ্বকাপ শুরুর আগেই ফেবারিটের তালিকায় ছিলো ফ্রান্স ও বেলজিয়াম। সমর্থকদের প্রত্যাশা পূরণ করে দু’দলই উঠেছে রাশিয়া বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। স্বপ্নের ফাইনালে খেলার লক্ষ্যে আজ ২১তম বিশ্বকাপ আসরের প্রথম সেমিফাইনালের মুখোমুখি হবে এ দু’দল। সেন্ট পিটার্সবার্গের ক্রিস্টভস্কি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায়। এ ম্যাচ নিয়ে ইতোমধ্যে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে সর্বত্র। একদিকে ১৯৯৮ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের সামনে দীর্ঘ ১২ বছর পর বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠার সুযোগ, অন্যদিকে প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলার হাতছানি রেড ডেভিলসদের সামনে। শেষ পর্যন্ত ফাইনালে যাচ্ছে কারা- হুগো লরিসের নেতৃত্বাধীন ফ্রান্স নাকি এডেন হ্যাজার্ডের নেতৃত্বাধীন বেলজিয়াম তা দেখার অপেক্ষায় এখন সারা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীরা।
সোনালি প্রজন্মের হাতে এখন বেলজিয়ামের ফুটবল। তরী বাইছেন স্প্যানিশ কোচ রবার্তো মার্টিনেজ। তার পাঠশালায় কেভিন ডি ব্রুয়েন, অধিনায়ক ইডেন হ্যাজার্ড, রোমেলু লুকাকু, ভিনসেন্ট কোম্পানিরা দেখিয়েছেন কিভাবে প্রতিপক্ষের অহঙ্কার গুঁড়িয়ে দিতে হয়। আক্রমণভাগে লুকাকু যেন দৈত্যদানব। ব্রুয়েন ধারালো অস্ত্র। ইডেন হ্যাজার্ড কামানের গোলা। ফ্রান্স কাকে রেখে কাকে ঠেকাবে তা নিয়ে চলছে যুদ্ধের প্রস্তুতি। বেলজিয়ামের যে কোনো খেলোয়াড় যে কোনো সময় গোল করতে পারেন। ১৪টি গোল করেছেন ৯ জন। বেলজিয়ামের লুকাকু বলছেন, ফ্রান্সের বিপক্ষে সেমিফাইনালের খেলাটি হবে ব্রাজিলের বিপক্ষের ম্যাচের চেয়েও কঠিন। মাঝমাঠেও শক্তিশালী বেলজিয়াম। সবচেয়ে বড় দুর্বলতা তাদের রক্ষণে। তাদের একটা কৌতুক আছে ডিফেন্ডার ভিনসেন্ট কোম্পানিকে নিয়ে। বেলজিয়াম বিশ্বের বিখ্যাত কাচের গ্লাস উৎপাদনকারী দেশ। সাংবাদিকরা বলেন, সবচেয়ে দুর্বল কাঁচ হচ্ছেন ভিনসেন্ট কোম্পানি। একটু টোকা লাগলেই চুরমার।’ এমন ডিফেন্ডারকে ভাঙতে পারেনি ব্রাজিলের নেইমার, ফারনাদিনহো, ফিলিপ কোটিনহো, গ্যাব্রিয়েল জেসুসরা। হোক না ক্যাসিমিরো হলুদ কার্ডের শাস্তি থাকায় নামতে পারেননি। তাই বলে মাঝমাঠের পুরো জমিটা ফাঁকা থাকবে?
২০১৪ বিশ্বকাপ ফুটবলের সেমিফাইনালে জার্মানিদের বিপক্ষে নেইমার খেলতে পারেননি ইনজুরির কারণে, রক্ষণে হলুদ কার্ডের কারণে থিয়েগো সিলভা নামতে পারেননি। ওখানেই শেষ হয়ে গিয়েছিল ব্রাজিল। আর এবার ক্যাসিমিরোর মতো মিডফিল্ডার না থাকায় হেরে গেল বেলজিয়ামের কাছেও। ব্রাজিল বেলজিয়ামের গোলপোস্টের পাহারাদার কুর্তোয়াকেই হারাতে পারেনি। একবারও বিপদে ফেলতে পারেনি। গোল একটা হজম করলেও সেটা নিয়ে ব্রাজিলও সন্তুষ্ট ছিল না। গোলপোস্টের নিচে কুর্তোয়া একজন হার না মানা যোদ্ধা সেটা দেখে নিয়েছেন ফ্রান্সের কোচ। কিভাবে তাকে ঘোলা জল খাওয়াবেন সেটা তৈরি করে রেখেছেন। বেলজিয়ামের আক্রমণভাগের লুকাকুর পারফরম্যান্স দেখেছেন ফ্রান্সের কোচ, সব খবরও নিয়েছেন। সে কি পরিমাণ ফুটওয়ার্ক করেন সেই চার্ট ফ্রান্সের কোচের হাতে। কারণ ২৪ বছর বয়সী লুকাকু ৪ গোল করেছেন। ব্রাজিলের জালে গোল না করলেও বল বাড়িয়ে গোল করিয়েছেন। খেলাটা তৈরি করেছেন। ভয়ঙ্কর লুকাকুর দিকে তাকিয়ে আছে বেলজিকরা।
মাত্র তিন সপ্তাহের অনুশীলনে বেলজিয়াম দলকে বদলে দিয়েছেন স্প্যানিশ কোচ রবার্তো মার্টিনেজ। বলেছিলেন, ব্রাজিলের সঙ্গে পারতে হলে খেললেই হবে না। ট্যাকটিকেল গেম খেলতে হবে। সেটাই করেছিলাম।’ উরুগুয়েকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে আসা ফ্রান্সের কোচ দেদিয়ের দেশম জানেন মার্টিনেজের দুর্বলতা কোথায়। ট্যাকটিকেল জাদু দেখাবেন। নিজের গেম প্ল্যান নিয়ে মুখ খোলেননি। অনুশীলনেও কাউকে ঢুকতে দেননি। বেলজিয়াম কোচও একই পথে হেঁটেছেন। কোনো গোপনীয়তা প্রকাশ করবেন না। তাহলে দলের অনেক কিছ্ইু ফাঁস হয়ে যাবে। এমনকি আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন ছাড়া দলের কাউকে সংবাদ মাধ্যদের সঙ্গেও কথা বলতে দিচ্ছেন না বেলজিয়াম কোচ মার্টিনেজ এবং ফ্রান্সের কোচ দেশম। যা করার তারা সেটা মাঠেই দেখাতে চান। ভুলে গেলে চলবে না, আর্জেন্টিনাকে কিভাবে বিদয়ে করেছিল ফ্রান্স। ফরাসি ফুটবলার পগবা, গ্রিজম্যান, এমবাপে আর্জেন্টিনাকে নাকানি চুবানি দিয়েছেন। তারাই আজ আরেকটা লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে সেন্ট পিটারবার্গের শহরে। ‘৮৬ বিশ্বকাপ ফুটবলের সেমিফাইনালে ফ্রান্স-পশ্চিম জার্মানি এবং বেলজিয়াম-আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হয়। বেলজিয়াম এবং ফ্রান্স হেরে গিয়ে তৃতীয় স্থানের লড়াইয়ে নামে। সেখানেও হেরে যায় বেলজিয়াম।