ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আরও একজনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৪

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:২১:১৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ মার্চ ২০২০
  • / ১৫৮ বার পড়া হয়েছে

দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৪; কোয়ারেন্টাইনে আছে ১৪ হাজার
সমীকরণ প্রতিবেদন:
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে সংক্রমিত হয়েছে আরও চারজনের শরীরে। এ নিয়ে মারা গেলেন দুজন আর আক্রান্তের সংক্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৪ জনে। মৃত দুজনের বয়সই ৭০ বছরের বেশি। তারা উভয়ই হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল শনিবার মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ তথ্য জানান। তিনি সংবাদ সম্মেলনে করোনাবিষয়ক নানা প্রস্তুতির কথাও বলেন। তিনি বলেন, করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেলে রাজধানীতে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউট হাসপাতাল ও শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হবে। এ ছাড়া বেশিসংখ্যক কোয়ারেন্টাইনের প্রয়োজন হলে মিরপুরের দিয়াবাড়ি ও টঙ্গীর তাবলিগ জামাতের মাঠকে প্রস্তুত করা হবে। ইতোমধ্যে এ দুটি স্থানে কোয়ারেন্টাইনে রাখার জন্য সশস্ত্রবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, আমরা খুব শিগগিরই নতুন করে ১০০ আইসিইউ স্থাপন করব। আরো ৩০০ আইসিইউ মেশিন আনা হবে। চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য কয়েক লাখ পিপিই (পারসোনাল প্রটেকশন ইক্যুইপমেন্ট) ও মাস্ক আমাদের হাতে এসেছে। আমরা এসব স্থানীয়ভাবে তৈরি করছি। এ ছাড়া চীন থেকে বিমানে করে টেস্ট কিটসহ অন্যান্য কিছু আনা হবে। চীনও আমাদের কিছু টেস্ট কিট ও মাস্ক দেবে। ইতোমধ্যে করোনা পরীক্ষা করার জন্য সাতটি মেশিন হাতে এসেছে বলে তিনি জানান। এই সাতটি পিসিআর মেশিন সাত বিভাগে স্থাপন করা হবে। তবে এ জন্য একটু সময় লাগবে। মেশিনগুলোর জন্য বায়ুসেফটি লেভেল-২ ধরনের পরিবেশ তৈরি করতে হয়। তিনি জানান, ইতোমধ্যে আইইডিসিআর-এ করোনাভাইরাস টেস্ট করার জন্য আটটি পিসিআর মেশিন রয়েছে। এটা হলে দেশের আট বিভাগেই করোনাভাইরাস পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে।
ছড়িয়ে পড়া রোধ করার পরিকল্পনা হিসেবে তিনি সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত এক মাসে বিদেশ থেকে ফেরত আসা নাগরিকদের খুঁজে বের করা হবে কোয়ারেন্টাইনে রাখার জন্য। তাদের সাথে যারা সংস্পর্শে এসেছে তাদেরও খোঁজা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকেও তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে দেশব্যাপী ১৪ হাজারের বেশি মানুষকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তবে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে ৫০ জনকে। আইসোলেশনে কতজনকে রাখা হয়েছে তার তথ্য তিনি দিতে পারেননি। তিনি জানান, ইতোমধ্যে বাংলাদেশের সাথে সব ধরনের বিমান যোগাযোগ বন্ধ করা হয়েছে। তবে সীমিত আকারে কিছু ফ্লাইট চালু আছে। আগামীতে এগুলোর বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন, আমাদের প্রস্তুতির ব্যাপারে তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অবস্থা ইউরোপের চেয়ে অনেক ভালো।
প্রবাসীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন না করে তাদের কেন বাড়িতে যেতে দেয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ হাজারের হাজারের বেশি মানুষ বিভিন্নভাবে দেশে প্রবেশ করছে। তাদের আমরা কোথায় রাখব? তিনি বলেন, বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা বললেও অনেকে বাড়িতে থাকছেন না, জানালা দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা পুলিশকে বলে দিয়েছি এদের ধরে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখতে।
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক প্রফেসর ডা: এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, এমন পরিস্থিতিতে লকডাউন ও জরুরি অবস্থার বিষয়গুলো সামনে আসছে। এটা তো আমরা বললে হবে না। এটা সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়। সরকার যদি ভালো মনে করে তাহলে দেশ ও জনগণের স্বার্থে অবশ্যই এটা করতে পারে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আরও একজনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৪

আপলোড টাইম : ১০:২১:১৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ মার্চ ২০২০

দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৪; কোয়ারেন্টাইনে আছে ১৪ হাজার
সমীকরণ প্রতিবেদন:
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে সংক্রমিত হয়েছে আরও চারজনের শরীরে। এ নিয়ে মারা গেলেন দুজন আর আক্রান্তের সংক্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৪ জনে। মৃত দুজনের বয়সই ৭০ বছরের বেশি। তারা উভয়ই হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল শনিবার মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ তথ্য জানান। তিনি সংবাদ সম্মেলনে করোনাবিষয়ক নানা প্রস্তুতির কথাও বলেন। তিনি বলেন, করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেলে রাজধানীতে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউট হাসপাতাল ও শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হবে। এ ছাড়া বেশিসংখ্যক কোয়ারেন্টাইনের প্রয়োজন হলে মিরপুরের দিয়াবাড়ি ও টঙ্গীর তাবলিগ জামাতের মাঠকে প্রস্তুত করা হবে। ইতোমধ্যে এ দুটি স্থানে কোয়ারেন্টাইনে রাখার জন্য সশস্ত্রবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, আমরা খুব শিগগিরই নতুন করে ১০০ আইসিইউ স্থাপন করব। আরো ৩০০ আইসিইউ মেশিন আনা হবে। চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য কয়েক লাখ পিপিই (পারসোনাল প্রটেকশন ইক্যুইপমেন্ট) ও মাস্ক আমাদের হাতে এসেছে। আমরা এসব স্থানীয়ভাবে তৈরি করছি। এ ছাড়া চীন থেকে বিমানে করে টেস্ট কিটসহ অন্যান্য কিছু আনা হবে। চীনও আমাদের কিছু টেস্ট কিট ও মাস্ক দেবে। ইতোমধ্যে করোনা পরীক্ষা করার জন্য সাতটি মেশিন হাতে এসেছে বলে তিনি জানান। এই সাতটি পিসিআর মেশিন সাত বিভাগে স্থাপন করা হবে। তবে এ জন্য একটু সময় লাগবে। মেশিনগুলোর জন্য বায়ুসেফটি লেভেল-২ ধরনের পরিবেশ তৈরি করতে হয়। তিনি জানান, ইতোমধ্যে আইইডিসিআর-এ করোনাভাইরাস টেস্ট করার জন্য আটটি পিসিআর মেশিন রয়েছে। এটা হলে দেশের আট বিভাগেই করোনাভাইরাস পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে।
ছড়িয়ে পড়া রোধ করার পরিকল্পনা হিসেবে তিনি সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত এক মাসে বিদেশ থেকে ফেরত আসা নাগরিকদের খুঁজে বের করা হবে কোয়ারেন্টাইনে রাখার জন্য। তাদের সাথে যারা সংস্পর্শে এসেছে তাদেরও খোঁজা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকেও তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে দেশব্যাপী ১৪ হাজারের বেশি মানুষকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তবে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে ৫০ জনকে। আইসোলেশনে কতজনকে রাখা হয়েছে তার তথ্য তিনি দিতে পারেননি। তিনি জানান, ইতোমধ্যে বাংলাদেশের সাথে সব ধরনের বিমান যোগাযোগ বন্ধ করা হয়েছে। তবে সীমিত আকারে কিছু ফ্লাইট চালু আছে। আগামীতে এগুলোর বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন, আমাদের প্রস্তুতির ব্যাপারে তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অবস্থা ইউরোপের চেয়ে অনেক ভালো।
প্রবাসীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন না করে তাদের কেন বাড়িতে যেতে দেয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ হাজারের হাজারের বেশি মানুষ বিভিন্নভাবে দেশে প্রবেশ করছে। তাদের আমরা কোথায় রাখব? তিনি বলেন, বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা বললেও অনেকে বাড়িতে থাকছেন না, জানালা দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা পুলিশকে বলে দিয়েছি এদের ধরে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখতে।
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক প্রফেসর ডা: এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, এমন পরিস্থিতিতে লকডাউন ও জরুরি অবস্থার বিষয়গুলো সামনে আসছে। এটা তো আমরা বললে হবে না। এটা সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়। সরকার যদি ভালো মনে করে তাহলে দেশ ও জনগণের স্বার্থে অবশ্যই এটা করতে পারে।