ইপেপার । আজমঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আমরা কতটা সুশিক্ষিত?

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৪১:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ অক্টোবর ২০১৮
  • / ৩৩৩ বার পড়া হয়েছে

দেশের নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকেরই দেশ, দেশও দেশের মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকা উচিত। শিক্ষাই জাতির মেরুদ-। মেরুদ-হীন মানুষ যেমন স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে না, তেমনি শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতি উন্নতির চরম শিখরে আরোহণ করতে পারে না। প্রশ্ন হতে পারে, সেই শিক্ষাটা কেমন হওয়া দরকার? বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থাকে সচেতন সমাজ অনেকটা বাণিজ্যমুখী মনে করছে। তাছাড়া বর্তমান ও আগের শিক্ষার মানের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা কতটা ত্রুটিপূর্ণ তা সহজেই অনুমেয়। আগের কালে গল্পে শুনতাম, তখনকার দিনে কম লেখাপড়া করেও মানুষ ছিল সুশিক্ষিত। তারা দিনরাত পরিশ্রম করে লেখাপড়া করলেও পাসের হার ছিল বর্তমানের চেয়ে কয়েকগুণ কম। জানা যায় সেই সময়কার বেশিরভাগ স্বল্পশিক্ষিত মানুষও ছিল স্বশিক্ষিত। ছিল দেশ ও জাতির কাছে দায়বদ্ধ। বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করছে বটে; তবে তারা কতটা দেশপ্রেমিক ও সুশিক্ষিত তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
সুশিক্ষা প্রত্যেক মানুষকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে। একজন শিক্ষার্থীকে আদর্শ মানুষ হতে হলে প্রকৃত শিক্ষার বিকল্প নেই। প্রকৃত শিক্ষাটা আসলে কী? প্রকৃত শিক্ষা হল সুশিক্ষা, যার মাধ্যমে প্রত্যেক মানুষ নিজেকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়তে পারে। আর সুশিক্ষার মাধ্যমেই প্রকৃত শিক্ষা অর্জিত হয়। প্রকৃত শিক্ষার মাধ্যমে দেশের প্রতি ভালোবাসা সহজাতভাবেই তৈরি হয়। আজকাল অধিকাংশ শিক্ষার্থীই জানার আগ্রহের চেয়ে ফলাফলকে প্রতিযোগিতার প্রধান লক্ষ্য মনে করে। তাই দেখা যায় শিক্ষার্থীরা নিজেদের ‘শিক্ষার্থী’ হিসেবে গড়ে তোলার চেয়ে ‘নম্বরার্থী’ হিসেবে গড়ে তুলতে বেশি সচেষ্ট। আর নম্বর পাওয়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে অনেক সময় তাদের পরীক্ষায় অসাধু পন্থা অবলম্বন করতেও দেখা যায়। এজন্য বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার মান নিয়ে দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বুদ্ধিজীবীরাও চিন্তিত। এভাবে চলতে থাকলে দেশে নম্বরার্থীর সংখ্যা বাড়বে ঠিকই, কিন্তু জাতির সংকট উত্তরণে তারা ব্যর্থতার পরিচয় দেবে। দেশকে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ দুঃস্বপ্নই থেকে যাবে। জাতি বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সঠিকভাবে এগিয়ে যেতে পারবে না। তাই শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর জন্য বর্তমান ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার জরুরি। শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধ করতে সরকারের উচিত কঠোর পদক্ষেপ নেয়া। শিক্ষার মান উন্নয়নে দৃষ্টি দেয়া। যেহেতু আজকের প্রজন্মই আগামী দিনে দেশের নেতৃত্বে ভূমিকা রাখবে, সেহেতু শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বিকাশের দায়িত্ব পরিবারের পাশাপাশি রাষ্ট্রকে নিতে হবে। পরিশেষে একজন শিক্ষার্থী হিসেবে বলতে চাই, শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার করে যুগোপযোগী ও বিশ্বমানের শিক্ষা পদ্ধতি চালু করা এখন সময়ের দাবি। আজকের শিক্ষার্থীরাই জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার। তাদের নেতৃত্বে বাস্তবায়ন হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আমরা কতটা সুশিক্ষিত?

আপলোড টাইম : ০৯:৪১:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ অক্টোবর ২০১৮

দেশের নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকেরই দেশ, দেশও দেশের মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকা উচিত। শিক্ষাই জাতির মেরুদ-। মেরুদ-হীন মানুষ যেমন স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে না, তেমনি শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতি উন্নতির চরম শিখরে আরোহণ করতে পারে না। প্রশ্ন হতে পারে, সেই শিক্ষাটা কেমন হওয়া দরকার? বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থাকে সচেতন সমাজ অনেকটা বাণিজ্যমুখী মনে করছে। তাছাড়া বর্তমান ও আগের শিক্ষার মানের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা কতটা ত্রুটিপূর্ণ তা সহজেই অনুমেয়। আগের কালে গল্পে শুনতাম, তখনকার দিনে কম লেখাপড়া করেও মানুষ ছিল সুশিক্ষিত। তারা দিনরাত পরিশ্রম করে লেখাপড়া করলেও পাসের হার ছিল বর্তমানের চেয়ে কয়েকগুণ কম। জানা যায় সেই সময়কার বেশিরভাগ স্বল্পশিক্ষিত মানুষও ছিল স্বশিক্ষিত। ছিল দেশ ও জাতির কাছে দায়বদ্ধ। বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করছে বটে; তবে তারা কতটা দেশপ্রেমিক ও সুশিক্ষিত তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
সুশিক্ষা প্রত্যেক মানুষকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে। একজন শিক্ষার্থীকে আদর্শ মানুষ হতে হলে প্রকৃত শিক্ষার বিকল্প নেই। প্রকৃত শিক্ষাটা আসলে কী? প্রকৃত শিক্ষা হল সুশিক্ষা, যার মাধ্যমে প্রত্যেক মানুষ নিজেকে ভালো মানুষ হিসেবে গড়তে পারে। আর সুশিক্ষার মাধ্যমেই প্রকৃত শিক্ষা অর্জিত হয়। প্রকৃত শিক্ষার মাধ্যমে দেশের প্রতি ভালোবাসা সহজাতভাবেই তৈরি হয়। আজকাল অধিকাংশ শিক্ষার্থীই জানার আগ্রহের চেয়ে ফলাফলকে প্রতিযোগিতার প্রধান লক্ষ্য মনে করে। তাই দেখা যায় শিক্ষার্থীরা নিজেদের ‘শিক্ষার্থী’ হিসেবে গড়ে তোলার চেয়ে ‘নম্বরার্থী’ হিসেবে গড়ে তুলতে বেশি সচেষ্ট। আর নম্বর পাওয়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে অনেক সময় তাদের পরীক্ষায় অসাধু পন্থা অবলম্বন করতেও দেখা যায়। এজন্য বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার মান নিয়ে দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বুদ্ধিজীবীরাও চিন্তিত। এভাবে চলতে থাকলে দেশে নম্বরার্থীর সংখ্যা বাড়বে ঠিকই, কিন্তু জাতির সংকট উত্তরণে তারা ব্যর্থতার পরিচয় দেবে। দেশকে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ দুঃস্বপ্নই থেকে যাবে। জাতি বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সঠিকভাবে এগিয়ে যেতে পারবে না। তাই শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর জন্য বর্তমান ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার জরুরি। শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ বন্ধ করতে সরকারের উচিত কঠোর পদক্ষেপ নেয়া। শিক্ষার মান উন্নয়নে দৃষ্টি দেয়া। যেহেতু আজকের প্রজন্মই আগামী দিনে দেশের নেতৃত্বে ভূমিকা রাখবে, সেহেতু শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বিকাশের দায়িত্ব পরিবারের পাশাপাশি রাষ্ট্রকে নিতে হবে। পরিশেষে একজন শিক্ষার্থী হিসেবে বলতে চাই, শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার করে যুগোপযোগী ও বিশ্বমানের শিক্ষা পদ্ধতি চালু করা এখন সময়ের দাবি। আজকের শিক্ষার্থীরাই জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার। তাদের নেতৃত্বে বাস্তবায়ন হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা।