ইপেপার । আজবৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আনুষ্ঠানিকতায় যেন ইফতার সীমাবদ্ধ না থাকে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:২৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ মে ২০১৯
  • / ২৬৬ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক:
বছরের নির্দিষ্ট একটি মাস জান্নাতের দরজাগুলো খুলে রাখা হয়। বন্ধ করে রাখা হয় জাহান্নামের সব দরজা। মুমিনরা তখন ডুব দেয় আত্মশুদ্ধির পবিত্র মহাসাগরে। এ এক মহিমান্বিত মাস রমজানুল মুবারক। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, যখন রমজান মাস আসে, জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলোকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এবং শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়। (বুখারি, হাদিস : ২৩৬৬) ফলে এ মাসে মুমিন ইবাদতের প্রতি বেশি মনোনিবেস করে, নামাজ, রোজা, সদকা, জিকির ও কোরআন তেলাওয়াতে মগ্ন থাকে। গুনাহ থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকার চেষ্ট করে। মুমিনরা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রোজা রাখে আবার একই সঙ্গে ইফতারের মাধ্যমে রোজার সমাপ্তি ঘটে। রমজানে ইফতারের মুহূর্তটি প্রতিটি মুমিনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও আনন্দের। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দক্ষণ মুহূর্ত রয়েছে। একটি আনন্দের মুহূর্ত হলো ইফতারের সময়। আরেকটি আনন্দের মুহূর্ত হলো, মহান আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের সময়। (তিরমিজি, হাদিস : ৬৯৬) যখন আল্লাহ নিজ হাতে বান্দাকে রোজার প্রতিদান দেবেন। কিন্তু ইফতারকে কেন্দ্র করে আমাদের সমাজে এমন কিছু জিনিসের আবির্ভাব হয়েছে, যেগুলো নীরবে আমাদের রোজার মহিমা ক্ষুণœ করছে। অথচ আমরা টেরও পাচ্ছি না। অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে কখনো আমাদের ইবাদতগুলোকে আমরা নিছক আনুষ্ঠানিকতায় রূপ দিয়ে দিয়েছি তা আমরা নিজেরাও উপলদ্ধি করতে পারিনি। যার চাক্ষুস প্রমাণ বর্তমানে প্রচলিত ইফতার মাহফিল। বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক ব্যানারে ইফতার মাহফিল করতে গিয়ে যে পদ্ধতি আমরা অবলম্বন করছি, তাতে কি আদৌ কোনো সাওয়াব মিলবে কি না, তা ভেবে দেখা প্রয়োজন। আমাদের ইফতার মাহফিলগুলো যেভাবে বেগানা নারী-পুরুষের অবাধ মিলন মেলা ও সেলফি জোনে পরিণত হচ্ছে, তাতে রোজাদারকে ইফতার করানোর সাওয়াবের চেয়ে গুনাহের পাল্লাই ভারী হয়ে যাচ্ছে। তাই ইফতারের মতো ইবাদতে শরিয়তের অন্যতম ফরজ পর্দা যাতে ক্ষুণœ না হয় ও সেলফির মাধ্যমে আমাদের ইবাদত যাতে আত্মপ্রদর্শনের ফরমালিনে ধুয়ে বিষাক্ত না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি লোক দেখানো ইবাদত করে, আল্লাহ এর বিনিময়ে তার লোক দেখানো উদ্দেশ্য প্রকাশ করে দেবেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪৯৯)

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আনুষ্ঠানিকতায় যেন ইফতার সীমাবদ্ধ না থাকে

আপলোড টাইম : ১১:২৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ মে ২০১৯

ধর্ম ডেস্ক:
বছরের নির্দিষ্ট একটি মাস জান্নাতের দরজাগুলো খুলে রাখা হয়। বন্ধ করে রাখা হয় জাহান্নামের সব দরজা। মুমিনরা তখন ডুব দেয় আত্মশুদ্ধির পবিত্র মহাসাগরে। এ এক মহিমান্বিত মাস রমজানুল মুবারক। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, যখন রমজান মাস আসে, জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলোকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এবং শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়। (বুখারি, হাদিস : ২৩৬৬) ফলে এ মাসে মুমিন ইবাদতের প্রতি বেশি মনোনিবেস করে, নামাজ, রোজা, সদকা, জিকির ও কোরআন তেলাওয়াতে মগ্ন থাকে। গুনাহ থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকার চেষ্ট করে। মুমিনরা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রোজা রাখে আবার একই সঙ্গে ইফতারের মাধ্যমে রোজার সমাপ্তি ঘটে। রমজানে ইফতারের মুহূর্তটি প্রতিটি মুমিনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও আনন্দের। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দক্ষণ মুহূর্ত রয়েছে। একটি আনন্দের মুহূর্ত হলো ইফতারের সময়। আরেকটি আনন্দের মুহূর্ত হলো, মহান আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের সময়। (তিরমিজি, হাদিস : ৬৯৬) যখন আল্লাহ নিজ হাতে বান্দাকে রোজার প্রতিদান দেবেন। কিন্তু ইফতারকে কেন্দ্র করে আমাদের সমাজে এমন কিছু জিনিসের আবির্ভাব হয়েছে, যেগুলো নীরবে আমাদের রোজার মহিমা ক্ষুণœ করছে। অথচ আমরা টেরও পাচ্ছি না। অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে কখনো আমাদের ইবাদতগুলোকে আমরা নিছক আনুষ্ঠানিকতায় রূপ দিয়ে দিয়েছি তা আমরা নিজেরাও উপলদ্ধি করতে পারিনি। যার চাক্ষুস প্রমাণ বর্তমানে প্রচলিত ইফতার মাহফিল। বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক ব্যানারে ইফতার মাহফিল করতে গিয়ে যে পদ্ধতি আমরা অবলম্বন করছি, তাতে কি আদৌ কোনো সাওয়াব মিলবে কি না, তা ভেবে দেখা প্রয়োজন। আমাদের ইফতার মাহফিলগুলো যেভাবে বেগানা নারী-পুরুষের অবাধ মিলন মেলা ও সেলফি জোনে পরিণত হচ্ছে, তাতে রোজাদারকে ইফতার করানোর সাওয়াবের চেয়ে গুনাহের পাল্লাই ভারী হয়ে যাচ্ছে। তাই ইফতারের মতো ইবাদতে শরিয়তের অন্যতম ফরজ পর্দা যাতে ক্ষুণœ না হয় ও সেলফির মাধ্যমে আমাদের ইবাদত যাতে আত্মপ্রদর্শনের ফরমালিনে ধুয়ে বিষাক্ত না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি লোক দেখানো ইবাদত করে, আল্লাহ এর বিনিময়ে তার লোক দেখানো উদ্দেশ্য প্রকাশ করে দেবেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪৯৯)