ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আজ ৬ ডিসেম্বর মেহেরপুর মুক্ত দিবস

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:১৫:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৯
  • / ২০০ বার পড়া হয়েছে

মেহের আমজাদ, মেহেরপুর:
আজ ৬ ডিসেম্বর মেহেরপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশের অস্থায়ী রাজধানী খ্যাত মেহেরপুর পাক হানাদার মুক্ত হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা হামলায় একে একে ভেঙে পড়ে পাক হানাদারদের শক্তিশালী সামরিক বলয়। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে ৫ ডিসেম্বর রাত থেকে পাকবাহিনী গোপনে মেহেরপুর ছেড়ে পালাতে থাকে। ৬ ডিসেম্বর সকালে মুক্তিবাহিনী মেহেরপুর শহরে প্রবেশ করলে অবরুদ্ধ জনতা মুক্তি বাহিনীর সঙ্গে জয়ের উল্লাসে যোগ দেন। দিবসটি পালন উপলক্ষে আজ জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে র‌্যালি, শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে স্বাধীনতার সুতিকাগার মুজিবনগর তথা মেহেরপুরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তৎকালীন এসডিও তৌফিক এলাহির সক্রিয় ভূমিকায় ছাত্র, আনসার-মুজাহিদদের নিয়ে মুক্তিবাহিনী গড়ে তোলা হয়। ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রশিক্ষণ শেষে মুক্তি বাহিনী মেহেরপুর প্রবেশ করে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। পাক বাহিনীর হাত থেকে মেহেরপুরকে মুক্ত করতে চারদিক থেকে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে মুক্তি বাহিনী।
মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আতাউল হাকিম লাল মিয়া বলেন, ‘যুদ্ধকালীন সময় পাকহানাদার বাহিনী অনেক নারী-পুরুষসহ সাধারণ মানুষদের ভোকেশনাল, মেহেরপুর সরকারি কলেজের পেছনে, তাহের ক্লিনিক পাড়াসহ বিভিন্ন সেলে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্মম ও অকথ্যভাবে নির্যাতন চালাত। ৫ ডিসেম্বর রাতে পাক হানাদারবাহিনী চলে যাওয়ার সময় মেহেরপুর শহরের ওয়াপদা, মেহেরপুরের আমঝুপি ব্রিজ, দ্বিনদত্তের ব্রিজসহ এ জেলার গুরত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো ধ্বংস করে দেয়। ৬ ডিসেম্বর মেহেরপুর মুক্ত হয়। আমরা হুংকার দিয়ে মেহেরপুরে প্রবেশ করি। আকাশে ফাঁকা গুলি ছুড়ে আনন্দ করি। মেহেরপুরে প্রবেশ করার পর আনন্দ বিষাদে পরিণত হয় অসংখ্য বধ্যভূমি ও লাশ দেখে। তবে স্বাধীনতার সেই অপার আনন্দ অতুলনীয়।’
মেহেরপুর জেলায় ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী দ্বারা নিহত শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গনকবরগুলোর স্থানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি করে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম বলেন, আগামী প্রজন্ম যাতে করে জানতে পারে এবং বুঝতে পারে এই স্মৃতিসৌধগুলোর মর্মকথা। যে কারণে গণকবরগুলোর স্থানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণসহ সংক্ষিপ্ত আকারে হলেও স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করার দাবি জানান।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজ ৬ ডিসেম্বর মেহেরপুর মুক্ত দিবস

আপলোড টাইম : ১১:১৫:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৯

মেহের আমজাদ, মেহেরপুর:
আজ ৬ ডিসেম্বর মেহেরপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশের অস্থায়ী রাজধানী খ্যাত মেহেরপুর পাক হানাদার মুক্ত হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা হামলায় একে একে ভেঙে পড়ে পাক হানাদারদের শক্তিশালী সামরিক বলয়। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে ৫ ডিসেম্বর রাত থেকে পাকবাহিনী গোপনে মেহেরপুর ছেড়ে পালাতে থাকে। ৬ ডিসেম্বর সকালে মুক্তিবাহিনী মেহেরপুর শহরে প্রবেশ করলে অবরুদ্ধ জনতা মুক্তি বাহিনীর সঙ্গে জয়ের উল্লাসে যোগ দেন। দিবসটি পালন উপলক্ষে আজ জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে র‌্যালি, শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে স্বাধীনতার সুতিকাগার মুজিবনগর তথা মেহেরপুরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তৎকালীন এসডিও তৌফিক এলাহির সক্রিয় ভূমিকায় ছাত্র, আনসার-মুজাহিদদের নিয়ে মুক্তিবাহিনী গড়ে তোলা হয়। ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রশিক্ষণ শেষে মুক্তি বাহিনী মেহেরপুর প্রবেশ করে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। পাক বাহিনীর হাত থেকে মেহেরপুরকে মুক্ত করতে চারদিক থেকে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে মুক্তি বাহিনী।
মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আতাউল হাকিম লাল মিয়া বলেন, ‘যুদ্ধকালীন সময় পাকহানাদার বাহিনী অনেক নারী-পুরুষসহ সাধারণ মানুষদের ভোকেশনাল, মেহেরপুর সরকারি কলেজের পেছনে, তাহের ক্লিনিক পাড়াসহ বিভিন্ন সেলে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্মম ও অকথ্যভাবে নির্যাতন চালাত। ৫ ডিসেম্বর রাতে পাক হানাদারবাহিনী চলে যাওয়ার সময় মেহেরপুর শহরের ওয়াপদা, মেহেরপুরের আমঝুপি ব্রিজ, দ্বিনদত্তের ব্রিজসহ এ জেলার গুরত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো ধ্বংস করে দেয়। ৬ ডিসেম্বর মেহেরপুর মুক্ত হয়। আমরা হুংকার দিয়ে মেহেরপুরে প্রবেশ করি। আকাশে ফাঁকা গুলি ছুড়ে আনন্দ করি। মেহেরপুরে প্রবেশ করার পর আনন্দ বিষাদে পরিণত হয় অসংখ্য বধ্যভূমি ও লাশ দেখে। তবে স্বাধীনতার সেই অপার আনন্দ অতুলনীয়।’
মেহেরপুর জেলায় ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী দ্বারা নিহত শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গনকবরগুলোর স্থানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি করে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম বলেন, আগামী প্রজন্ম যাতে করে জানতে পারে এবং বুঝতে পারে এই স্মৃতিসৌধগুলোর মর্মকথা। যে কারণে গণকবরগুলোর স্থানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণসহ সংক্ষিপ্ত আকারে হলেও স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করার দাবি জানান।