ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আজ শনিবার বাদ আসর উথলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে নামাজে জানাযা শেষে পারিবারিক করস্থানে দাফন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৪৬:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ নভেম্বর ২০১৭
  • / ৪২৬ বার পড়া হয়েছে

জীবননগরের উথলীতে মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনার শিকার হয়ে ১ মাস ২৬ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে
না ফেরার দেশে চলে গেলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিক হাজী সাইদুর রহমান ধুন্দু : বিভিন্ন মহলের শোক

এসএম শাফায়েত: ট্রেন দুর্ঘটনার শিকার হয়ে দীর্ঘ ১ মাস ২৬ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি’র সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি, উথলী ইউনিয়ন পরিষদের তিন তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান (সাবেক), ধর্ণাঢ্য ব্যবসায়ী হাজী সাইদুর রহমান ধুন্দু (ইন্নালিল্লাহে…………রাজেউন)। গতকাল শুক্রবার দিনগত রাত ১১টা ৩৫মিনিটে রাজধানীর তেঁজগাও এলাকার ইমপালস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর। তিনি স্ত্রী, দু’কন্যা ও দু’ছেলেসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। হাজী সাইদুর রহমান বিশ্বাস ধুন্দু উথলী বিশ্বাসপাড়ার মৃত খলিলুর রহমান বিশ্বাসের বড় ছেলে এবং একই পাড়ার হাজী মো. আতিয়ার রহমান বিশ্বাসের (লিলু মিয়া) জামাই।
হাজী সাইদুর রহমান ধুন্দু গত ১৫ই সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উথলী বিশ্বাসপাড়াস্থ শ্বশুরবাড়ি থেকে রাতের খাওয়া দাওয়া শেষে নীল রঙের (ঢাকা মেট্রো- ঘ ১৩-৪১২৫) নিজস্ব প্রাইভেটকারযোগে সহধর্মীনি পারভীন সুলতানা বন্যা (৫০) কে নিয়ে জীবননগরের বাড়িতে ফিরছিলেন। পথিমধ্যি উথলী রেলগেট পারাপারের সময় রেল লাইনের উপরে উঠতেই গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় গাড়ি থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে ততক্ষণে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস (৭২৫, আপ) ট্রেন তাঁদের গাড়িটিকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। ট্রেনের ধাক্কায় গাড়িটি দুমড়ে মুচড়ে রাস্তার পাশে উল্টে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা ছুটে এসে দু’জনকেই উদ্ধার করে। পরে স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় গুরুতর জখম অবস্থায় হাজী সাইদুর রহমান ধুন্দুকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ও তার স্ত্রীকে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। রাতে তার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ঢাকায় নিয়ে প্রথমে তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। এরপর দফায়-দফায় চিকিৎসকরা তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। ওই সময় চিকিৎসকরা তার মস্তিষ্কের অসংখ্য স্থানে রক্তক্ষরণ হওয়ার আলামত দেখতে পান। এ কারনে তাকে আইসিইউতে ৭২ ঘন্টার জন্য নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। এরপর তার শারিরীক অবস্থার আরো অবনতি হলে হাসপাতালের করোনারি ওয়ার্ডে রাখা হয়। একপর্যায়ে জ্ঞান না ফিরলেও পরবর্তীতে বেডে দেওয়া হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা পিজি হাসপাতালেও স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সর্বশেষ রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ইমপালস হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। গত শনিবার রাত হতে ক্রমেই তার অবস্থার অবনতির একপর্যায়ে চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে পান হাজি সাইদুর রহমান ধুন্দুর মস্তিস্কের নার্ভ ছিঁড়ে ড্যামেজ হয়ে গেছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানের ক্ষত হতে ইনফেকশন সৃষ্টি হয়ে রক্তে ছড়িয়ে পড়েছে। একই সাথে কিডনী ও হৃদযন্ত্রও ঠিকমত কাজ করছে না। এ অবস্থার মধ্যে গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত রাত ৮ টার দিকে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। শেষ পর্যন্ত রাত ১১ টা ৩৫ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
হাজী সাইদুর রহমান ধুন্দুর ছোট ভাই আসাদুর রহমান বিশ্বাস সময়ের সমীকরণকে জানান, রাত আড়াইটার দিকে ভাইয়ের (ধুন্দু মিয়ার) মরদেহ নিয়ে ঢাকা হতে সরাসরি নিজগ্রাম উথলীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে সাথে থাকা স্বজনরা। আজ (শনিবার) বাদ আসর উথলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে নামাজে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হবে।
এদিকে বর্ষীয়ান রাজনীতিক হাজী সাইদুর রহমান ধুন্দুর মৃত্যুতে গভীর শোক ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব মাহমুদ হাসান খান বাবু, আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য মো. শরীফুজ্জামান শরীফ, দৈনিক সময়ের সমীকরণ’র প্রধান সম্পাদক নাজমুল হক স্বপন, জীবননগর উপজেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, চুয়াডাঙ্গা নিউ মার্কেট ব্যবসায়ীক নেতা সুমন পারভেজসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজ শনিবার বাদ আসর উথলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে নামাজে জানাযা শেষে পারিবারিক করস্থানে দাফন

আপলোড টাইম : ১০:৪৬:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ নভেম্বর ২০১৭

জীবননগরের উথলীতে মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনার শিকার হয়ে ১ মাস ২৬ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে
না ফেরার দেশে চলে গেলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিক হাজী সাইদুর রহমান ধুন্দু : বিভিন্ন মহলের শোক

এসএম শাফায়েত: ট্রেন দুর্ঘটনার শিকার হয়ে দীর্ঘ ১ মাস ২৬ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি’র সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি, উথলী ইউনিয়ন পরিষদের তিন তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান (সাবেক), ধর্ণাঢ্য ব্যবসায়ী হাজী সাইদুর রহমান ধুন্দু (ইন্নালিল্লাহে…………রাজেউন)। গতকাল শুক্রবার দিনগত রাত ১১টা ৩৫মিনিটে রাজধানীর তেঁজগাও এলাকার ইমপালস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর। তিনি স্ত্রী, দু’কন্যা ও দু’ছেলেসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। হাজী সাইদুর রহমান বিশ্বাস ধুন্দু উথলী বিশ্বাসপাড়ার মৃত খলিলুর রহমান বিশ্বাসের বড় ছেলে এবং একই পাড়ার হাজী মো. আতিয়ার রহমান বিশ্বাসের (লিলু মিয়া) জামাই।
হাজী সাইদুর রহমান ধুন্দু গত ১৫ই সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উথলী বিশ্বাসপাড়াস্থ শ্বশুরবাড়ি থেকে রাতের খাওয়া দাওয়া শেষে নীল রঙের (ঢাকা মেট্রো- ঘ ১৩-৪১২৫) নিজস্ব প্রাইভেটকারযোগে সহধর্মীনি পারভীন সুলতানা বন্যা (৫০) কে নিয়ে জীবননগরের বাড়িতে ফিরছিলেন। পথিমধ্যি উথলী রেলগেট পারাপারের সময় রেল লাইনের উপরে উঠতেই গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় গাড়ি থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে ততক্ষণে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস (৭২৫, আপ) ট্রেন তাঁদের গাড়িটিকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। ট্রেনের ধাক্কায় গাড়িটি দুমড়ে মুচড়ে রাস্তার পাশে উল্টে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা ছুটে এসে দু’জনকেই উদ্ধার করে। পরে স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় গুরুতর জখম অবস্থায় হাজী সাইদুর রহমান ধুন্দুকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ও তার স্ত্রীকে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। রাতে তার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ঢাকায় নিয়ে প্রথমে তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। এরপর দফায়-দফায় চিকিৎসকরা তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। ওই সময় চিকিৎসকরা তার মস্তিষ্কের অসংখ্য স্থানে রক্তক্ষরণ হওয়ার আলামত দেখতে পান। এ কারনে তাকে আইসিইউতে ৭২ ঘন্টার জন্য নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। এরপর তার শারিরীক অবস্থার আরো অবনতি হলে হাসপাতালের করোনারি ওয়ার্ডে রাখা হয়। একপর্যায়ে জ্ঞান না ফিরলেও পরবর্তীতে বেডে দেওয়া হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা পিজি হাসপাতালেও স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সর্বশেষ রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ইমপালস হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। গত শনিবার রাত হতে ক্রমেই তার অবস্থার অবনতির একপর্যায়ে চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে পান হাজি সাইদুর রহমান ধুন্দুর মস্তিস্কের নার্ভ ছিঁড়ে ড্যামেজ হয়ে গেছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানের ক্ষত হতে ইনফেকশন সৃষ্টি হয়ে রক্তে ছড়িয়ে পড়েছে। একই সাথে কিডনী ও হৃদযন্ত্রও ঠিকমত কাজ করছে না। এ অবস্থার মধ্যে গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত রাত ৮ টার দিকে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। শেষ পর্যন্ত রাত ১১ টা ৩৫ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
হাজী সাইদুর রহমান ধুন্দুর ছোট ভাই আসাদুর রহমান বিশ্বাস সময়ের সমীকরণকে জানান, রাত আড়াইটার দিকে ভাইয়ের (ধুন্দু মিয়ার) মরদেহ নিয়ে ঢাকা হতে সরাসরি নিজগ্রাম উথলীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে সাথে থাকা স্বজনরা। আজ (শনিবার) বাদ আসর উথলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে নামাজে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হবে।
এদিকে বর্ষীয়ান রাজনীতিক হাজী সাইদুর রহমান ধুন্দুর মৃত্যুতে গভীর শোক ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব মাহমুদ হাসান খান বাবু, আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য মো. শরীফুজ্জামান শরীফ, দৈনিক সময়ের সমীকরণ’র প্রধান সম্পাদক নাজমুল হক স্বপন, জীবননগর উপজেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, চুয়াডাঙ্গা নিউ মার্কেট ব্যবসায়ীক নেতা সুমন পারভেজসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ।