ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আইনের অপপ্রয়োগ রোধ হবে কী করে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:২৬:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জানুয়ারী ২০১৮
  • / ২৮৬ বার পড়া হয়েছে

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এই ধারার আওতায় হয়রানির শিকার হতে পারেন, এমন আশঙ্কাও করা হয়েছে। এ ধারা বাতিলের দাবিতে সাংবাদিকরা আন্দোলন করেছেন। সবার দাবির মুখে ৫৭ ধারা বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু ৫৭ ধারা বিলুপ্ত হচ্ছে না। জাতীয় দৈনিক এক পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকের জন্য যে সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে, তাতে উল্লেখ আছে, ‘ধারা ৬২-এ আইন কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬-এর ৫৪, ৫৫, ৫৬, ৫৭ ও ৬৬ বিলুপ্তির প্রস্তাব করা হয়েছে।’ কিন্তু যে ধরনের ঘটনায় ৫৭ ধারার অপপ্রয়োগ চলছিল, ক্ষেত্র বিশেষে শাস্তি কিছুটা কমানো হলেও সেগুলোর ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হয়নি। বরং অপরাধের গুরুত্ব ও দ-ের মাত্রার ভিত্তিতে কয়েকটি ধারার অপরাধ অজামিনযোগ্যও করা হচ্ছে। ২০১৬ সালে মন্ত্রিসভা যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন করে, সেখানে জাতির পিতা, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা, প্রচারণা এসবে মদদ দেওয়ার শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদ- বা এক কোটি টাকা অর্থদ- বা উভয় দ-ের বিধান রাখা হয়েছিল। খসড়া আইনে অপরাধের শাস্তি কমিয়ে অনধিক ১৪ বছর কারাদ- বা অনধিক ৫০ লাখ টাকার অর্থদ- বা উভয় দ-ে দ-িত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধগুলো ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের কয়েকটি ধারায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। যেমন যদি কোনো ব্যক্তি ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে ইচ্ছাকৃতভাবে আক্রমণাত্মক বা ভীতি প্রদর্শনমূলক তথ্য প্রেরণ করেন, ব্যক্তিকে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ করতে পারে এমন তথ্য প্রকাশ করেন, মিথ্যা জানা থাকার পরও কোনো ব্যক্তিকে বিরক্ত, অপমান, অপদস্থ বা হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য তথ্য প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, তাহলে এটা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। প্রথম দফায় এ অপরাধ করলে শাস্তি হবে তিন বছরের কারাদ- বা অনধিক তিন লাখ টাকা অর্থদ- বা উভয় দ-। এসব অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে বা বারবার করলে অনধিক পাঁচ বছরের কারাদ- বা অনধিক ১০ লাখ টাকা অর্থদ- বা উভয় দ-ে দ-িত করা হবে। এভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, শ্রেণি বা সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা বা বিদ্বেষ সৃষ্টি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট ইত্যাদি অপরাধের শাস্তির কথাও বলা হয়েছে। ৫৭ ধারা নিয়ে সবচেয়ে দুশ্চিন্তার কারণ ছিল এর অপপ্রয়োগ। এখন এই ধারাটি বিলুপ্ত হলেও ধারায় বর্ণিত বিষয়গুলো যদি বিভিন্ন ধারার মধ্যে থেকে যায়, তাহলে অপপ্রয়োগ রোধ করার পথটিও খোলা রাখতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে আইনের অপপ্রয়োগ হবে না।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আইনের অপপ্রয়োগ রোধ হবে কী করে

আপলোড টাইম : ১০:২৬:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জানুয়ারী ২০১৮

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এই ধারার আওতায় হয়রানির শিকার হতে পারেন, এমন আশঙ্কাও করা হয়েছে। এ ধারা বাতিলের দাবিতে সাংবাদিকরা আন্দোলন করেছেন। সবার দাবির মুখে ৫৭ ধারা বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু ৫৭ ধারা বিলুপ্ত হচ্ছে না। জাতীয় দৈনিক এক পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকের জন্য যে সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে, তাতে উল্লেখ আছে, ‘ধারা ৬২-এ আইন কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬-এর ৫৪, ৫৫, ৫৬, ৫৭ ও ৬৬ বিলুপ্তির প্রস্তাব করা হয়েছে।’ কিন্তু যে ধরনের ঘটনায় ৫৭ ধারার অপপ্রয়োগ চলছিল, ক্ষেত্র বিশেষে শাস্তি কিছুটা কমানো হলেও সেগুলোর ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হয়নি। বরং অপরাধের গুরুত্ব ও দ-ের মাত্রার ভিত্তিতে কয়েকটি ধারার অপরাধ অজামিনযোগ্যও করা হচ্ছে। ২০১৬ সালে মন্ত্রিসভা যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন করে, সেখানে জাতির পিতা, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা, প্রচারণা এসবে মদদ দেওয়ার শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদ- বা এক কোটি টাকা অর্থদ- বা উভয় দ-ের বিধান রাখা হয়েছিল। খসড়া আইনে অপরাধের শাস্তি কমিয়ে অনধিক ১৪ বছর কারাদ- বা অনধিক ৫০ লাখ টাকার অর্থদ- বা উভয় দ-ে দ-িত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধগুলো ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের কয়েকটি ধারায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। যেমন যদি কোনো ব্যক্তি ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে ইচ্ছাকৃতভাবে আক্রমণাত্মক বা ভীতি প্রদর্শনমূলক তথ্য প্রেরণ করেন, ব্যক্তিকে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ করতে পারে এমন তথ্য প্রকাশ করেন, মিথ্যা জানা থাকার পরও কোনো ব্যক্তিকে বিরক্ত, অপমান, অপদস্থ বা হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য তথ্য প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, তাহলে এটা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। প্রথম দফায় এ অপরাধ করলে শাস্তি হবে তিন বছরের কারাদ- বা অনধিক তিন লাখ টাকা অর্থদ- বা উভয় দ-। এসব অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে বা বারবার করলে অনধিক পাঁচ বছরের কারাদ- বা অনধিক ১০ লাখ টাকা অর্থদ- বা উভয় দ-ে দ-িত করা হবে। এভাবে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, শ্রেণি বা সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা বা বিদ্বেষ সৃষ্টি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট ইত্যাদি অপরাধের শাস্তির কথাও বলা হয়েছে। ৫৭ ধারা নিয়ে সবচেয়ে দুশ্চিন্তার কারণ ছিল এর অপপ্রয়োগ। এখন এই ধারাটি বিলুপ্ত হলেও ধারায় বর্ণিত বিষয়গুলো যদি বিভিন্ন ধারার মধ্যে থেকে যায়, তাহলে অপপ্রয়োগ রোধ করার পথটিও খোলা রাখতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে আইনের অপপ্রয়োগ হবে না।