ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

অভিশপ্ত শিশুশ্রম:আইন থাকলেও তার সঠিক প্রয়োগ হচ্ছে কি?

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:১০:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০১৭
  • / ৫০৫ বার পড়া হয়েছে

মিঠুন মাহমুদ/ফেরদৌস ওয়াহিদ: শিশুশ্রম বাংলাদেশে বর্তমান সময়ে দিনদিন বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশে শিশুশ্রম রোধে আইন করা হলেও তা কতটুকু প্রয়োগ করা হচ্ছে তা আমাদের চারপাশেই একটু চোখ কান মুখ খুলে খোজ খবর নিলেই বোঝা যায়। আগে জেনে নেওয়া যাক শিশুশ্রম কি? শিশুশ্রম হলো যাদের বয়স ১৪ বছর পূর্ণ হয় নাই তারাই শিশু আর এই বয়সের মধ্যে যারা বিভিন্ন শারীরিক কাজের মধ্যে লিপ্ত থাকে তাদেরকেই শিশুশ্রমিক বলা হয়।  পরিবারকে দু‘ মুঠো অন্ন আর অর্থনৈতিক সহযোগিতার জন্য বিভিন্ন রকম ঝুকিপূর্ণ কাজে শিশুরা জড়িয়ে পড়ছে। শিশুশ্রম আইনে থাকলেও নেই তার কোন বাস্তবায়ন। আমাদের দেশের শিশুদের বৃহৎ একটি অংশ বিদ্যালয়ে যায়না। প্রায়ই ৪০ শতাংশ শিশু বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক কার্যে স্কুলে গমন করতে পারেনা। পরিবারের অর্থনৈতিক চাকা সচ্ছল করতে গিয়ে বিসর্জন দিতে হয় তার শিক্ষাজীবন। শিশু শ্রমের মধ্যে ঝুকিপূর্ণ কিছু কাজ যেমন- ওয়ার্কশপের কারিগর, মিস্ত্রী, মাটি কাটা, রিক্সা ভ্যান চালানো, গাড়ির হেলপার, হোটেল বয় সহ আরো অন্যান্য ঝুকিপূর্ণ কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত করছে। ব্রাজিলে শিশুশ্রম বিষয়ক তৃতীয় আর্ন্তজান্তিক সম্মেলনে প্রকাশিত জরিপে বলা হয় এখনো সারা বিশ্বে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা ১৬ কোটি ৮০ লক্ষ আমাদের দেশেও কম নই। আর আমাদের দেশের ২০ লক্ষ গৃহ শ্রমিকের মধ্যে প্রায় ৯৩ শতাংশ অর্থাৎ ১৮ লক্ষ ৬০ হাজার শিশুই গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করছে। এসব গৃহ শ্রমিকরা মানুষিক , শারিরীক, মৌখিক, যৌন নির্যাতন ও অর্থনৈতিক শোষনের শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত।  মেহেদী নামক ৮-৯ বছর বয়সী এক শিশু শ্রমিকের সাথে কথা বললে সে আমাদেরকে বলে, আমি বাজারের একটি ওয়েল্ডিং এর দোকানে  সকাল ৭ টা থেকে সন্ধা ৭ টা পর্যন্ত কাজ করি। পরিশ্রম অনুযায়ী আমি আমার ন্যায্য শ্রম মূল্য পায়না। মেহেদীর স্বপ্ন ছিল বই খাতা কলম নিয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়ার কিন্তু সে এখন  একজন শিশু শ্রমিক্। ঝুকিপূর্ণ শ্রমের মধ্যে অন্যতম হলো ওয়েল্ডিং এর কাজ। ওয়েল্ডিং এর কাজ করতে গিয়ে অনেকেই চোখের আঘাত পেয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে। তাই শিশু শ্রম কমিয়ে আনতে হলে প্রয়োজন সু-নিদ্রিষ্টভাবে আইনের প্রয়োগ ও কঠোর শাস্তির বিধান যাতে যারা শিশু শ্রমিক নিযুক্ত করে তারা যাতে কোন রকমেই ছাড় না পায়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

অভিশপ্ত শিশুশ্রম:আইন থাকলেও তার সঠিক প্রয়োগ হচ্ছে কি?

আপলোড টাইম : ০৫:১০:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০১৭

মিঠুন মাহমুদ/ফেরদৌস ওয়াহিদ: শিশুশ্রম বাংলাদেশে বর্তমান সময়ে দিনদিন বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশে শিশুশ্রম রোধে আইন করা হলেও তা কতটুকু প্রয়োগ করা হচ্ছে তা আমাদের চারপাশেই একটু চোখ কান মুখ খুলে খোজ খবর নিলেই বোঝা যায়। আগে জেনে নেওয়া যাক শিশুশ্রম কি? শিশুশ্রম হলো যাদের বয়স ১৪ বছর পূর্ণ হয় নাই তারাই শিশু আর এই বয়সের মধ্যে যারা বিভিন্ন শারীরিক কাজের মধ্যে লিপ্ত থাকে তাদেরকেই শিশুশ্রমিক বলা হয়।  পরিবারকে দু‘ মুঠো অন্ন আর অর্থনৈতিক সহযোগিতার জন্য বিভিন্ন রকম ঝুকিপূর্ণ কাজে শিশুরা জড়িয়ে পড়ছে। শিশুশ্রম আইনে থাকলেও নেই তার কোন বাস্তবায়ন। আমাদের দেশের শিশুদের বৃহৎ একটি অংশ বিদ্যালয়ে যায়না। প্রায়ই ৪০ শতাংশ শিশু বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক কার্যে স্কুলে গমন করতে পারেনা। পরিবারের অর্থনৈতিক চাকা সচ্ছল করতে গিয়ে বিসর্জন দিতে হয় তার শিক্ষাজীবন। শিশু শ্রমের মধ্যে ঝুকিপূর্ণ কিছু কাজ যেমন- ওয়ার্কশপের কারিগর, মিস্ত্রী, মাটি কাটা, রিক্সা ভ্যান চালানো, গাড়ির হেলপার, হোটেল বয় সহ আরো অন্যান্য ঝুকিপূর্ণ কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত করছে। ব্রাজিলে শিশুশ্রম বিষয়ক তৃতীয় আর্ন্তজান্তিক সম্মেলনে প্রকাশিত জরিপে বলা হয় এখনো সারা বিশ্বে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা ১৬ কোটি ৮০ লক্ষ আমাদের দেশেও কম নই। আর আমাদের দেশের ২০ লক্ষ গৃহ শ্রমিকের মধ্যে প্রায় ৯৩ শতাংশ অর্থাৎ ১৮ লক্ষ ৬০ হাজার শিশুই গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করছে। এসব গৃহ শ্রমিকরা মানুষিক , শারিরীক, মৌখিক, যৌন নির্যাতন ও অর্থনৈতিক শোষনের শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত।  মেহেদী নামক ৮-৯ বছর বয়সী এক শিশু শ্রমিকের সাথে কথা বললে সে আমাদেরকে বলে, আমি বাজারের একটি ওয়েল্ডিং এর দোকানে  সকাল ৭ টা থেকে সন্ধা ৭ টা পর্যন্ত কাজ করি। পরিশ্রম অনুযায়ী আমি আমার ন্যায্য শ্রম মূল্য পায়না। মেহেদীর স্বপ্ন ছিল বই খাতা কলম নিয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়ার কিন্তু সে এখন  একজন শিশু শ্রমিক্। ঝুকিপূর্ণ শ্রমের মধ্যে অন্যতম হলো ওয়েল্ডিং এর কাজ। ওয়েল্ডিং এর কাজ করতে গিয়ে অনেকেই চোখের আঘাত পেয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে। তাই শিশু শ্রম কমিয়ে আনতে হলে প্রয়োজন সু-নিদ্রিষ্টভাবে আইনের প্রয়োগ ও কঠোর শাস্তির বিধান যাতে যারা শিশু শ্রমিক নিযুক্ত করে তারা যাতে কোন রকমেই ছাড় না পায়।