ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান আর নেই

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৪৩:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / ৬৬ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের প্রবীণ অভিনেতা, চিত্রনাট্যকার এ টি এম শামসুজ্জামান ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। গতকাল শনিবার সকাল ৮টায় সূত্রাপুরের নিজ বাসায় তিনি ইন্তেকাল করেন বলে জানান তার ছোট ভাই সালেহ জামান। গতকাল বাদ জোহর নামাজে জানাজা শেষে জুরাইন কবরস্থানে তার বড় ছেলে কামরুজ্জামান কবীরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। এ টি এম শামসুজ্জামান দীর্ঘ দিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে গত বুধবারও তাকে হাসপাতালে যেতে হয়েছিল। শুক্রবার বিকেলে সেখান থেকে বাসায় ফিরেছিলেন তিনি। তিনি স্ত্রী, তিন মেয়ে ও দুই ছেলে রেখে গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। দীর্ঘ ছয় দশকের ক্যারিয়ারে অভিনয়ের জোরেই নিজের নামটিকে একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে পেরেছিলেন এ টি এম শামসুজ্জামান। তবে তিনি ছিলেন একাধারে পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, সংলাপকার ও গল্পকার। তার লেখা চিত্রনাট্যের সংখ্যা শতাধিক। অভিনয়ের জন্য আজীবন সম্মাননার পাশাপাশি পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া এ টি এম শামসুজ্জামান ২০১৫ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।
১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর গুণী এই অভিনেতার জন্ম নোয়াখালীর দৌলতপুরে। তিন শ’র বেশি সিনেমায় তিনি অভিনয় করেছেন। সিনেমার বাইরে তিনি অভিনয় করেছেন টেলিভিশন নাটকেও। অভিনেতার পাশাপাশি তিনি একজন চিত্রনাট্যকারও ছিলেন। বেশ কয়েকটি সিনেমার চিত্রনাট্য লিখেছেন তিনি। বিখ্যাত পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর সাথে সহকারী পরিচালক হিসেবে ‘বিষকন্যা’ সিনেমায় প্রথম কাজ শুরু করেন তিনি। তিনি প্রথম কাহিনী ও চিত্রনাট্য রচনা করেন ‘জলছবি’ সিনেমার জন্য। ‘নয়নমনি’ সিনেমায় খলনায়ক হিসেবে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন এ টি এম শামসুজ্জামান। তার উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছেÑ নয়নমনি, অবুঝ মন, দায়ী কে, অবুঝ বউ, মলুয়া, ওরা ১১ জন, লাঠিয়াল, সংগ্রাম, গোলাপী এখন ট্রেনে, সূর্য দীঘল বাড়ি, অশিক্ষিত, রামের সুমতি, ছুটির ঘণ্টা ইত্যাদি। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক : রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ এ টি এম শামসুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে এক শোকবার্তায় বলেন, এ টি এম শামসুজ্জামানের মৃত্যু দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। রাষ্ট্রপতি হামিদ তার রূহের মাগফিরাত কামনা করেন ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এ টি এম শামসুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, চলচ্চিত্র শিল্পে অসাধারণ নৈপুণ্য প্রদর্শনের জন্য মরহুম শামসুজ্জামান দেশের জনগণের অন্তরে আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী মরহুমের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। এ দিকে এ টি এম শামসুজ্জামানের মৃত্যুতে আরো শোক প্রকাশ করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা: মুরাদ হাসান, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের, মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার প্রমুখ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান আর নেই

আপলোড টাইম : ০৮:৪৩:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২১

সমীকরণ প্রতিবেদন:
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের প্রবীণ অভিনেতা, চিত্রনাট্যকার এ টি এম শামসুজ্জামান ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। গতকাল শনিবার সকাল ৮টায় সূত্রাপুরের নিজ বাসায় তিনি ইন্তেকাল করেন বলে জানান তার ছোট ভাই সালেহ জামান। গতকাল বাদ জোহর নামাজে জানাজা শেষে জুরাইন কবরস্থানে তার বড় ছেলে কামরুজ্জামান কবীরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। এ টি এম শামসুজ্জামান দীর্ঘ দিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে গত বুধবারও তাকে হাসপাতালে যেতে হয়েছিল। শুক্রবার বিকেলে সেখান থেকে বাসায় ফিরেছিলেন তিনি। তিনি স্ত্রী, তিন মেয়ে ও দুই ছেলে রেখে গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। দীর্ঘ ছয় দশকের ক্যারিয়ারে অভিনয়ের জোরেই নিজের নামটিকে একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে পেরেছিলেন এ টি এম শামসুজ্জামান। তবে তিনি ছিলেন একাধারে পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, সংলাপকার ও গল্পকার। তার লেখা চিত্রনাট্যের সংখ্যা শতাধিক। অভিনয়ের জন্য আজীবন সম্মাননার পাশাপাশি পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া এ টি এম শামসুজ্জামান ২০১৫ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।
১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর গুণী এই অভিনেতার জন্ম নোয়াখালীর দৌলতপুরে। তিন শ’র বেশি সিনেমায় তিনি অভিনয় করেছেন। সিনেমার বাইরে তিনি অভিনয় করেছেন টেলিভিশন নাটকেও। অভিনেতার পাশাপাশি তিনি একজন চিত্রনাট্যকারও ছিলেন। বেশ কয়েকটি সিনেমার চিত্রনাট্য লিখেছেন তিনি। বিখ্যাত পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর সাথে সহকারী পরিচালক হিসেবে ‘বিষকন্যা’ সিনেমায় প্রথম কাজ শুরু করেন তিনি। তিনি প্রথম কাহিনী ও চিত্রনাট্য রচনা করেন ‘জলছবি’ সিনেমার জন্য। ‘নয়নমনি’ সিনেমায় খলনায়ক হিসেবে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন এ টি এম শামসুজ্জামান। তার উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছেÑ নয়নমনি, অবুঝ মন, দায়ী কে, অবুঝ বউ, মলুয়া, ওরা ১১ জন, লাঠিয়াল, সংগ্রাম, গোলাপী এখন ট্রেনে, সূর্য দীঘল বাড়ি, অশিক্ষিত, রামের সুমতি, ছুটির ঘণ্টা ইত্যাদি। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক : রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ এ টি এম শামসুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে এক শোকবার্তায় বলেন, এ টি এম শামসুজ্জামানের মৃত্যু দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। রাষ্ট্রপতি হামিদ তার রূহের মাগফিরাত কামনা করেন ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এ টি এম শামসুজ্জামানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, চলচ্চিত্র শিল্পে অসাধারণ নৈপুণ্য প্রদর্শনের জন্য মরহুম শামসুজ্জামান দেশের জনগণের অন্তরে আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী মরহুমের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। এ দিকে এ টি এম শামসুজ্জামানের মৃত্যুতে আরো শোক প্রকাশ করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা: মুরাদ হাসান, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের, মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার প্রমুখ।