ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

অবৈধ সম্পদের ভোগদখল আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১০:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জানুয়ারী ২০১৯
  • / ৩১৩ বার পড়া হয়েছে

সরকারি প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতির বিস্তার আতঙ্কজনক অবস্থায় চলে গেছে। এর লাগাম টানা না গেলে সরকারের উন্নয়ন উদ্যোগ যেমন গতি পাবে না, তেমনি জনগণ পাবে না রাষ্ট্রের জরুরি সেবাগুলো। দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসা দুর্নীতির মূলোৎপাটন কোনো সহজ কাজ নয়। তার পরও সৎ ও সাহসী উদ্যোগ থাকলে দুর্নীতির পরিমাণ অনেকটাই কমে আসবে বলে মনে করেন বিশিষ্টজনরা। সে ক্ষেত্রে একটি প্রধান উপায় হচ্ছে কেউ যাতে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ ভোগ করতে না পারে, তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গড়ে তোলা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষ থেকেও সে কথা বলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুদকের ‘অপরাধলব্ধ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ইউনিট’ -এর সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ কাউকে ভোগ করতে দেওয়া হবে না। তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলে অনুসন্ধান চলাকালেই আদালতের সম্মতি সাপেক্ষে তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে। এর আগে অভিযোগপত্র পেশ না হওয়া পর্যন্ত এ কাজ করা যেত না। অবৈধ সম্পদের ভোগদখল বন্ধ করা গেলে অবৈধভাবে উপার্জনের চেষ্টাও কমে যাবে- এটাই স্বাভাবিক। এ ক্ষেত্রে আয়ের সঙ্গে সংগতিহীন ব্যয় চিহ্নিত করাটা জরুরি। বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী অনেক সরকারি কর্মকর্তা তাদের সন্তানদের কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিদেশে পড়ান। অনেকের নামে বেনামে একাধিক বাড়ি বা ফ্ল্যাট রয়েছে। অনেকের পরিবারে তিন-চারটি করে দামি গাড়ি রয়েছে। ব্যাংকে বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কোটি কোটি টাকা সঞ্চয় রয়েছে। ব্যয়ের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করে তাদের আয়ের উৎস খুঁজে দেখতে হবে। ব্যয়ের এই ক্ষেত্রগুলো সম্পূণরূপে ডিজিটালাইজ করা গেলে অনুসন্ধানের কাজটি আরো সহজ হবে। শুধু সরকারি কর্মকর্তাই নয়, সরকারের বাইরেও দুর্নীতি বা অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন ক্রমেই ব্যাপকতা পাচ্ছে। অবৈধ অর্থের লোভে নানা ধরনের অপরাধ তৎপরতাও দ্রুত বেড়ে চলেছে। এসবের লাগাম টানা জরুরি। এ কাজগুলো দুদক, এনবিআর, বাংলাদেশ ব্যাংক, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে করা গেলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যাবে। অবৈধ অর্থের ভোগদখল নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে অপরাধ কর্মকা- ও নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের নানামুখী প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। আমরা মনে করি, অবৈধ সম্পদের ভোগদখল বন্ধ করার যে চিন্তা দুদক করছে, তা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও সাহসী চিন্তা। আমরা আশা করি এই চিন্তার দ্রুত বাস্তবায়ন হোক এবং ক্রমেই তা আরো ব্যাপকতর হোক।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

অবৈধ সম্পদের ভোগদখল আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে

আপলোড টাইম : ১০:১০:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জানুয়ারী ২০১৯

সরকারি প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতির বিস্তার আতঙ্কজনক অবস্থায় চলে গেছে। এর লাগাম টানা না গেলে সরকারের উন্নয়ন উদ্যোগ যেমন গতি পাবে না, তেমনি জনগণ পাবে না রাষ্ট্রের জরুরি সেবাগুলো। দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসা দুর্নীতির মূলোৎপাটন কোনো সহজ কাজ নয়। তার পরও সৎ ও সাহসী উদ্যোগ থাকলে দুর্নীতির পরিমাণ অনেকটাই কমে আসবে বলে মনে করেন বিশিষ্টজনরা। সে ক্ষেত্রে একটি প্রধান উপায় হচ্ছে কেউ যাতে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ ভোগ করতে না পারে, তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গড়ে তোলা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষ থেকেও সে কথা বলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুদকের ‘অপরাধলব্ধ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ইউনিট’ -এর সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ কাউকে ভোগ করতে দেওয়া হবে না। তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেলে অনুসন্ধান চলাকালেই আদালতের সম্মতি সাপেক্ষে তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে। এর আগে অভিযোগপত্র পেশ না হওয়া পর্যন্ত এ কাজ করা যেত না। অবৈধ সম্পদের ভোগদখল বন্ধ করা গেলে অবৈধভাবে উপার্জনের চেষ্টাও কমে যাবে- এটাই স্বাভাবিক। এ ক্ষেত্রে আয়ের সঙ্গে সংগতিহীন ব্যয় চিহ্নিত করাটা জরুরি। বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী অনেক সরকারি কর্মকর্তা তাদের সন্তানদের কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিদেশে পড়ান। অনেকের নামে বেনামে একাধিক বাড়ি বা ফ্ল্যাট রয়েছে। অনেকের পরিবারে তিন-চারটি করে দামি গাড়ি রয়েছে। ব্যাংকে বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কোটি কোটি টাকা সঞ্চয় রয়েছে। ব্যয়ের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করে তাদের আয়ের উৎস খুঁজে দেখতে হবে। ব্যয়ের এই ক্ষেত্রগুলো সম্পূণরূপে ডিজিটালাইজ করা গেলে অনুসন্ধানের কাজটি আরো সহজ হবে। শুধু সরকারি কর্মকর্তাই নয়, সরকারের বাইরেও দুর্নীতি বা অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন ক্রমেই ব্যাপকতা পাচ্ছে। অবৈধ অর্থের লোভে নানা ধরনের অপরাধ তৎপরতাও দ্রুত বেড়ে চলেছে। এসবের লাগাম টানা জরুরি। এ কাজগুলো দুদক, এনবিআর, বাংলাদেশ ব্যাংক, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে করা গেলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যাবে। অবৈধ অর্থের ভোগদখল নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে অপরাধ কর্মকা- ও নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের নানামুখী প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। আমরা মনে করি, অবৈধ সম্পদের ভোগদখল বন্ধ করার যে চিন্তা দুদক করছে, তা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও সাহসী চিন্তা। আমরা আশা করি এই চিন্তার দ্রুত বাস্তবায়ন হোক এবং ক্রমেই তা আরো ব্যাপকতর হোক।