ইপেপার । আজশুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

অন্যের দরজা-জানালায় উঁকি দেয়া পাপ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫০:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ মার্চ ২০২১
  • / ৬৫ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম প্রতিবেদন:
ইসলাম মানুষের সম্মান, ব্যক্তিত্ব ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষায় বিভিন্ন বিধান দিয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা জীব। এই সম্মান রক্ষায় ইসলাম কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষায় ইসলাম গীবত নিষিদ্ধ করেছে এবং অন্যের ঘরে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। বিনা অনুমতিতে অন্যের ঘরে প্রবেশ করলে বিব্রতকর ও বিরক্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, যা ওই ব্যক্তির জীবন সংকুচিত কিংবা হুমকির সম্মুখীন করতে পারে। ঘরে কখনো একান্ত ব্যক্তিগত কাজ করা হয়, যা অন্য কারো দৃষ্টিগোচর হওয়া ঘরের বাসিন্দার কাছে বিব্রতকর হতে পারে। আবার ঘরোয়া জীবনে পোশাক পরিধানে প্রত্যেকের আলাদা রুচি ও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ কাজ করে, অনেকের দেহে শয্যাযাপনের পোশাক থাকে বা পরিহিত পোশাকের অংশবিশেষ খোলা থাকতে পারে, এসব পরিস্থিতিতে ঘর-দরজা ও জানালা দিয়ে উঁকি দিলে কিংবা অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করলে ঘরের অধিবাসী খুবই বিব্রতকর ও লজ্জিতকর অবস্থায় পড়তে পারে। কাউকে এমন পরিস্থিতিতে ফেলার অধিকার ইসলাম দেয়নি। আধুনিক জীবনে মানুষের গৃহের অভ্যন্তর খুবই সংকুচিত। মানুষ নানা প্রয়োজনে বারান্দায় বা বেলকুনিতে আসে, উঁকি দিয়ে তাদের দিকে তাকিয়ে থাকা বা ডিস্টার্ব করা গর্হিত অপরাধ। তা ছাড়া ঘর-বাড়িতে হঠাৎ কেউ ঢুকে গেলে বা কারো দরজা-জানালা দিয়ে দৃষ্টি দিলে মাহরাম নয়, এমন কোনো পুরুষ বা নারীর ওপর দৃষ্টি পড়তে পারে। এতে দৃষ্টিদানকারী কবিরা গুনাহে লিপ্ত হয়ে যাবে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ইসলাম অন্যের ঘরে প্রবেশের জন্য অনুমতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। বিনা অনুমতিতে অন্যের ঘরে প্রবেশ করা নাজায়েজ। এটি সাধারণ ভদ্রতা ও শিষ্টাচার পরিপন্থী। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনরা, তোমরা নিজের গৃহ ছাড়া অন্য কারো গৃহে প্রবেশ কোরো না, যতক্ষণ না তোমরা অনুমতি নেবে এবং গৃহবাসীদের সালাম দেবে। এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো। আর যদি তোমরা সেখানে কাউকে না পাও তাহলে তোমাদের অনুমতি না দেয়া পর্যন্ত তোমরা সেখানে প্রবেশ কোরো না। আর যদি তোমাদের বলা হয়, ফিরে যাও, তাহলে ফিরে যাবে। এটাই তোমাদের জন্য অধিক পবিত্রতা। তোমরা যা করো আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবগত।’ (সুরা : নুর, আয়াত : ২৭-২৮) অন্যের গোপনীয়তা ও ব্যক্তিগত জীবনাচারের স্বাধীনতা ইসলামের দৃষ্টিতে এতই গুরুত্বপূর্ণ যে মাহরাম ব্যক্তিদের ঘরেও অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করা নিষিদ্ধ। মাহরাম আত্মীয়দের (যাদের পারস্পরিক বিবাহ হারাম) পরস্পরের মধ্যে পর্দার বিধান না থাকলেও একে অন্যের ‘সতর’ দেখা নাজায়েজ। তাই প্রাপ্তবয়স্ক মাহরামদেরও একে অন্যের ঘরে গেলে অনুমতি নিতে হবে। মাতা-পিতা, প্রাপ্তবয়স্ক ভাই-বোন, ছেলে-মেয়ে সব মাহরামের ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

অন্যের দরজা-জানালায় উঁকি দেয়া পাপ

আপলোড টাইম : ০৯:৫০:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ মার্চ ২০২১

ধর্ম প্রতিবেদন:
ইসলাম মানুষের সম্মান, ব্যক্তিত্ব ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষায় বিভিন্ন বিধান দিয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা জীব। এই সম্মান রক্ষায় ইসলাম কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষায় ইসলাম গীবত নিষিদ্ধ করেছে এবং অন্যের ঘরে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। বিনা অনুমতিতে অন্যের ঘরে প্রবেশ করলে বিব্রতকর ও বিরক্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, যা ওই ব্যক্তির জীবন সংকুচিত কিংবা হুমকির সম্মুখীন করতে পারে। ঘরে কখনো একান্ত ব্যক্তিগত কাজ করা হয়, যা অন্য কারো দৃষ্টিগোচর হওয়া ঘরের বাসিন্দার কাছে বিব্রতকর হতে পারে। আবার ঘরোয়া জীবনে পোশাক পরিধানে প্রত্যেকের আলাদা রুচি ও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ কাজ করে, অনেকের দেহে শয্যাযাপনের পোশাক থাকে বা পরিহিত পোশাকের অংশবিশেষ খোলা থাকতে পারে, এসব পরিস্থিতিতে ঘর-দরজা ও জানালা দিয়ে উঁকি দিলে কিংবা অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করলে ঘরের অধিবাসী খুবই বিব্রতকর ও লজ্জিতকর অবস্থায় পড়তে পারে। কাউকে এমন পরিস্থিতিতে ফেলার অধিকার ইসলাম দেয়নি। আধুনিক জীবনে মানুষের গৃহের অভ্যন্তর খুবই সংকুচিত। মানুষ নানা প্রয়োজনে বারান্দায় বা বেলকুনিতে আসে, উঁকি দিয়ে তাদের দিকে তাকিয়ে থাকা বা ডিস্টার্ব করা গর্হিত অপরাধ। তা ছাড়া ঘর-বাড়িতে হঠাৎ কেউ ঢুকে গেলে বা কারো দরজা-জানালা দিয়ে দৃষ্টি দিলে মাহরাম নয়, এমন কোনো পুরুষ বা নারীর ওপর দৃষ্টি পড়তে পারে। এতে দৃষ্টিদানকারী কবিরা গুনাহে লিপ্ত হয়ে যাবে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ইসলাম অন্যের ঘরে প্রবেশের জন্য অনুমতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। বিনা অনুমতিতে অন্যের ঘরে প্রবেশ করা নাজায়েজ। এটি সাধারণ ভদ্রতা ও শিষ্টাচার পরিপন্থী। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনরা, তোমরা নিজের গৃহ ছাড়া অন্য কারো গৃহে প্রবেশ কোরো না, যতক্ষণ না তোমরা অনুমতি নেবে এবং গৃহবাসীদের সালাম দেবে। এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো। আর যদি তোমরা সেখানে কাউকে না পাও তাহলে তোমাদের অনুমতি না দেয়া পর্যন্ত তোমরা সেখানে প্রবেশ কোরো না। আর যদি তোমাদের বলা হয়, ফিরে যাও, তাহলে ফিরে যাবে। এটাই তোমাদের জন্য অধিক পবিত্রতা। তোমরা যা করো আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবগত।’ (সুরা : নুর, আয়াত : ২৭-২৮) অন্যের গোপনীয়তা ও ব্যক্তিগত জীবনাচারের স্বাধীনতা ইসলামের দৃষ্টিতে এতই গুরুত্বপূর্ণ যে মাহরাম ব্যক্তিদের ঘরেও অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করা নিষিদ্ধ। মাহরাম আত্মীয়দের (যাদের পারস্পরিক বিবাহ হারাম) পরস্পরের মধ্যে পর্দার বিধান না থাকলেও একে অন্যের ‘সতর’ দেখা নাজায়েজ। তাই প্রাপ্তবয়স্ক মাহরামদেরও একে অন্যের ঘরে গেলে অনুমতি নিতে হবে। মাতা-পিতা, প্রাপ্তবয়স্ক ভাই-বোন, ছেলে-মেয়ে সব মাহরামের ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য।