সমীকরণ প্রতিবেদন: ঢাকা থেকে দর্শনাগামী রয়েল এক্সপ্রেস ও পূর্বাশা পরিবহনের দুটি বাস থেকে ৫ কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৬৩৭ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করেছেন কাস্টমস গোয়েন্দারা। এসময় ভারতীয় তিন নাগরিকসহ ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। গতকাল শনিবার কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, গত শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টায় ঢাকার মাজার রোড (গাবতলী) থেকে বাবুবাজার ব্রিজ হয়ে দর্শনাগামী পূর্বাশা পরিবহন ও রয়েল পরিবহনের দুটি এসি বাসে যাত্রীদের মাধ্যমে স্বর্ণ চোরাচালান হতে পারে। সেই সংবাদের বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর তাদের নির্দেশনা মোতাবেক উপ-পরিচালক সানজিদা খানমের নেতৃত্বে বাস দুটি দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের চুলকুটিয়ায় থামিয়ে তল্লাশীর লক্ষ্যে রাত ১১টার দিকে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের সদস্যরা স্থানীয় ঝিলমিল হাসপাতালের সামনে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় সতর্কমূলক অবস্থান নেয়। পরে গতকাল শনিবার (২৬ নভেম্বর) আনুমানিক ভোররাত ৩টায় পূর্বাশা পরিবহন ও রয়েল পরিবহনের বাস দুটি (ঢাকা মেট্রো-ব ১৫৩৫৩৭ ও ঢাকা মেট্রো-ব ১৫৩৬৮৬) গোয়েন্দা টিমের নজরে আসে। তখন পুলিশের সহযোগিতায় বাস দুটি থামিয়ে গোয়েন্দা দলটি দুই ভাগ হয়ে ভেতরে উঠে বিভিন্ন স্থান ও যাত্রীদের তল্লাশী করে। প্রাথমিকভাবে সন্দেহভাজন যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা কাছে স্বর্ণবার থাকার কথা অস্বীকার করেন।
পরবর্তীতে সন্দেহভাজনদের শরীরে স্বর্ণ লুকানো আছে কি না তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য পার্শ্ববর্তী ঝিলমিল হাসপাতালে নিয়ে এক্স-রে করা হয়। পরীক্ষায় মোট ১২ যাত্রীর মধ্যে ৫ জনের রেক্টাম এবং ৭ জনের লাগেজের হ্যান্ডলবার, মানি ব্যাগ, কাঁধের ব্যাগের বিভিন্ন অংশে বিশেষভাবে লুকায়িত অবস্থায় মোট ৭ হাজার ৪৩২ গ্রাম বা ৬৩৭.১৭ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় পাঁচ কোটি টাকা।
এসময় তাদের কাছে এসব স্বর্ণ বার আমদানি বা কেনার স্বপক্ষে বৈধ কোনো দলিলাদি পাওয়া যায়নি। পাসপোর্ট অনুসারে আটক যাত্রীরা হলেন- রাহাত খান (৩৩), মোহসিন আল মাহমুদ (২৯), কাজী মামুন (৩৪) ও সৈয়দ আমীর হোসেন (৩৪), শামীম (২৩), মামুন (৩৭), বশির আহমেদ কামাল (৩৭), মামুন সরকার (৩৭), আতিকুর রহমান মীনা (৪২) এবং ভারতীয় ৩ নাগরিক নবী হুসাইন (৪৬), শাহাজাদা (৪৭) ও মোহাম্মদ ইমরান (৩৭)। পরে উদ্ধার করা স্বর্ণসহ আটক ব্যক্তিদের পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সহযোগিতায় কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর, সদর দপ্তর ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে এবং প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণে প্রতীয়মান হয় যে, আটককৃত স্বর্ণবারগুলি চোরালানের জন্য ঢাকা থেকে ভারতে পাচার করার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। আসামিরা এ কাজে সরাসরি জড়িত এবং স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের সদস্য। সূত্র আরও জানায়, স্বর্ণসহ আটক ব্যক্তিদের নামে কাস্টমস আইন অনুযায়ী বিভাগীয় এবং ফৌজদারি মামলা দায়েরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে।
