
সমীকরণ ডেস্ক: মানসম্মত ওষুধ উৎপাদনে ব্যর্থ ২০টি ওষুধ কোম্পানির সব ওষুধ এবং ১৪টি কোম্পানির এন্টিবায়োটিক বাজারে সরবরাহ ও বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত এক আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টে বেঞ্চ গতকাল এ আদেশ দিয়েছেন। স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ওষুধ প্রশাসনের পরিচালকসহ বিবাদীদের এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ’র দাখিলকৃত আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শশাঙ্ক শেখর সরকার। এর আগে একই মানবাধিকার সংগঠনের দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি একেএম সাহিদুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ৭ই জুন ২০ কোম্পানির ওষুধ উৎপাদন এবং ১৪ কোম্পানির এন্টিবায়োটিক উৎপাদন পরবর্তী সাতদিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিয়ে বিবাদীদের বিরুদ্ধে রুল জারি করেন। হাইকোর্টের এ আদেশের পর ৪টি ওষুধ কোম্পানি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করলে আপিল বিভাগ সাড়া না দেয়ায় হাইকোর্টের আদেশই বহাল থাকে। গত ২৮শে জুন একটি জাতীয় দৈনিকে ‘মানহীন ৩৪ কোম্পানির ওষুধ এখনও বাজারে’- শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে ৩৪ কোম্পানির ওষুধ সরবরাহ, বিক্রি বন্ধ এবং তা বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশনা চেয়ে গত ৩১শে জুলাই হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে একটি সম্পূরক আবেদন করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ। আবেদনকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পরও কিছু ওষুধ এখনও বাজারে বিক্রি হচ্ছে বলে পত্রিকায় এসেছে। এ বিষয়টি আবেদনে উল্লেখ করার পর আজ (গতকাল) আদালত ২০টি কোম্পানির সকল ওষুধ এবং ১৪টি কোম্পানির এন্টিবায়োটিক ওষুধ সরবরাহ ও বিক্রি বন্ধের এ আদেশ দিয়েছেন। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বা অন্য উপায়ে সংশ্লিষ্টরা আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করতে পারে। মামলার বিবরণে জানা যায়, ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ২০১৪ সালের ২০শে সেপ্টেম্বর পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ তদন্ত কমিটি গঠন করে। এই কমিটি দেশের ৮৪টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সরজমিন পরিদর্শন শেষে গত ১লা ফেব্রুয়ারি একটি প্রতিবেদন সংসদীয় কমিটির কাছে জমা দেন। প্রতিবেদনে মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদনে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হওয়ায় ২০টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া ১৪টি কোম্পানির অ্যান্টিবায়োটিক (নন-পেনিসিলিন, পেনিসিলিন ও সেফালোস্পোরিন গ্রুপ) ওষুধ উৎপাদনের অনুমতি বাতিল চাওয়া হয়।