জীবননগর অফিস: সম্প্রতি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সপ্তাহে দুইদিন ছুটি ঘোষণা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য ছুটি ঘোষণা করলেও বিদ্যুৎ কি সাশ্রয় হচ্ছে?
সরেজমিনে দেখা গেছে, জীবননগর উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৭১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের বরাদ্দকৃত স্লিপের অর্থ দিয়ে প্রতিটি বিদ্যালয়ে স্থাপন করা হয়েছে বৈদ্যুতিক এলইডি ডিজিটাল সাইন। যার মূল্য ধরা হয়েছে ১১ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। প্রতিটি বিদ্যালয়ে শুক্রবার কিংবা শনিবার রাত-দিন ২৪ ঘণ্টায় চলছে বৈদ্যুতিক এসব এলইডি ডিজিটাল সাইন। বিনা প্রয়োজনে চলছে এ সমস্ত লাইটগুলো, যেন দেখার কেউ নেই। এতে করে বিদ্যুৎ সাশ্রয় তো দূরের কথা বরং বিদ্যুৎ অপচয় হচ্ছে।
উপজেলার হাসাদহ গ্রামের আতিয়ার রহমান বলেন, দেশে বিদ্যুতের সমস্যা ছিল, এ জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একদিনের পরিবর্তে দুইদিন ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। কিন্তু বিদ্যালয়ে ছুটির দিনও ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল লাইট জলে থাকে, আবার স্কুল চলাকালীন সময়ও এ লাইট চলতে থাকে। এখানে কি বিদ্যুৎ অপচয় হয় না। রায়পুর গ্রামের শামসুল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, করোনাকালীন সময় থেকে ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া ছিকেই উঠেছে। আবার বিদ্যুৎ ঘাটতি কমানোর জন্য সপ্তাহে দুইদিন ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। এই ছুটি পেয়ে শিক্ষকরা অনেক লাভবান হলেও শিক্ষার্থীরা ছুটির দিনে মোবাইল ফোনে গেম খেলা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
সীমান্ত ইউনিয়নের উমাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইন্তাজ আলীর কাছে বৈদ্যুতিক এলইডি ডিজিটাল সাইনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই লাইটের বিষয়ে আমার তেমন কিছু জানা নেই। কীভাবে বন্ধ করতে হবে, এটা আমি জানি না। তাছাড়া লাইট বন্ধ করার নির্দেশ আমাদেরকে দেওয়া হয়নি। আদৌ এই লাইট বন্ধ করা যাবে কি না, সেটাও আমি জানি না। সকল বিদ্যালয়ে ২৪ ঘণ্টা চলে, এ জন্য আমিও এটা চালু করে রাখি। আমাদের বন্ধ করার নির্দেশ দিলে বন্ধ করে রাখব।’
এ বিষয়ে জীবননগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. জালাল উদ্দিন বলেন, ‘জীবননগর উপজেলার ৭১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বৈদ্যুতিক এলইডি ডিজিটাল সাইন লাগানো হয়েছে। অনেক বিদ্যালয়ে রাতে পাহারাদার না থাকায় রাতে এ লাইটগুলো কাজে লাগে। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের বিষয়ে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নির্দেশ দেওয়া আছে সকাল হলেই এ লাইটগুলো বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তবে যদি কেউ লাইট বন্ধ না করে সেক্ষেত্রে ওই প্রধান শিক্ষক দায়ী। তবে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব।’