ইপেপার । আজ সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

হাদিয়া: সামাজিক সৌহার্দ্যরে নিদর্শন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৩৪:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ জুলাই ২০১৮
  • / ৪২৫ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক: ভালোবাসা ও আন্তরিকতা প্রকাশের উদ্দেশ্যে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও অন্যদের যে উপহার ও উপঢৌকন আদান-প্রদান করা হয় তাকে হাদিয়া বলা হয়। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘একে অন্যকে হাদিয়া দেবে, হাদিয়া অন্তরের কলুষ দূর করে। এক পড়শি অপর পড়শিকে হাদিয়া দিতে যেন অবহেলা না করে এবং কেউ যেন সামান্য মনে না করে। যদি তা এক টুকরো বকরির খুরও হয়।’ রাসুল (সা.) তার সাহাবিদের হাদিয়া দিতেন এবং সাহাবিরাও রাসুলকে (সা.) হাদিয়া দিতেন। কেউ হাদিয়া দিলে এ প্রতিদান দেয়ার চেষ্টা করা উচিত। এতে পারস্পরিক সম্পর্ক মধুর হয়। হজরত জাবির (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, যাকে দান করা হয়েছে তার সামর্থ্য থাকলে সে যেন এর প্রতিদান দেয়; আর যার সামর্থ্য নেই সে যেন প্রশংসা করে। কেননা যে প্রশংসা করল সে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল, আর যে তা গোপন করল সে তার প্রতি অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। হাদিয়ার প্রতিদানে সমপরিমাণের জিনিস হতে হবে এমন কোনো কথা নেই। বরং নিজ ক্ষমতা অনুযায়ী প্রতিদান দিতে চেষ্টা করা উচিত। স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের মধ্যে হাদিয়া আদান-প্রদান করবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) তার সহধর্মিণীদের হাদিয়া দিতেন। প্রকৃতপক্ষে হাদিয়া দাম্পত্য জীবনে আন্তরিকতা সৃষ্টির মূল্যবান উপাদান।
এতে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের সম্পর্ক গভীর থেকে গভীরতর হয় এবং মনের গ্লানি দূর হয়ে যায়। কেউ হাদিয়া দিলে তা প্রত্যাখ্যান করা ঠিক নয়। তাতে হাদিয়াদাতার মনে কষ্ট হয় এবং পারস্পরিক সম্পর্ক তিক্ত হয়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘যাকে সুগন্ধি দান করা হয় সে যেন তা ফিরিয়ে না দেয়। কেননা এটি হালকা জিনিস অথচ সুগন্ধযুক্ত। হাদিয়া সামান্য হলেও তা ফিরিয়ে না দিয়ে সন্তুষ্টচিত্তে গ্রহণ করা উচিত। অনুরূপভাবে হাদিয়া দেয়ার পর তা ফিরিয়ে নেয়াও শোভনীয় নয়। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে দান করে তা প্রত্যাহার করে নেয় এর দৃষ্টান্ত হলো এমন কুকুরের মতো যে বমি করে পুনরায় তা গলাধঃকরণ করে নেয়।’ তবে মনে রাখতে হবে হাদিয়া ও ঘুষ এক জিনিস নয়। হাদিয়ায় পারস্পরিক মহব্বত ছাড়া পার্থিব কোনো স্বার্থ হাসিল বা কোনো রূপ সাহায্য পাওয়ার আশা থাকে না। অপরপক্ষে ঘুষ দেয়ার উদ্দেশ্য হলো কোনো স্বার্থ হাসিল করা। এ জন্য হাদিয়া সুন্নত আর ঘুষ হারাম।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

হাদিয়া: সামাজিক সৌহার্দ্যরে নিদর্শন

আপলোড টাইম : ০৮:৩৪:২৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ জুলাই ২০১৮

ধর্ম ডেস্ক: ভালোবাসা ও আন্তরিকতা প্রকাশের উদ্দেশ্যে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও অন্যদের যে উপহার ও উপঢৌকন আদান-প্রদান করা হয় তাকে হাদিয়া বলা হয়। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘একে অন্যকে হাদিয়া দেবে, হাদিয়া অন্তরের কলুষ দূর করে। এক পড়শি অপর পড়শিকে হাদিয়া দিতে যেন অবহেলা না করে এবং কেউ যেন সামান্য মনে না করে। যদি তা এক টুকরো বকরির খুরও হয়।’ রাসুল (সা.) তার সাহাবিদের হাদিয়া দিতেন এবং সাহাবিরাও রাসুলকে (সা.) হাদিয়া দিতেন। কেউ হাদিয়া দিলে এ প্রতিদান দেয়ার চেষ্টা করা উচিত। এতে পারস্পরিক সম্পর্ক মধুর হয়। হজরত জাবির (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, যাকে দান করা হয়েছে তার সামর্থ্য থাকলে সে যেন এর প্রতিদান দেয়; আর যার সামর্থ্য নেই সে যেন প্রশংসা করে। কেননা যে প্রশংসা করল সে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল, আর যে তা গোপন করল সে তার প্রতি অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। হাদিয়ার প্রতিদানে সমপরিমাণের জিনিস হতে হবে এমন কোনো কথা নেই। বরং নিজ ক্ষমতা অনুযায়ী প্রতিদান দিতে চেষ্টা করা উচিত। স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের মধ্যে হাদিয়া আদান-প্রদান করবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) তার সহধর্মিণীদের হাদিয়া দিতেন। প্রকৃতপক্ষে হাদিয়া দাম্পত্য জীবনে আন্তরিকতা সৃষ্টির মূল্যবান উপাদান।
এতে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের সম্পর্ক গভীর থেকে গভীরতর হয় এবং মনের গ্লানি দূর হয়ে যায়। কেউ হাদিয়া দিলে তা প্রত্যাখ্যান করা ঠিক নয়। তাতে হাদিয়াদাতার মনে কষ্ট হয় এবং পারস্পরিক সম্পর্ক তিক্ত হয়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘যাকে সুগন্ধি দান করা হয় সে যেন তা ফিরিয়ে না দেয়। কেননা এটি হালকা জিনিস অথচ সুগন্ধযুক্ত। হাদিয়া সামান্য হলেও তা ফিরিয়ে না দিয়ে সন্তুষ্টচিত্তে গ্রহণ করা উচিত। অনুরূপভাবে হাদিয়া দেয়ার পর তা ফিরিয়ে নেয়াও শোভনীয় নয়। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে দান করে তা প্রত্যাহার করে নেয় এর দৃষ্টান্ত হলো এমন কুকুরের মতো যে বমি করে পুনরায় তা গলাধঃকরণ করে নেয়।’ তবে মনে রাখতে হবে হাদিয়া ও ঘুষ এক জিনিস নয়। হাদিয়ায় পারস্পরিক মহব্বত ছাড়া পার্থিব কোনো স্বার্থ হাসিল বা কোনো রূপ সাহায্য পাওয়ার আশা থাকে না। অপরপক্ষে ঘুষ দেয়ার উদ্দেশ্য হলো কোনো স্বার্থ হাসিল করা। এ জন্য হাদিয়া সুন্নত আর ঘুষ হারাম।