সমীকরণ প্রতিবেদন:
হেফাজতে নিয়ে নিষ্ঠুর নির্যাতনের অভিযোগে পিবিআই প্রধানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে বাবুল আক্তারের মামলার শুনানির আগেই স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার চার্জশিট আদালতে জমা দিয়েছে পিবিআই। সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারসহ সাতজনকে অভিযুক্ত করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে আদালতে এ অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। অভিযোগপত্রে ৯৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে বলেও আদালত সূত্র জানিয়েছে।
অভিযোগপত্রে মিতু হত্যা মামলার বাদি বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে বাকি ছয় অভিযুক্ত আসামি হলেন মো: কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুসা, এহতেশামুল হক ওরফে ভোলা, মো: মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, মো: আনোয়ার হোসেন, মো: খাইরুল ইসলাম ওরফে কালু ও শাহজাহান মিয়া। এদের মধ্যে কারাগারে আছেন বাবুল আক্তার, ওয়াসিম, শাহজাহান ও আনোয়ার। জামিনে আছেন এহতেশামুল হক ভোলা। আর মুসা ও কালু শুরু থেকেই পলাতক।
এ ছাড়া সাইদুল ইসলাম শিকদার ওরফে সাক্কু, নুরুন্নবী, মো: রাশেদ ও আবু নাছেরকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে রাশেদ ও নুরুন্নবী ঘটনার পরের সপ্তাহে পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১৩ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বাবুল কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেখানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নারী কর্মকর্তার সাথে বাবুলের সম্পর্ক হয়। এ সম্পর্কের জেরে বাবুলের পরিকল্পনায় স্ত্রী মাহমুদাকে খুন করা হয়। এ জন্য বাবুল তার সোর্সের মাধ্যমে তিন লাখ টাকায় খুনি ভাড়া করেন। পিবিআইয়ের তদন্তে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
মাহমুদা হত্যার পরদিন ২০১৬ সালের ৬ জুন বাবুল বাদি হয়ে নগরের পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে পিবিআই গত বছরের ১২ মে এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। একই দিন বাবুলের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ বাদি হয়ে পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় বাবুলসহ আটজনকে আসামি করা হয়। মোশাররফের মামলায় পিবিআই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিলে আদালত তা গ্রহণ করেন। অন্য দিকে বাবুলের করা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালত গ্রহণ করেননি। এ মামলার কার্যক্রম চলছে চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেসার আদালতে। আগামী ১০ অক্টোবর এ মামলার দিন ধার্য আছে। এ দিকে হেফাজতে নির্যাতন ও কারাগারের কক্ষে ফেনী মডেল থানার ওসির তল্লাশির অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার ও সোমবার পৃথক দু’টি অভিযোগ করেছিলেন বাবুল আক্তার। দু’টি আবেদনের বিষয়ে ১৯ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন ধার্য আছে। প্রসঙ্গত ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
