
সমীকরণ প্রতিবেদন:
দেশে ভয়ংকর পরিস্থিতি চলছে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগী। তিনি বলেছেন, ‘এ অবস্থায় বসে থাকলে চলবে না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সামনে পথ একটাই খোলা, আন্দোলন আন্দোলন এবং আন্দোলন।’ গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঐতিহাসিক পতাকা উত্তোলন দিবস উপলক্ষে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন ফখরুল।
চলমান যুগপৎ আন্দোলনে সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই আন্দোলন বিএনপি বা গণতন্ত্র মঞ্চের আন্দোলন নয়। এটা গোটা জাতির সংগ্রাম। স্বাধীনতা, ভোটাধিকার এবং গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হলে সব গণতন্ত্রগামী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সরকারের কঠোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজ ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতায় চেপে বসেছে। দেশের সব আশা আকাঙ্ক্ষা স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। তারা আবারও বাকশাল কায়েম করতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে চায়। অর্থনীতিকে ধ্বংস করে লুটের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আজ পত্রিকায় দেখলাম চট্টগ্রামে ওএমএসের চালের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে এক বৃদ্ধ অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছেন। মানুষ যখন খেতে পারছে না তখন প্রধানমন্ত্রী হাওরে গিয়ে ২৫ পদ দিয়ে রান্না করে উৎসব করছেন। এগুলো জনগণের সঙ্গে পরিহাস।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ সরকার আজ দেশের ঐতিহ্য-ইতিহাস বিনষ্ট করে দিচ্ছে। মানুষ ভোট দিতে পারছে না। ভিন্নমত পোষণ করতে পারছে না। ভিন্ন মত প্রকাশ করলেই কারাগারে যেতে হচ্ছে। গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে লিখতে পারছে না। সৎভাবে কেউ ব্যবসা করতে পারছেন না। দলীয় লোক না হলে সেই ব্যবসায়ীর প্রতি চলে নিপীড়ন। তিনি বলেন, ভারতের এক বিতর্কিত ব্যবসায়ীর সঙ্গে সরকার বিদুৎ নিয়ে একটি চুক্তি করেছে। যার ফলে দুইশ টাকার কয়লা চারশ টাকা দিয়ে কিনতে হবে। আজকে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির কারণে সবকিছুর দাম আরও বেড়ে যাবে। তারা আইন করেছে, গণশুনানি না করেই আবারও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করতে পারবে। এ সরকার জনগণের টাকা লুটপাট করতেই বারবার বিদ্যুৎ, গ্যাস, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করছে।
২ মার্চকে জাতীয় জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ৫২ বছরেও এই দিনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হয়নি। স্বাধীনতাযুদ্ধ মানে আজ আওয়ামী লীগ এবং এক ব্যক্তির নাম প্রচার করা হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছে। কই, তাদের নামতো স্মরণ করা হয় না! আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেএসডির সিনিয়র সহ-সভাপতি তানিয়া রব। এতে বক্তব্য দেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।