শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরো পাঁচ মামলা
সাকিব ফেরদৌস সুমনও আসামি- আপলোড টাইম : ০৩:৪৮:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৪
- / ৪৭ বার পড়া হয়েছে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঢাকার মোহাম্মদপুর, আদাবর ও বাড্ডা থানায় তিনটি এবং নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানায় দুটি মামলা হয়েছে। মামলাগুলো বৃহস্পতিবার রাতে দায়ের করা হয়। মোহাম্মদপুর থানায় ট্রাকচালক সুজন হত্যা, আদাবর থানার মামলায় পোশাক শ্রমিক রুবেল হত্যা, বাড্ডা থানায় দলীয় কর্মী হূদয় আহম্মেদ ও সোনারগাঁও থানায় শফিক মিয়া ও আশিক মিয়া গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় শেখ হাসিনাকে ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে আদাবর থানায় দায়ের করা মামলায় বিশ্বখ্যাত ক্রিকেট তারকা ও সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসান, চলচ্চিত্র নায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য ফেরদৌস এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল তারকা ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, সালমান এফ রহমানের ছেলে সায়ান এফ রহমানের নাম আসামির তালিকায় রয়েছে। মোহাম্মদপুর থানার মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৭৯ জন ও অজ্ঞাতনামা ৪৫০—৫০০ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন নিহত সুজনের ভাই রফিকুল ইসলাম।
মামলার অভিযোগপত্রে রফিকুল ইসলাম উল্লেখ করেন, আসামিদের নির্দেশনা, পরিকল্পনায় এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণে গত ২০ জুলাই বছিলায় শান্তিপূর্ণ মিছিলে গুলি করা হয়। এতে তার ভাই ট্রাকচালক সুজন আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিত্সকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আদাবর থানায় পোশাকশ্রমিক রুবেলকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ১৫৬ জনের বিরুদ্ধে। অজ্ঞাত আরো ৪০০—৫০০ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম।
মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ৫ আগস্ট রুবেল আদাবরের রিংরোডে প্রতিবাদী মিছিলে অংশ নেন। এ সময় আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্দেশ, প্ররোচনা, সহযোগিতা ও প্রত্যক্ষ মদদে মিছিলে গুলি ছোড়া হয়। এতে বুকে ও পেটে গুলিবিদ্ধ হন রুবেল। হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় ৭ আগস্ট মারা যান। বাড্ডা থানায় নিহত হূদয় আহম্মেদের সহকর্মী শাহাদত হোসেন বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় শেখ হাসিনা, শেখ রেহেনা, সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৬২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪০০—৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে, গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বাড্ডার ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সামনে মিছিলে আসামিদের নির্দেশনায় গুলি চালালে, হূদয় আহমেদ নিহত হন।
সোনারগাঁও থানায় দুই মামলা :
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের কাঁচপুরে শফিক মিয়া ও আশিক মিয়া গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে নিহত শফিক মিয়ার চাচাতো ভাই আবু হানিফ ও আশিক মিয়ার মা কুলসুম বেগম বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ নারায়ণগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু, গোলাম দস্তগীর গাজী, আব্দুল্লাহ আল কায়সার, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান কালাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান মাসুমসহ ৬৯৮ জনকে আসামি করা হয়।
নিহত মিয়ার চাচাতো ভাই আবু হানিফ মামলায় উল্লেখ করেন, তার চাচাতো ভাই শফিক মিয়া গত ৪ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সিনহা গার্মেন্টস এলাকায় রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ছাত্র—জনতার ওপর অতর্কিত গুলি করেন। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। এ ঘটনায় ১৫৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১২০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।
অন্যদিকে নিহত আশিক মিয়ার মা কুলসুম বেগম মামলায় উল্লেখ করেন, তার ছেলে বিসিক শিল্পনগরীর মক্কা ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করত। গত ৪ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা একজোট হয়ে শটগান, পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গুলি চালালে আশিক মিয়াসহ ১৫ জন আহত হয়। পরদিন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় ১২২ জনের নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞাত ৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।